‘রবির আইপিও ঘিরে’ বিও অ্যাকাউন্ট খোলার হিড়িক

বাংলাদেশে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের আগ্রহ হঠাৎ করেই ব্যাপক বেড়েছে; গত এক মাসে নতুন করে প্রায় দেড় লাখ বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের নামে।

ফারহান ফেরদৌসবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2020, 04:23 AM
Updated : 24 Nov 2020, 07:53 AM

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটার প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) বিনিয়োগ করতেই বিও অ্যাকাউন্ট খোলার হিড়িক পড়েছে।

সোমবার (২৩ নভেম্বর) ছিল দেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আইপিও (৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা) রবি আজিয়াটার চাঁদার টাকা জমা দেওয়ার পাঁচ দিনের শেষ দিন। বিও অ্যাকাউন্ট না থাকলে এর জন্য আবেদন করা যায় না।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের প্রথম ধাপ হল সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) অধীনে বিও অ্যাকাউন্ট খোলা। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকলে ব্রোকারেজ হাউজের মাধ্যমে বিও অ্যাকাউন্ট খোলা যায়।

সিডিবিএলের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ৩০ দিনে এক লাখ ৪৬ হাজার ৩৪টি বিও অ্যাকাউন্ট বেড়েছে, যা আগের চেয়ে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি।

সোমবার পর্যন্ত ২৪ লাখ ৯৪ হাজার ৪৩টি বিও অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, যা এক মাস আগে ছিল ২৩ লাখ ৪৮ হাজার ৯টি।

সাম্প্রতিক সময়ে এভাবে বিও অ্যাকাউন্ট খোলার হিড়িক আর দেখা যায়নি। এর আগের ৩০ দিনেও নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা হয় মাত্র ২৮ হাজার ২২৫টি।

২০১৯ সালের একই সময়ে (২৩ অক্টোবর থেকে ২৪ নভেম্বর) মাত্র ১০ হাজার ১৯৩টি বিও অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক রকিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রবির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে বিনিয়োগ করতেই এত বিও অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে।

“গ্রামীণফোনের আইপিওর সময় ৪ লাখ নতুন বিও অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল। এবার প্রায় দেড় লাখ নতুন বিও অ্যাকাউন্ট পেল পুঁজিবাজার।”

সিডিবিএলের তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে প্রায় দেড় লাখ বিও অ্যাকাউন্ট বাড়ার আগে একবছরে বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা দুই লাখ ২৯ হাজার ২৭৮টি কমে গত ২২ অক্টোবর ২৩ লাখ ৪৮ হাজার ৯টিতে নামে।

গত বছরের ২১ নভেম্বর বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ২৫ লাখ ৭৭ হাজার ২৮৭টি। সে হিসেবে প্রতি মাসে গড়ে ১৯ হাজার ১০৬টি অ্যাকাউন্ট কমেছে।

এর মধ্যে গত বছরের ২১ নভেম্বর থেকে এবছর ২৩ অগাস্ট আট মাসে (১০ মাসের মধ্যে দু্ই মাস বন্ধ ছিল) দুই লাখ ৬০ হাজার ৬২৭টি বিও অ্যাকাউন্ট কমেছিল।

এর পর ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত দুই মাসে বেড়েছে ৩১ হাজার ৩৪৯টি। আর ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত এক মাসে বিও অ্যাকাউন্ট বাড়ল একলাখ ৪৬ হাজার ৩৪টি।

সর্বশেষ এক মাসের মধ্যে তিন কোম্পানির আইপিওর চাঁদা জমা নেওয়ার নির্ধারিত সময় ছিল। এর মধ্যে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আইপিও (৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ) রবি আজিয়াটার চাঁদার টাকা জমা নেওয়ার সময় ছিল ১৭ নভেম্বর থেকে ২৩ নভেম্বর।

এর আগে ১০ নভেম্বর থেকে ১৬ নভেম্বর ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স ও ১৯ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর ডমিনেজ স্টিলের আইপিওর চাঁদার টাকা জমা নেওয়া হয়। তবে দুটি আইপিওর আকার তুলনামূলক অনেক ছোট।

রশিদ ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড ব্রোকারেজ হাউজের মালিক আহমেদ রশিদ লালী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত কিছু দিনে রবিসহ বেশ কিছু নতুন আইপি পুঁজিবাজারে এসেছে। সব মিলিয়ে বিও অ্যাকাউন্ট খোলা বেড়েছে। তবে রবির প্রভাবই সবচেয়ে বেশি।