আইপিও: বুকবিল্ডিংয়ে শেয়ারের দাম নির্ধারণ ৩ পদ্ধতিতে

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে আইপিও ছাড়া কোম্পানির শেয়ারের অযৌক্তিক দাম নির্ধারণ ঠেকাতে পদ্ধতি সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2021, 03:48 PM
Updated : 1 Feb 2021, 03:48 PM

সোমবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবিষয়ে নির্দেশনা জারি করেছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এখন থেকে বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে তালিকাভুক্ত হতে আসা কোম্পানির শেয়ারের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে ‘নেট অ্যাসেট ভ্যালু মেথড’, ‘ইয়েল্ড মেথড’ এবং ‘ফেয়ার ভ্যালু মেথড’ ব্যবহার করা যাবে।

পুঁজিবাজার থেকে টাকা তুলতে আসা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বর্তমানে দুই পদ্ধতিতে নির্ধারণ হয়: ১. ফিক্সড প্রাইজ মেথড, যেখানে বিএসইসি নিজে দাম ঠিক করে দেয়, ২. বুক বিল্ডিং মেথড যেখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ারর দাম নিলামের মাধ্যমে ঠিক করেন।

বুক বিল্ডিং মেথডে নির্ধারিত দাম নিয়ে নিয়ে অনেকদিন ধরে কারসাজির অভিযোগ রয়েছে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্তও হয়। অভিযোগ নিরসনে এই নতুন পদক্ষেপ নিল বিএসইসি।

সোমবারের এই নির্দেশনার মাধ্যমে ২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারির বুক বিল্ডিং পদ্ধতির পুরাতন নির্দেশনা বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরাতন নির্দেশনায় কোন শেয়ারের দাম নির্ধারনের কোন পদ্ধতি ছিল না।

সোমবারের নতুন নির্দেশনায় তিনটি পদ্ধতি বলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এসব পদ্ধতিতে শেয়ারের দাম নির্ধারণ করবে এবং সব তথ্য সংরক্ষণ করে সেটা বিএসইসিতে পাঠাবে। বিএসইসি পরে খতিয়ে দেখবে।

আগে কোনো পদ্ধতি না থাকায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নিলামে নিজেদের ইচ্ছামত দাম হাঁকাত। 

শেয়ারের দাম নির্ধারণ হবে কীভাবে

১. নেট অ্যাসেট মেথডে শেয়ারের দাম নির্ধারণ করতে হলে কোম্পানির নেট অ্যাসেট বা নীট সম্পদ বের করতে হবে।

নীট সম্পদ বের করতে হলে মোট সম্পদ থেকে ঋণ বিয়োগ করে দিতে, যে সব সম্পদ নিয়ে সন্দেহ আছ সেগুলো বিয়োগ করে দিতে হবে, প্রেফার্ড শেয়ার হোল্ডারদের পাওয়না বিয়োগ করে দিতে হবে, লভ্যাংশ প্রদেয় থাকলে বিয়োগ করে দিতে হবে।   

নীট সম্পদকে মোট শেয়ার সংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে নেট অ্যাসেট ভ্যালু মেথডে শেয়ারের দাম বের হয়ে আসবে।

২. ইয়েল্ড মেথডে শেয়ারের দাম বের করেতে হলে এক্সপেকটেড আর্নিংকে নরমাল আরনিং দিয়ে ভাগ করে ভাগফলকে ফেস ভ্যালু দিয়ে গুণ দিতে হবে।

৩. ফেয়ার ভ্যালু মেথডে অ্যাসেট ভ্যালু মেথড এবং ইয়েল্ড মেথড থেকে পাওয়া শেয়ারের দামের গড় করতে হবে। শেষ পর‌্যন্ত ফেয়ার ভ্যালু মেথডে যে দাম আসবে তার থেকে ২০ শতাংশ বেশি পর‌্যন্ত শেয়ারের দাম হাঁকাতে পারবেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ফেয়ার ভ্যালু মেথডে যদি কোনো শেয়ারের দাম হয় ১০ টাকা, সেই শেয়ারে দাম সর্বোচ্চ ১২ টাকা পর‌্যন্ত নিলামে বলতে পারবেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।