উত্থানে শুরু বড়পতনে শেষ, সূচক ৭ হাজার পয়েন্টের কাছে

সূচক যতটা বেড়ে সপ্তাহের প্রথম দিনের শুরুটা হয়, শেষ হয়েছে এর চেয়েও বেশি পতনের মধ্য দিয়ে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Oct 2021, 12:34 PM
Updated : 24 Oct 2021, 12:34 PM

রোববার দিনের একেবারে প্রথমভাগে দেশের উভয় পুঁজিবাজারের বেশিরভাগ সূচক সবুজ দেখে আগের সপ্তাহের টানা পতনের ভীতি কাটছে বলে আশাবাদী হয়েছিলেন অনেকেই। তাদের সেই আশা মিলিয়ে গেছে ঘণ্টা দুয়েক পরেই।

ক্রমে সেই পুরনো আতংক ঘিরে ধরে বিনিয়োগকারীদের, যা থেকে শেয়ার বিক্রির ব্যাপক চাপে সূচক হয়ে পড়ে নিম্নমুখী।

এদিন প্রথম এক ঘন্টায় প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসই সূচক আগের দিন থেকে ৬২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এরপর থেকেই শেয়ার বিক্রির হিড়িক শুরু হলে দুই ঘন্টার মাথায় সূচক আগের দিনের থেকে নিচে নেমে যায়।

দিন শেষে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিন থেকে ৭০ দশমিক ৫২ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে ৭ হাজার ৫ দশমিক ৭১ পয়েন্টে নেমেছে। শেষের দিকে এক পর্যায়ে সূচক আগের দিনের চেয়ে ৮০ পয়েন্ট কমে গিয়েছিল।

দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার সিএসইতেও সূচক কমেছে। এ বাজারের প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১২২ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট কমে ২০ হাজার ৫৭০ দশমিক ৫৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

রোববার এমন পতনের বিষয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) এর মহাসচিব রিয়াদ মতিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “টানা দর কমার কারণে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা আতঙ্কিত। এ কারণে আজকেও (রোববার) বেশির ভাগ শেয়ারের দাম কমেছে।”

তবে পতন কাটিয়ে দ্রুত বাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে তার আশা।

এর আগে গত ১০ অক্টোবর থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৭ কার্যদিবস সূচক কমেছিল ঢাকার পুঁজিবাজারে। এসময়ে সূচক ৩৪৭ পয়েন্ট কমে ৭ হাজার ২০ দশমিক ৬১ পয়েন্টে নামে। এরপর গত বৃহস্পতিবার সূচক ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে পতনের ধারায় ছেদ পড়ে।

তবে রোববার আবার নিম্নমুখী হয়ে পড়ে সূচক। এ নিয়ে আট দিনে সূচক কমেছে ৩৬২ পয়েন্ট বা ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।

রোববার সূচকে বড় পতন হলেও ডিএসইতে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ১২ দশমিক ২১ শতাংশ বা ১৬০ কোটি ৮ লাখ বেড়ে ১ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা হয়েছে।

আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ১ হাজার ৩১০ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।  

এদিন ডিএসইতে ৭৮ শতাংশ কোম্পানির দাম কমেছে। এর বিপরীতে ১৫ শতাংশের দাম বেড়েছে এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

এ বাজারে লেনদেন হওয়া ৩৭৫টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের মধ্যে দর বেড়েছে ৫৭টির এবং কমেছে ২৯২টির। অপরিবর্তিত ছিল ২৬টির দর।

ঢাকার অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৩০ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৪৮৭ দশমিক ৭৮ পয়েন্টে।

ডিএস৩০ সূচক ১ দশমিক শূন্য পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ৬৯৮ দশমিক ৩১ পয়েন্টে।

লেনদেনের শীর্ষ ১০টি কোম্পানি

বেক্সিমকো লিঃ, ওরিয়ন ফার্মা, ডেল্টা লাইফ, এনআরবিসি ব্যাংক, জেনেক্স ইনফোসিস, স্কয়ার ফার্মা, আইএফআইসি, বেক্সিমকো ফার্মা, লাফার্জহোলসিম সিমেন্ট ও বিএটিবিসি।

দাম বাড়ার তালিকায় শীর্ষ ১০টি

বেক্সিমকো লিঃ, বিএসআরএম লিঃ, ওরিয়ন ফার্মা, স্কয়ার টেক্সটাইল, এনআরবিসি ব্যাংক, ইউনাইটেড পাওয়ার, আরএকে সিরামিকস, ইন্দোবাংলা ফার্মা, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স ও কেডিএস এক্সেসরিজ।

সবচেয়ে বেশি দর হারানো ১০টি কোম্পানি

এফএএস ফাইন্যান্স, বিবিএস, অ্যাক্টিভ ফাইন, আজিজ পাইপস, দেশবন্ধু পলিমার, অ্যাপোলো ইস্পাত, রিংসাইন, এএফসি অ্যাগ্রো, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট ও দেশ গার্মেন্ট।

এদিন সিএসইতে ২৮৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬২টির, কমেছে ২০৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির দর।

এ বাজারেও লেনদেন বেড়েছে। আগের দিনের তুলনায় শেয়ার কেনাবেচা ১৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ বা ৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা বেড়েছে।

এদিন মোট ৪৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিন ছিল ৪১ কোটি ৮১ লাখ টাকা।