বুধবার সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত ও ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পুঁজিবাজার নিয়ে বলেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এ বাজারে লাভ-লোকসান দুটোই আছে। কেউ যদি শুধু লাভের আশায় বিনিয়োগ করেন, তাহলে ঠিক হবে না।
“এখানে ঝুঁকি আছে এটা মেনেই বিনিয়োগ করতে হবে তাকে। সুতরাং আমি বলব, আপনারা দেখেশুনে বিনিয়োগ করুন। পুঁজিবাজার সারা বিশ্বে একই রকম। লাভের জন্য আপনি যখন আসবেন, তখন রিস্ক ফ্যাক্টরটাও আপনাকে বুঝতে হবে।“
অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দরপতনের ধারায় রয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। চলতি সপ্তাহে মতিঝিলে বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ করতেও দেখা গেছে।
পুঁজিবাজারকে বাংলাদেশের অর্থনীতির সঙ্গে মিলিয়ে হিসাব করার পরামর্শ দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “অর্থনীতি যত শক্তিশালী হবে, পুঁজিবাজারও তত শক্তিশালী হবে। অন্য কোনো ফ্যাক্টর দিয়ে বাজারকে দেখলে হবে না।
“আমি সব সময় একটা কথা বলে থাকি, সেটা হচ্ছে সবাই বুঝে শুনে বাজারে আসুন। কারণ এই বাজার দৈনিক ওঠানামা করছে। এটা অনেক বেশি সেনসেটিভ। যারা এই বাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত তারা তো বাজার সম্পর্কে জানেন। জেনেশুনেই তারা বাজারে আসছেন।”
পুঁজিবাজারের জন্য যে সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন, সরকার তা ‘দিয়ে যাচ্ছে’ মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এবারের বাজেটে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।”
রাষ্ট্রায়ত্ত্ব চার ব্যাংকের পুঁজিবাজারে আসার কথা থাকলেও কেন এল না- এমন প্রশ্নে মুস্তফা কামাল বলেন, “ব্যাংকগুলো স্বাধীন। তারা যখন মনে করবে পুঁজি বাজারে এলে তাদের লাভ হবে, তখনই তারা আসবে।”
গত কিছু দিনে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং ডলারের দর বেড়ে যাওয়ায় চাপ অনুভব করছেন কিনা- এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এখন ইনফ্লেশন (মূল্যস্ফীতি) আমাদের ধারণার মধ্যেই আছে। ওভারঅল ইনফ্লেশন বাড়েনি। আমরা প্রতিনিয়ত ইনফ্লেশন পর্যালোচনা করেই আপডেট নিই। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি। তবে জ্বালানির দাম যেভাবে বাড়ছে, খাদ্যশস্যের দামও সেভাবে বাড়ছে।”
আর ডলারের বিনিময় হার ৯০ টাকায় পৌঁছে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “ডলারের প্রাইস তো আমরা নির্ধারণ করিনি, এটা ফিক্সড না। এটা ডিমান্ড ও সাপ্লাইয়ের ওপর নির্ভর করে। ডিমান্ড যদি বেশি থাকে, আর সাপ্লাই যদি কম থাকে, তাহলে ডলারের দাম বাড়বে। এটা স্বাভাবিকভাবেই অ্যাডজাস্ট করে নেয়।”
ডলারের বাজার ঠিক রাখতে বাংলাদেশে ব্যাংক কখনও বাজারে ডলার ছাড়ে, আবার কখনও ডলার কিনে বাজারে ভারসাম্য আনে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফের পরামর্শে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রা বাজারে সেই নিয়ন্ত্রণ কমিয়ে দেওয়ার কারণে ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে কিনা- এই প্রশ্ন অর্থমন্ত্রীকে করেন একজন সাংবাদিক।
উত্তরে তিনি বলেন, “আইএমএফ কী নির্দেশনা দিয়েছে সেটা আমি জানি না। অতীত থেকে আমরা যেভাবে করে আসছি, সেভাবেই হয়ে আসছে। এখানে আইএমএফ কী বলেছে, আমি জানি না।
“আইএমএফ পরামর্শ দিতে পারে। কিন্তু তারা আমাদের ওপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে না। তারা আমাদের ডেভেলপমেন্ট পার্টনার হিসাবে পরামর্শ দিতে পারে। আমাদের অর্থনীতির সাথে তারা ওৎপ্রোতভাবে জড়িত। তারা আমাদের উন্নয়ন সহযোগী।”