পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিলের বোর্ড অব গভর্নরস গঠন

তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে দীর্ঘদিন দাবিহীন পড়ে থাকা লভ্যাংশ ব্যবহারে গঠিত পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিলের বোর্ড অব গভর্নরসের প্রথম চেয়ারম্যান করা হয়েছে সাবেক সচিব নজিবুর রহমানকে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2021, 05:07 PM
Updated : 22 August 2021, 05:07 PM

রোববার এক আদেশে তাকে বোর্ড অব গভর্নরসের প্রধান করে ১০ সদস্যের পর্ষদ গঠনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড- সিএমএসএফ নামের এই তহবিলের পর্ষদের নেতৃত্ব দেবেন।

আলোচিত এ তহবিলের  বোর্ড অব গভর্নরস গঠনের ফলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিভিন্ন কোম্পানির অবণ্টিত লভ্যাংশের অর্থ বাজারের উন্নয়নে বিনিয়োগে নিয়ে আসাতে আর বাধা থাকল না।

এ তহবিলের পরিমাণ ২০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি হতে পারে বলে এর আগে প্রাথমিক হিসাবে জানিয়েছে বিএসইসি।

বোর্ড অব গভর্নরসের অন্য সদস্যরা হলেন- বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিলা দীপ্তি, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক আমিন, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ভাইস চেয়ারম্যান এ কে এম নুরুল ফজল বুলবুল, সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিসিবিএল) স্বতন্ত্রো পরিচালক মোহাম্মদ তারেক, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) সভাপতি আজম জে চৌধুরী এবং আইসিএমএবির সাবেক সভাপতি এ কে এম দেলোয়ার হোসেন এফসিএমএ।

বিএসইসি কয়েক মাস আগে ‘পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিল’ নামে বিশেষ এই তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেয়। এর উদ্দেশ্য তারল্য সংকটে ভুগতে থাকা পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির বিপুল পরিমাণ অবণ্টিত অর্থ বিনিয়োগে আনা।

এরপর গত জুলাই মাসে ‘ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড রুলস, ২০২১’ গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে।

এখন এর চেয়ারম্যান ও সদস্য নির্ধারণ করে দিল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

অবণ্টিত ও দাবিহীন লভ্যাংশ কী?   

কোনো কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণার পর তা তাদের ডিভিডেন্ড অ্যাকাউন্ট থেকে বিনিয়োগকারীদের নামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

নগদ লভ্যাংশ সরাসরি বিনিয়োগকারীদের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়।

স্টক লভ্যাংশ জমা হয় তাদের বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) অ্যাকাউন্টে।

যাদের নামে শেয়ার, তারা কেউ মারা গেলে, বিদেশে চলে গেলে, কিংবা দীর্ঘদিন খোঁজ না রাখলে তাদের ব্যাংক হিসাব বন্ধ বা অকার্যকর হয়ে যায়। বিও হিসাবের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে।

এমন ক্ষেত্রে লভ্যাংশের টাকা বা শেয়ার বিনিয়োগকারীর ব্যাংক বা বিও অ্যাকাউন্টে জমা না হয়ে কোম্পানির কাছে ফেরত যায়।

বিনিয়োগকারীর মৃত্যুর পর অনেক সময় তথ্য বা কাগজপত্রের অভাবে তার মনোনীত উত্তরাধিকারও সেই টাকা বা শেয়ার আর দাবি করেন না।

এর বাইরেও আইনি জটিলতা বা অন্য কারণে লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীর হাতে পৌঁছায় না অনেক সময়। তখন কোম্পানি ওইসব লভ্যাংশ ‘সাসপেন্ডেড’ হিসাবে জমা দেখিয়ে চূড়ান্ত আর্থিক বিবরণী তৈরি করে।

সিডিবিএল হিসাবে থাকা ওইরকম ৩ হাজার ৩১৫টি সাসপেন্ডেড হিসাবে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার অবণ্টিত ও দাবিহীন লভ্যাংশের তথ্য মিলেছিল।