‘কঠিন সময়’ পেরিয়ে পুঁজিবাজারে অনুঘটকের ভূমিকা রাখার প্রত্যাশা এলআর গ্লোবালের

বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ তহবিল ব্যবস্থাপক এলআর গ্লোবাল লোবাল জানিয়েছে, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ উৎসাহিত করতে আবার তারা নতুন করে কাজ শুরু করছে, যে কাজ ২০১৫ সালে ‘থমকে’ গিয়েছিল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2021, 07:42 AM
Updated : 8 May 2021, 09:48 AM

শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে নিউ ইয়র্কভিত্তিক একটি কোম্পানির এই সহযোগী প্রতিষ্ঠান বলেছে, বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে তারা ‘অনুঘটকের ভূমিকা’ পালন করতে চায়।

আর সেই লক্ষ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে পূর্ণ সহযোগিতা করে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি বাজার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন এলআর গ্লোবালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা আনন্দের সাথে সবাইকে জানাচ্ছি, ২০১৫ সাল থেকে এলআর গ্লোবাল যেসব বাধার সম্মুখিন হয়ে আসছিল, ২০২১ সালের শুরুতে এসে তার সমাধান হয়েছে।

“২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এলআর গ্লোবাল পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য অবদান রেখে চলেছে। এখন আমাদের অংশগ্রহণ থাকবে আরও বেশি, কেননা বিএসইসির অধিকতর স্বচ্ছ ভূমিকা এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের কল্যাণে একটি অনুকূল পরিবেশ এখন বাজারে সৃষ্টি হয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে পুঁজিবাজার পরিস্থিতি এবং এলআর গ্লোবালের সাফল্যের বিবরণ তুলে ধরেন রিয়াজ ইসলাম।

ঢাকার প্রগতি সরণিতে অ্যামচেম কার্যালয়ের আবদুল মোমেন হল রুমে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে পুঁজিবাজার পরিস্থিতি এবং এলআর গ্লোবালের সাফল্যের বিবরণ তুলে ধরেন রিয়াজ ইসলাম।

লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়, “যদিও গত কয়েক বছর আমাদের খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, কিন্তু ঐকান্তিক চেষ্টা, স্বচ্ছ বিনিয়োগ প্রক্রিয়া এবং সুচারু কর্মসম্পাদনের মধ্য দিয়ে আমরা তা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি।

“অংশীজনরা যে আস্থা এলআর গ্লোবালের ওপর রেখেছেন, সেজন্য সবাইকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। সর্বোচ্চ সততা বজায় রেখে সকল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে অবিচল থেকে সেরা কাজ করে যাওয়ার যে প্রতিশ্রুতি আমাদের রয়েছে, তা আমরা পূরণ করতে চাই।”

সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া লিখিত বিবৃতিতে এলআর গ্লোবাল বলেছে, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে বিনিয়োগের যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তা কাজে লাগাতে এলআর গ্লোবাল অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে চায়। আর সেজন্য কিছু বিষয়ে এলআর গ্লোবাল মনোযোগ দিচ্ছে।”

এই তহবিল ব্যববস্থাপক বলছে, দেশের অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের জন্য এই সুযোগ কাজে লাগাতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) ‘শতভাগ সহযোগিতা’ দিয়ে যেতে চায় তারা, যাতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার নেওয়া সংস্কারমূলক কাজগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যায় এবং বাজারে তা ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে। 

“বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের পুরো সম্ভাবনা কাজে লাগাতে এবং সকলের সম্মিলিত মঙ্গলের লক্ষ্যে এই যাত্রায় যারাই আমাদের সঙ্গী হতে চায়- আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী, নিয়ন্ত্রক সংস্থা, পৃষ্ঠপোষক, সাংবাদিক এবং বিনিয়োগকারী- যে কেউ, সবার জন্য আমাদের দুয়ার উন্মুক্ত।

“বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ উৎসাহিত করতে আমাদের যে কাজ ২০১৫ সালে থমকে গিয়েছিল, আমরা তা অবিলম্বে আবার শুরু করছি।”

পুঁজিবাজারের উন্নয়নে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে পূর্ণ সহযোগিতা করে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এলআর গ্লোবাল

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, যাত্রা শুরুর পর থেকে নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও এলআর গ্লোবাল দেশের অন্যতম সেরা অ্যাসেট ম্যানেজার হিসেবে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে। এলআর গ্লোবালের দায়িত্বে থাকা ফান্ডগুলো বাজারের তুলনায় বছরে গড়ে ৫ শতাংশ ভালো ফল দেখিছে; ডিভিডেন্ড দিয়েছে ৪৬.৬০ শতাংশের বেশি।

লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের পুঁজিবাজার এবং সামগ্রিকভাবে পুরো অর্থনীতি একটি সন্ধিক্ষণে এসে পৌঁছেছে বলে এলআর গ্লোবাল মনে করছে, যখন অংশীজনদের পদক্ষেপের ওপরই নির্ভর করছে বাজার কোন দিকে যাবে। সবার সঠিক পদক্ষেপ বাজারকে ‘সঠিক দিকে’ নিয়ে যেতে পারে, আর তা না হলে বাস্তবিত উন্নতির মাধ্যমে সবার লাভবান হওয়ার ‘এই সোনালী সুযোগ’ সবারই হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে।   

বর্তমান কমিশন (বিএসইসি) দায়িত্ব নেওয়ার পর পুঁজিবাজারের উন্নয়নে যেসব উদ্যোগ নিয়েছে সেগুলো তুলে ধরে এলআর গ্লোবাল বলেছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই ভূমিকায় তারা খুবই আশাবাদী।

“কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা, তাদের জরিমানা করা, বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বিদেশে রোড শো করা, আইপিও অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ করা, ভালো শেয়ারের সরবরাহ বাড়ানো, বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন, নতুন নতুন পণ্য চালু করা, বাজারকে স্থিতিশীল করতে ২১ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন, সামগ্রিকভাবে স্বচ্ছ এবং বিনিয়োগবান্ধব একটি পরিবেশ গড়ে তোলার চেষ্টাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ কমিশন নিয়েছে।”

এলআর গ্লোবাল বলছে, তথ্য আর বিনিয়োগ সম্পর্কিত জ্ঞানের যে ঘাটতি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে, তা পূরণে ‘সেতুবন্ধ’ হিসেবে কাজ করতে তারা সর্বশক্তি নিয়োগ করবে, যাতে পুঁজিবাজারে সংশ্লিষ্ট সকল বিনিয়োগকারী উপকৃত হতে পারে।

“বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সম্ভাবনার পুরোটা কাজে লাগানোর পাশাপাশি পুঁজিবাজার ও বাস্তব অর্থনীতির মধ্যে দূরত্ব ঘোচাতে এ অভিযাত্রায় যারাই আমাদের সঙ্গী হতে চান, আমরা তাদের স্বাগত জানাব।”