‘পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিল’ ব্যবহারের পথ খুললো

দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে দীর্ঘদিন দাবিহীন পড়ে থাকা লভ্যাংশের বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যবহারের রাস্তা খুলছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 May 2021, 02:12 PM
Updated : 3 May 2021, 02:28 PM

সোমবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) জানিয়েছে, ‘ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড রুলস, ২০২১ জনমত যাচাই পরবর্তী অনুমোদন’ দেওয়া হয়েছে।

কয়েকদিনের মধ্যেই এটি গেজেট আকারে প্রকাশ পাবে।

এর ফলে বিভিন্ন কোম্পানির অবণ্টিত লভ্যাংশের অর্থ পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বিনিয়োগে নিয়ে আসার সুযোগ তৈরি হলো।

বিএসইসি কয়েক মাস আগে ‘পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিল’ নামে বিশেষ এই তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেয়। এর উদ্দেশ্য তারল্য সংকটে ভুগতে থাকা পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির বিপুল পরিমাণ অবণ্টিত অর্থ বিনিয়োগে আনা।

সোমবার কমিশনের নিয়মিত সভায় এই তহবিল গঠনের বিধান অনুমোদন করা হয়। সভা শেষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এমন একটি উদ্যোগ নেওয়ার পর বিএসইসি দেখেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো প্রতিবছর বিনিয়োগকারীদের যে লভ্যাংশ দেয়, তার অবণ্টিত ও দাবিহীন লভ্যাংশের অর্থের পরিমাণ বিপুল। এর আকার ১৭ হাজার কোটি টাকার মত, যা সময়ে সময়ে কম বা বেশিও হতে পারে।

এই অবণ্টিত ও দাবিহীন লভ্যাংশ কাজে লাগাতে তহবিলের অনুমোদন দেওয়ায় তা এখন পুঁজিবাজারে ব্যবহারের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

অবণ্টিত ও দাবিহীন লভ্যাংশ কী?    

কোম্পানিগুলো লভ্যাংশ ঘোষণার পর তা তাদের ডিভিডেন্ড অ্যাকাউন্ট থেকে বিনিয়োগকারীদের নামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

নগদ লভ্যাংশ সরাসরি বিনিয়োগকারীদের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়।

স্টক লভ্যাংশ জমা হয় তাদের বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) অ্যাকাউন্টে।

যাদের নামে শেয়ার, তারা কেউ মারা গেলে, বিদেশে চলে গেলে, কিংবা দীর্ঘদিন খোঁজ না রাখলে তাদের ব্যাংক হিসাব বন্ধ বা অকার্যকর হয়ে যায়। বিও হিসাবের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে।

এমন ক্ষেত্রে লভ্যাংশের টাকা বা শেয়ার বিনিয়োগকারীর ব্যাংক বা বিও অ্যাকাউন্টে জমা না হয়ে কোম্পানির কাছে ফেরত যায়।

বিনিয়োগকারীর মৃত্যুর পর অনেক সময় তথ্য বা কাগজপত্রের অভাবে তার মনোনীত উত্তরাধিকারও সেই টাকা বা শেয়ার আর দাবি করেন না।

এর বাইরেও আইনি জটিলতা বা অন্য কারণে লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীর হাতে পৌঁছায় না অনেক সময়। তখন কোম্পানি ওইসব লভ্যাংশ ‘সাসপেন্ডেড’ হিসাবে জমা দেখিয়ে চূড়ান্ত আর্থিক বিবরণী তৈরি করে।

সিডিবিএল হিসাবে থাকা ওইরকম ৩ হাজার ৩১৫টি সাসপেন্ডেড হিসাবে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার অবণ্টিত ও দাবিহীন লভ্যাংশের তথ্য মিলেছিল।