পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরাতে ভুক্তভোগীদের সমস্যার সমাধান চাই: ডিএসই চেয়ারম্যান

বন্ধ হয়ে যাওয়া ব্রোকারেজ হাউজগুলোর গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে না পারলে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানো সম্ভব হবে না বলে মনে করেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Jan 2022, 03:57 PM
Updated : 13 Jan 2022, 03:57 PM

বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেক্সিমকোর গ্রিন সুকুক বন্ডের লেনদেন শুরু উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, “আমার খুব কষ্ট লাগে- আমি যখন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) অবৈতনিক চেয়ারম্যান হিসেবে অফিসে আসি, কিছু মানুষের টেলিফোন পাই, আমাদের এই পুঁজিবাজারের মধ্যেও যে কয়েকটি ঘটনা ঘটছে, কিছু ভুক্তভোগী অনেক কষ্টে আছেন।

“আমাদের প্রশ্ন করেন, এখন স্যার আমার অবস্থা কী হবে? আমরা সেটার জবাব দিতে পারি না। আমাদের কিছু কিছু ঘটনা ঘটে যায়, এইগুলোর বিচার যদি আমাদের দেশে না হয়, সাধারণ মানুষের আস্থা আমরা অর্জন করতে পারব না।”

গ্রাহকের টাকা ফিরিয়ে দিতে না পারলে বিএসইসির অনেক ভালো উদ্যোগেও পুঁজিবাজারে আস্থা ফিরবে না বলে মন্তব্য করেন ইউনুসুর রহমান।

তিনি বলেন, “বর্তমান কমিশন অনেক ভাল কাজ করেছেন, আমরা এজন্য বিএসইসিকে ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা যদি ভুক্তভোগীদের সমস্যার সমাধান না করতে পারি... কিছু ব্রোকারেজ হাউজ বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এগুলো না করতে পারলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা পাব না।”

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এবং বাংলাদেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সালমান এফ রহমান বলেন, “প্রধানমন্ত্রী দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাঁচাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণের সুদের হার বেঁধে দিয়েছিলেন। ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশে বেঁধে দেওয়া হয় এবং আমানতের সুদের হার ৬ শতাংশে বেঁধে দেওয়া হয়, এই সিদ্ধান্তটা নিলেন। আমরা অনেকেই ঋণের সুদের হার কমাতে মানা করেছিলাম; আমি নিজেও ঋণের সুদের হার কমাতে মানা করেছিলাম।

“প্রধানমন্ত্রীকে আমি অনেক বোঝাবার চেষ্টা করলাম যদি এটা বাস্তবায়ন করা হয় তাহলে কিন্তু এটা… নিয়ে আসবে দেশের ব্যাংকিং খাতে। কিন্তু উনি বল্লেন যে ‘কিছুই হবে না। আমি যেটা বলতেছি তোমরা দেখ, তোমরা পরে বলবা যে এটা খুব ভালো সিদ্ধান্ত’।”

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, “যখন এটা বাস্তবায়ন করা হল, প্রথম প্রথম অনেকে এটা নিয়ে সমালোচনা করেছে। বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতে যারা ছিলেন, তারা বলছিলেন এটা কেমনে হবে? এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও কিন্তু একটি চিন্তা ছিল যে এটা বাস্তবায়ন করলে অর্থনীতির উপরে কী ধরনের প্রভাব পড়বে।

“আসলে আজকে যদি আপনি দেখেন যে ৯ শতাংশ বেঁধে দেওয়া হলেও ব্যাংকিং খাত থেকে কিন্তু ৯ শতাংশের নিচে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। আমানতের সুদের হার কমে এসেছে।এখন কিন্তু কেউ আর এটা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে না, এখন সবাই এটা মেনে নিয়েছে।

বন্ড মার্কেটের সম্প্রসারণের জন্য সুদের হার যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, সে কথা তুলে ধরে সালমান এফ রহমান বলেন, “সুদের হার বেশি থাকলে বন্ড মার্কেট হত না।”

বন্ডের বাজার মূলধন বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, “পৃথিবীর যত উন্নত পুঁজিবাজার আছে, সেখানে ঋণপত্র বা বন্ডের বাজার মূলধন এবং ইকুইটি শেয়ারের বাজার মূলধন সমান সমান; কোথাও কোথাও বন্ডের বাজার মূলধন বেশি। বাংলাদেশে এখনো বন্ডের বাজার মূলধন অনেক কম, এটা আরো বাড়াতে হবে।”