পতন গড়াল ৭ দিনে, ডিএসই সূচক কমলো ৩৪৭ পয়েন্ট

আগের দিন সাড়ে তিন মাসের মধ্যে বড় পতনের পর মঙ্গলবার সকালে শুরুটা হয়েছিল ঊর্ধ্বমুখী ধারায়; সব শেয়ারের পাশাপাশি সবগুলো সূচক ছিল সবুজ। যদিও দিন শেষ হয়েছে এর চেয়েও বেশি হতাশায়।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2021, 12:46 PM
Updated : 19 Oct 2021, 12:46 PM

সকালের ভাগে সূচক যতটুকু বেড়েছিল, শেষের ভাগে এর চেয়েও বড় পতন হয় সব পর্যায়ের বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপে।

লেনদেনের মাঝামাঝি সময়ে দুপুর ১টার পর থেকে পাল্লা দিয়ে শেয়ার বিক্রির প্রবণতায় প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এক টানে কমে যায় ৮০ পয়েন্ট। অথচ দিনের প্রথমভাগে সূচক বেড়েছিল আগের দিনের চেয়ে ৭৯ পয়েন্ট পর্যন্ত।

দিন শেষে আগের দিনের চেয়ে দাম কমে লেনদেন হয়েছে ২৫৪ কোম্পানির শেয়ারের। এর মধ্যে এক পর্যায়ে বেশ কিছু শেয়ারের ক্রেতা কমে যায়; লেনদেন হয় সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন সীমায়।

লেনদেনের এমন প্রবণতায় সপ্তাহের তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও বড় পতন হয়েছে সূচকে, যা নিয়ে টানা সাত দিন কমলো ডিএসইএক্স।

দিন শেষে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিন থেকে ৭৬ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ কমে ৭ হাজার ২০ দশমিক ৬১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

মঙ্গলবারসহ সাত কার্যদিবসে সূচক কমেছে ৩৪৭ পয়েন্ট। গত ১০ অক্টোবর সূচকের অবস্থান ছিল ৭ হাজার ৩৬৮ পয়েন্টে। এই কয়দিনে কমেছে ৪ দশমিক ৭১ শতাংশ।

এদিন চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সিএসইতেও সূচকে বড় পতন হয়েছে। প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৮৬ দশমিক ৬১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২০ হাজার ৫২১ দশমিক শূন্য ৭ পয়েন্টে।

ডিএসইতে মঙ্গলবার সূচক কমলেও আগের দিনের তুলনায় ১৭ দশমিক ১৭ শতাংশ বা ২৮৯ কোটি ২ লাখ টাকা লেনদেন বেড়েছে।

ঢাকায় এদিন ১ হাজার ৬৮২ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়, যা আগের কর্মদিবসে ছিল ১ হাজার ৩৯৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

মঙ্গলবার ডিএসইতে ৬৮ শতাংশ কোম্পানির দাম কমেছে। এর বিপরীতে ২৩ শতাংশের দাম বেড়েছে এবং অপরিবর্তিত ছিল ৯ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

এদিন লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের মধ্যে দর বেড়েছে ৮৭টির এবং কমেছে ২৫৪টির। অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৫টির দর।

এগুলোর মধ্যে ২৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ৫ শতাংশের বেশি কমেছে। এর মধ্যে পাঁচটি কোম্পানি শেয়ারের দাম কমেছে ৭ শতাংশের বেশি, একটির ৯ শতাংশের বেশি এবং একটির কমেছে ১১ শতাংশের বেশি।

এদিন লভ্যাংশ সংক্রান্ত ঘোষণার কারণে বিডি ল্যাম্পসের শেয়ারের মূল্যে কোনো সার্কিট ব্রেকার না থাকায় তা ১১ শতাংশের বেশি কমে ২০৮ টাকায় লেনদেন হয়। কোম্পানিটি জুন, ২০২০ সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। 

ঢাকার অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ২০ দশমিক ২৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৫০৪ দশমিক ৯২ পয়েন্টে।

ডিএস৩০ সূচক ২২ দশমিক ৫০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ৬৫৬ দশমিক শূন্য ৫ পয়েন্টে।

লেনদেনের শীর্ষ ১০টি কোম্পানি

এনআরবিসি ব্যাংক, ডেল্টা লাইফ, আইএফআইসি, ওরিয়ন ফার্মা, ফরচুন সুজ, বেক্সিমকো, লাফার্জ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, সোনালি পেপার ও জেনেক্স ইনফোসিস।

দাম বাড়ার তালিকায় শীর্ষ ১০টি

ডেল্টা লাইফ, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, ফাস ফাইন্যান্স, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ, পপুলার লাইফ, প্রগতি লাইফ, পদ্মা লাইফ, এনভয় টেক্সটাইল, মেঘনা লাইফ ও প্রগ্রেসিভ লাইফ।

সবচেয়ে বেশি দর হারানো ১০টি কোম্পানি

বাংলাদেশ ল্যাম্পস, এনআরবিসি ব্যাংক, হেইডেলবার্গ সিমেন্ট, আরডি ফুড, বিচ হ্যাচারি, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, আলিফ মেনুফ্যাকচারিং, আমান ফিড, এএফসি এগ্রো বায়োটেক ও এইচ. আর টেক্সটাইল।   

দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার সিএসইতে এদিন ২৯৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড কেনাবেচা হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৯টির, কমেছে ১৯৯টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২০টির দর।

মঙ্গলবার এ বাজারে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ৩৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ বা ২৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা কমেছে।

মোট ৪৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিন ছিল ৭৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।