আট দিন পর ডিএসইর লেনদেন ২ হাজার কোটির নিচে

পরপর দুদিন সূচক কমার প্রভাব পড়েছে শেয়ার কেনাবেচাতেও, যে কারণে লেনদেন আট কার্যদিবস পর দুই হাজার কোটি টাকার নিচে নেমেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 June 2021, 10:38 AM
Updated : 14 June 2021, 12:44 PM

সোমবারও আগের কয়েক দিনের মত বাংলাদেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন শুরু হয়েছিল ঊর্ধ্বমুখী ধারাতেই।

তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়তে থাকায় সূচকও কমতে থাকে। মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতা থেকে শেয়ার বিক্রির পরিমাণ আরও বাড়ে।

এতে এক পর্যায়ে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫০ পয়েন্টের বেশি কমে যায়।

পরে বড় মূলধনী খাত ব্যাংকের বেশির ভাগ শেয়ারদর বাড়তে থাকলে পতনের তীব্রতা কিছুটা কমে; যদিও শেষ পর্যন্ত দিনের লেনদেন শেষ হয় ডিএসইএক্স ২২ পয়েন্ট কমার মধ্য দিয়ে।

সোমবার দিন শেষে ডিএসইএক্সের অবস্থান নেমে যায় ৬ হাজার ১৩ দশমিক ৬১ পয়েন্টে।

এ নিয়ে গত দুদিনে ঢাকার পুঁজিবাজারে মোট ৫৩ পয়েন্ট সূচক কমেছে, যা শতাংশের হিসাবে দশমিক ৮৭ শতাংশ।   

ডিএসইতে এদিন লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ বা ৩২৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা কমে ১ হাজার ৭৪০ কোটি ১৭ লাখ টাকায় নেমেছে। আগের কর্মদিবসে যা ছিল ২ হাজার ৬৯ কোটি ৭ লাখ টাকা।

লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকার নিচে নেমে যাওয়া নিয়ে শঙ্কার কিছু নেউ উল্লেখ করে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, “টানা বেশ কয়েক দিন বাংলাদেশের পঁজিবাজারে ২ হাজার কোটির উপরে লেনদেন হয়েছে। এখন একটু কমতেই পারে। পরে আবার হয়ত লেনদেন বাড়বে।”

এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৬৯ শতাংশ কোম্পানির দাম কমেছে।

সোমবার এই বাজারে লেনদেন হয়েছে ৩৭২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১০৩টির এবং কমেছে ২৫৮টির। অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির দর।

বেশির ভাগ কোম্পানির দাম কমলেও এদিন ব্যাংক খাতে বেশির ভাগ শেয়ারের দাম বেড়েছে। এই খাতের ৬৫ শতাংশ শেয়ারের দাম বেড়েছে। তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে ২০টির শেয়ারের দাম বেড়েছে।

এদিন ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের দামে মিশ্র ভাব ছিল। এই খাতের ৪৩ শতাংশ শেয়ারের দাম বেড়েছে। ২৩টি কোম্পানির মধ্যে ১০টির দাম বেড়েছে।

দাম বেড়েছে বীমা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারেরও।  তালিকাভুক্ত ৫০টির মধ্যে ৩১টির দাম বেড়েছে, শতাংশের হিসাবে ৬২ শতাংশ।

আর্থিক খাতের এমন চিত্রের বিপরীতে সোমবার ডিএসইতে খারাপ দিন গেছে বস্ত্র খাতের। এই খাতের অনেক শেয়ারের ক্রেতা ছিল না, কিছু শেয়ার লেনদেন হয়েছে সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন দরে।

এই খাতে তালিকাভুক্ত ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৪৫টির শেয়ারের দাম কমেছে, শতকরা হারে যা ৭৮ শতাংশ।

ঢাকার অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৮ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৮৪ দশমিক ৫৯ পয়েন্টে।

ডিএস৩০ সূচক ১৯ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ১৭২ দশমিক ৯৮ পয়েন্টে।

ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ ১০টি কোম্পানি

বেক্সিমকো লিঃ, এনআরবিসি ব্যাংক, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, লুব-রেফ, ফরচুন সুজ, ন্যাশনাল ফিড মিল, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স ও অরিয়ন ফার্মা।  

দাম বাড়ার শীর্ষ ১০টি কোম্পানি

ইনডেক্স এগ্রো, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স,  রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, রূপালী ব্যাংক, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, লুব-রেফ, এস আলম কোল্ড  রোল,  প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ও খুলনা প্রিন্টিং। 

দাম কমার শীর্ষ ১০টি কোম্পানি

খান ব্রাদার্স পিপি, মালেক স্পিনিং, ফারইস্ট নিটিং, জেনারেশন নেক্সট, আলিফ ম্যানুফেকচারিং, ড্রাগন সুয়েটার, অ্যাপলো ইস্পাত, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, গোল্ডেন সন ও প্রাইম ফার্স্ট মিঃ ফাঃ।

দরপতন থেকে বাদ যায়নি দেশের অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জও (সিএসই)।

এই বাজারের প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৬৩ দশমিক ২২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৭ হাজার ৪৬৫ দশমিক ১৬ পয়েন্টে।

সোমবার এই বাজারে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ১১ দশমিক ২১ শতাংশ বা ১০ কোটি ৯ লাখ টাকা কমেছে।

মোট ৭৯ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিন ছিল ৯০ কোটি ১ লাখ টাকা।

সিএসইতে ৩০৭টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৯০টির, কমেছে ১৯৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির দর।