রবির ‘নো ডিভিডেন্ড’, পুঁজিবাজারে দরপতন

দেশের দ্বিতীয় শীর্ষ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি রবি আজিয়াটার লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের পর কোম্পানিটির শেয়ারের দরপতনের মধ্যে সপ্তাহের তৃতীয় দিন সূচক ও লেনদেন কমেছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2021, 11:38 AM
Updated : 16 Feb 2021, 01:26 PM

মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিন থেকে ১৭ দশমিক ৭০ পয়েন্ট বা দশমিক ৩২ শতাংশ কমে ৫ হাজার ৫২৭ দশমিক ৩৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

গতবছর আটগুণ মুনাফা হলেও সোমবার রবির পরিচালনা পর্ষদ বিনিয়োগকারীদের জন্য লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বাজারে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।    

মঙ্গলবার ঢাকার বাজারে লেনদেন শুরুর পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ার ছেড়ে দেওয়ার হিড়িক পড়ে। দিন শেষে শেয়ার বিক্রির সংখ্যায় দ্বিতীয় বৃহত্তম কোম্পানি ছিল রবি।

কোম্পনিটির ২০,৪৮১,২৮২টি শেয়ার হাতবদল হয়, যেখানে শীর্ষস্থানে থাকা বেক্সিমকোর ২৩,৯১০,৫৯৫টি শেয়ার হাতবদল হয়।

দিনের লেনদেন শুরুর পর বিক্রির চাপে এক পর্যায়ে ১৫ শতাংশের বেশি দরপতন হয়। আগের দিনের ৪৬ টাকা থেকে রবির শেয়ারের দাম নেমে আসে ৩৯ টাকায়।

লভ্যাংশের বিষয়ের ঘোষণার দিন থাকায় এদিন রবির শেয়ারে কোনো সার্কিট ব্রেকার ছিল না।  

দিন শেষে রবির শেয়ারের দর কিছুটা বেড়ে ৪১ টাকা পয়সায় লেনদেন হয়। অর্থাৎ দরপতনের হার কিছুটা কমে ৯ দশমিক ১৩ শতাংশে ঠেকে।

গত বছরের শেষ দিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর এটাই রবির শেয়ার দরে সবচেয়ে বড় পতন।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষণী ওয়েবপোর্টাল আমারস্টকের হিসেবে, মঙ্গলবার ডিএসইতে দরপতনের পেছনে একক কোম্পানি হিসেবে রবির ভূমিকাই ছিল সবচেয়ে বেশি। নেতিবাচক বাজারের জন্য ১৪ দশমিক ৩৫ দায় ছিল রবির।

এরপরের অবস্থান ছিল গ্রামীণফোনের। টেলিযোগাযোগ খাতের শীর্ষ কোম্পানিটির নেতিবাচক সূচকের জন্য ৩ শতাংশ দায়ী।

ঢাকার পুঁজিবাজারে মঙ্গলবার ৯৯৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়, যা আগের কর্মদিবসে ১ হাজার ৮২ কোটি ২৭ লাখ টাকা ছিল।

ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০টি কোম্পানি হলো-বেক্সিমকো, বিএটিবিসি, রবি আজিয়াটা, বেক্সিমকো ফার্মা, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, সামিট পাওয়ার, জিবিবি পাওয়ার, আইএফ আইসি, ওয়ালটন ও স্কয়ার ফার্মা।

ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৪৯টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৪টির, আর কমেছে ১৭৫টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১০০টির দর।

ঢাকার পুঁজিবাজারে দাম বাড়ার তালিকায় শীর্ষ ১০টি কোম্পানি হলো- আনলিমা ইয়ার্ন, গোল্ডেন সন, লিব্রা ইনফিউশন, বেকন ফার্মা, জিবিবি পাওয়ার, এক্টিভ ফাইন, বিএটিবিসি, আইএফ আইসি, এইচ আর টেক্স ও সোনালী আঁশ।

দাম কমার তালিকার শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো- রবি আজিয়াটা, তৌফিকা ফুডস, বিআইএফসি, আইটিসি, অ্যাপোলো ইস্পাত, সিটি জেনারেল ইন্সুরেন্স, ইসলামি ইন্সুরেন্স, ইউনিলিভার, সাভার রিফ্র্যাক্টরিজ ও প্রাইম ইন্সুরেন্স।

মঙ্গলবার ঢাকার অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৭ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৫২ দশমিক ৫৫ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ সূচক দশমিক শূন্য ২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ১৪৬ দশমিক ১৬ পয়েন্টে।

এদিন অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৬৮ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৬ হাজার ৫ পয়েন্টে, যা আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৪৩ শতাংশ কম।

সিএসইতে বুধবার ৩৮ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিন ছিল ৩৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

লেনদেনে থাকা ২২৭টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৫০টির, কমেছে ১০৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৯টির দর।