নিয়ন্ত্রক সংস্থার পদক্ষেপের পর বেড়েছে বীমার শেয়ারের দাম

বীমা কোম্পানিগুলোর উদ্যেক্তা পরিচালকদের ৬০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা মানতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সময় বেঁধে দেওয়ার পর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এ খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বেড়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2021, 12:36 PM
Updated : 19 Jan 2021, 12:36 PM

মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হওয়া ৩৫৭টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের মধ্যে ১৮১টির দর বেড়েছে।

আর ৪৯টি বীমা কোম্পানির মধ্যে ৪৬টিরই শেয়ারের দাম বেড়েছে, বাকি ৩টি শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।

বাংলাদেশের বীমা আইন অনুযায়ী, দেশে নিবন্ধিত সব সাধারণ ও জীবন বীমা কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ৬০ শতাংশ উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সংরক্ষণ করার কথা থাকলেও বাস্তবে তা নেই।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত ৪৯টি সাধারণ বীমা ও জীবন বীমা কোম্পানির মধ্যে ৪৪টির উদ্যোক্তা পরিচালকের ধারণকৃত শেয়ারের পরিমাণ ৬০ শতাংশের নিচে।

এ অবস্থায় বীমা কোম্পানিগুলোকে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন সংরক্ষণ এবং পরিশোধিত মূলধনের ৬০ শতাংশ শেয়ারউদ্যোক্তা পরিচালকের ধারণ করার শর্ত পূরণে এক মাস সময় বেঁধে দিয়ে গত রোববার কোম্পানিগুলোকে চিঠি পাঠায় বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।

ওই চিঠি পাওয়ার কথা জানিয়ে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আইন অনুযায়ী যেসব বীমা কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের ৬০ শতাংশ শেয়ার নেই, এখন তাদের সেই শেয়ার কিনতে হবে। আমরা যারা পুঁজিবাজরে তালিকাভুক্ত, আমাদের পরিচালকের শেয়ার বাড়াতে হবে “

২০১০ সালের বীমা আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে নিবন্ধিত জীবন বীমা কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন হতে হবে কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৬০ শতাংশ টাকা দেবেন উদ্যোক্তা পরিচালকরা, বাকি ৪০ শতাংশ টাকা আসবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে।

আর সাধারণ বীমা কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন হতে হবে অন্তত ৪০ কোটি টাকা। এক্ষেত্রেও ৬০ শতাংশ টাকা দেবেন উদ্যোক্তা পরিচালকরা।

শেখ কবির হোসেন বলেন, “চিঠিতে এসেছে, বাংলাদেশের সব বীমা কোম্পানিকেই এই ৬০ শতাংশ শেয়ার ধারণের নিয়ম পালন করতে হবে এবং এটা বাধ্যতামূলক। এটা আইনেও আছে। এখন যারা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে নেই, তাদেরকেও আইপিওতেও আসতে হবে।

“তবে আমি মনে করি, যেসব বীমা কোম্পানি আগেই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত, তাদের জন্য এই আইন শিথিল হওয়া উচিত্। যারা নতুন করে পুঁজিবাজারে আসবে তাদের জন্য এই আইন বাধ্যতামূলক হওয়া দরকার।”

মঙ্গলবার বীমা কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, “যারা শেয়ার ব্যবসা করে, তারা এই সুযোগে শেয়ার কেনা শুরু করেছে এই চিন্তা করে যে উদ্যেক্তাদের শেয়ার কিনতেই হবে। ফলে এই শেয়ারের দাম বেড়ে গেছে।“

করোনাভাইরাসের সঙ্কটের এই সময়ে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর পরিচালকদের জন্য নতুন করে শেয়ার কেনাটা চাপ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট।

তবে বাজার বিশ্লেষকরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইন মানতে সময় বেঁধে দিয়ে সঠিক কাজটিই করেছে। এর ফলে বীমা কোম্পানিগুলোতে সুশাসন বাড়বে, তা পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের জন্যও ভালো হবে।