বেশি ছাড়ে বিক্রি বেড়েছে, ৪ প্রান্তিক পর মুনাফায় বাটা

চার প্রান্তিক পর মুনাফায় ফিরেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় জুতা প্রস্তুতকারক বাটা শু; পণ্য তৈরি ও বিপণনে কৌশল বদলের কারণেই পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে মনে করছেন কোম্পানিটির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 August 2021, 04:35 PM
Updated : 30 August 2021, 04:35 PM

গত রোববার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বাটা শু দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক হিসাবের তথ্য প্রকাশ করে। এতে দীর্ঘদিন পর মুনাফায় ফেরার খবর দেয় জনপ্রিয় ব্র্যান্ডটি। এই খবরে ওইদিন ৩৩ টাকা বেড়েছে বাটা শু এর শেয়ারের দাম।

বাটা শু কোম্পানি (বাংলাদেশ) এর মার্কেটিং ম্যানেজার ইফতেখার মল্লিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, আগের মত টেন্ডের দিকে নজর না দিয়ে আরামদায়ক জুতা তৈরিতে বিনিয়োগ করেছে বাটা। এ কারণেই বিক্রি বেড়েছে।

পাশাপাশি অনেক ছাড়ে পণ্য বিক্রি করা এবং অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর ইতিবাচক প্রভাবও পড়েছে বিক্রিতে, যা  মুনাফায় ফিরতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রোববার বাটা শু জানায়, ২০২১ সালের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে প্রতি শেয়ারে ১ টাকা ১৫ পয়সা মুনাফা হয়েছে। আগের বছর এই সময় শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৫৩ টাকা ৭৪ পয়সা।

তবে ২০২১ সালের প্রথম ছয় মাসের হিসাবে কোম্পানিটি এখনও প্রতি শেয়ারে ২ টাকা ৪৪ পয়সা লোকসানে আছে। যদিও এর পরিমাণ কমেছে অনেক। আগের বছর এই সময় শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৫১ টাকা ৬৭ পয়সা।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেও লোকসান দেখিয়েছিল কোম্পানিটি। আর গত বছর বাংলাদেশে ব্যবসার ইতিহাসে সর্বোচ্চ লোকসানে করেছিল কোম্পানিটি।

করোনাভাইরাস মহামারীতে দীর্ঘ লকডাউনে বিক্রিতে ধস নামায় টানা লাভের মধ্যে থাকা কোম্পানিটি ২০২০ হিসাব বছর শেষে মোট লোকসান করেছিল ১৩২ কোটি ৬১ লাখ টাকা। সেই হিসাবে ২০২০ সালে শেয়ারপ্রতি ৯৬ টাকা ৯৪ পয়সা লোকসান ছিল।

গত বছর দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক পর্যন্ত টানা লোকসানে ছিল কোম্পানিটি।

স্বাধীনতার আগে থেকে বাংলাদেশে আলাদা কোম্পানি খুলে ব্যবসা পরিচালনাকারী কোম্পানিটি সব সময় লাভেই মধ্যেই ছিল।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ- ডিএসইতে প্রকাশিত তথ্যে কোম্পানিটি জানিয়েছে, দ্বিতীয় প্রান্তেক গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪২৬ শতাংশ বিক্রি বাড়ার কারণেই মুনাফা বেড়েছে।

বিক্রি বাড়ার কারণ হিসেবে বড় ছাড় দেওয়ার কথা জানিয়েছে বাটা শু।

মার্কেটিং ম্যানেজার ইফতেখার মল্লিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“করোনাভাইরাসের কারণে বেশি সময় ঘরে থাকার কারণে অনেকের শারীরিক কিছু পরিবর্তন এসেছে। অভ্যাসগত কিছু পরিবর্তনও হয়েছে। এখন মানুষ জুতা কেনার ক্ষেত্রে আরামকে বেশি প্রধান্য দিচ্ছে।”

মানুষের আগ্রহ বদলের কারণে বাটা কৌশল পরিবর্তন করে আরামদায়ক জুতা তৈরির দিকে মনযোগ দিয়েছি জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা আরামদায়ক জুতা তৈরির গবেষণা ছয় থেকে সাত মাস আগেই শুরু করেছিলাম। এর কিছু কিছু বাস্তবায়ন করেছি। সামনে আরও নতুন জুতা আসবে।

“এর আগেও জুতা তৈরিতে কমফোর্ট বা আরামকে প্রধান্য দিতাম কিন্তু এখন একটা বিশেষ প্রাধান্য দিচ্ছি। চেষ্টা করছি কিভাবে আরাম ও ফ্যাশনকে মিলিয়ে আরামদায়ক ও দেখতে সুন্দর জুতা তৈরি করা যায়।”

তিনি বলেন, “আমাদের এই পরিবর্তন গ্রাহকরা খুব ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন।”

মুনাফার খবরে দাম বেড়েছে বাটা শুর শেয়ারের। গতবছর লোকসানের খবরে একসময় ১ হাজার টাকার উপরে লেনদনে হওয়া শেয়ার নেমে আসে ৬৪০ টাকায়।দীর্ঘদিন এর আশেপাশের দরেই লেনদেন হচ্ছিল।

রোববার মুনাফার খবরে প্রায় ৩৩ টাকা বেড়ে শেয়ারের দাম হয়েছে ৭৪৭ টাকা ২০ পয়সা।