হাজার কোটি টাকার বেশি আইপিও আসছে বাজারে

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) ছেড়ে সামনের দিনগুলোতে নয়টি কোম্পানি এক হাজার কোটি টাকার বেশি মূলধন সংগ্রহ করার অনুমতি পেয়েছে।

ফারহান ফেরদৌসবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Nov 2020, 04:58 AM
Updated : 3 Nov 2020, 12:14 PM

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন পাওয়া এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে তিনটির আইপিওর চাঁদা তোলার সূচি ঠিক হয়েছে।

এর মধ্যে দেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আইপিও (৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা) আনছে টেলিযোগাযোগ খাতের দ্বিতীয় শীর্ষ কোম্পানি রবি আজিয়াটা। তার সঙ্গে ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং সিস্টেমস লিমিটেড ও ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডও ফিক্সড প্রাইস মেথডে আইপিও আনছে।

বাকি ছয়টির চাঁদা তোলার সূচি ঠিক হয়নি। এগুলোর মধ্যে তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ও ই-জেনারেশন ফিক্সড প্রাইস মেথডে আসছে।

বাকি চারটি- মীর আক্তার হোসাইন, লুব-রেফ বাংলাদেশ, ইনডেক্স অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ও এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন- বুক বিল্ডিং মেথডে অর্থ সংগ্রহ করবে।

অনেকগুলো আইপিওর প্রভাবে স্বল্প মেয়াদে পুঁজিবাজারে কিছুটা সূচক পতন হলেও মানসম্পন্ন আইপিওর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব যে ইতিবাচক হবে তা নিয়ে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের কারোরই দ্বিমত নেই।

তবে ঝুঁকিপূর্ণ পুঁজিবাজারের কথা বিবেচনা করে কোম্পানি মৌল ভিত্তিসম্পন্ন কিনা তা যাচাই করে বিনিয়োগের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা- সেটা আইপিও হোক বা সেকেন্ডারি শেয়ার হোক।

এ বিষয়ে ব্রোকারেজ হাউজ রশিদ ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ রশিদ লালী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কোম্পানি বুঝতে প্রথমে দেখতে হবে উদ্যোক্তা কারা; ভালো লোক থাকলে ভালো কোম্পানি। এরপর দেখতে হবে বিগত বছরে কোম্পানির বিক্রি ও মুনাফা বেড়েছে কিনা; সাথে দেখতে হবে লভ্যাংশ দেওয়ার হার কেমন ও তা বাড়ছে কিনা।

“এর সাথে দেখতে হবে তাদের ভবিষ্যত কী? কোনো কোম্পানি আগে লাভ করেছে, ঠিক আছে। কিন্তু সামনে লাভ করতে পারবে কিনা সেটাও দেখতে হবে।”

নিয়ন্ত্রক সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী, মৌল ভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানি যাচাইয়ে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন; সম্পদের পরিমাণ ও তার যথাযথ ব্যবহার; লভ্যাংশ প্রদানের চর্চা ও তার হার; বার্ষিক সাধারণ সভা ও শেয়ারহোল্ডারদের মতামতে গুরুত্ব দেওয়া হয় কিনা; কোম্পানির মুনাফা, শেয়ারপ্রতি আয়, শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদের পরিমাণ ও তার ধনাত্মক প্রবৃদ্ধি; সঠিক সময়ে সব মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ হয় কিনা এবং সিকিউরিটিজ সংক্রান্ত সব আইন-কানুন, বিধি-বিধান মেনে কোম্পানি চালানো হয় কিনা তা বিবেচনায় নিতে হয়।

পুঁজিবাজারে আইপিও ছাড়ার অনুমতি পাওয়া এসব কোম্পানির ক্ষেত্রে কিছু মৌলিক তথ্য পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল।

ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং সিস্টেমস

ফিক্সড প্রাইস মেথডে পুঁজিবাজার থেকে ৩০ কোটি টাকা তুলবে প্রকৌশল খাতের কোম্পানি ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং সিস্টেমস। এর মধ্যে আইপিওর চাঁদার টাকা জমা নেওয়া শেষ হয়েছে ২৫ অক্টোবর।

নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে ডমিনেজ স্টিল ২০১৯ সালে মুনাফা দেখিয়েছে ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এর আগের দুই বছরে যথাক্রমে ৯ কোটি টাকা ও ৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা মুনাফা দেখানো হয়েছে।

২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির মোট সম্পদের পরিমান ১৫৩ কোটি। রিটার্ন অন অ্যাসেট বা সম্পদ ব্যবহার করে ৬ দশমিক ৩২ শতাংশ আয় হয়েছে।  

কোম্পানির নেট প্রফিট মার্জিন ১৫ দশমিক ৩২ শতাংশ অর্থাৎ ১০০ টাকা বিক্রি করলে ১৫ টাকা ৩২ পয়সা মুনাফা হয়।

সম্পদ ব্যবহারে কোম্পানির দক্ষতার একটি মানদণ্ড রিটার্ন অন অ্যাসেট। আর কোম্পানির মুনাফা করার ক্ষমতা তুলে ধরে নেট প্রফিট মার্জিন। দুটোই যত বেশি, কোম্পানি তত ভাল।

ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং সিস্টেমসের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।

ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড

ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সও ফিক্সড প্রাইস মেথডে টাকা তুলবে ১৬ কোটি। চাঁদার টাকা জমা নেওয়া শুরু হবে ১০ নভেম্বর থেকে।

কোম্পানিটি ২০১৯ সালে ৭ কোটি ২ লাখ মুনাফা দেখিয়েছে। এর আগে পর পর দুই বছর ৬ কোটি ২৩ লাখ টাকার মুনাফা দেখানো হয়েছে।

আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের মোট সম্পদ ১০৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। রিটার্ন অন অ্যাসেট ৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ; নেট প্রফিট মার্জিন ১৩ দশমিক ৩০ শতাংশ।

ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল-মাহমুদ।

রবি আজিয়াটা

রবি আজিয়াটা ফিক্সড প্রাইস মেথডে ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা তুলবে। চাঁদার টাকা জমা নেওয়া শুরু হবে ১০ নভেম্বর।

২০১৯ সালে রবি মুনাফা দেখিয়েছে ১৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এর আগে পর পর দুবছর যথাক্রমে ১৪ কোটি ৭৩ লাখ ও ১০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা মুনাফা হয়েছে। 

২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী রবির মোট সম্পদ ১৭ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা। রিটার্ন অন অ্যাসেট দশমিক ১০ শতাংশ। এর অর্থ ১০০ টাকার সম্পদ ব্যবহার করে ১০ পয়সা মুনাফা হয়েছে।

রবির নেট প্রফিট মার্জিন দশমিক ২৩ শতাংশ। অর্থাৎ ১০০ টাকার বিক্রিতে ২৩ পয়সা মুনাফা হয়েছে।

রবি আজিয়াটার পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইজাজউদ্দিন বিন ইদ্রিস ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহাতাব উদ্দিন আহমেদ।

তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ

খাদ্য ও সহযোগী খাতের কোম্পানি তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ফিক্সড প্রাইস মেথডে ৩০ কোটি টাকা তুলবে। চাঁদা তোলার দিন কোম্পানি এখনও ঠিক করেনি।

কোম্পানিটি ২০১৯ সাল থেকে এর আগের তিন বছর যথাক্রমে ৬ কোটি ১৬ লাখ, ৪ কোটি ২৫ লাখ ও মাত্র ২৫ লাখ টাকা।

তৌফিকা ইন্ডাস্ট্রিজ কার্যক্রমই শুরু করেছে ২০১৬ সালে। ওই বছর বিক্রি হয় ছয় কোটি টাকার মতো, লোকসান ছিল এক কোটি ৭০ লাখ টাকা। পরের বছরই প্রথম মুনাফার মুখ দেখে তৌফিকা। এবছর ৪৭ টাকার বিক্রিতে ২৫ লাখ টাকা মুনাফা হয়।

২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানির মোট সম্পদ ১৬৩ কোটি টাকা। রিটার্ন অন অ্যাসেট ৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ; নেট প্রফিট মার্জিন ৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান শামিমা নার্গিস হক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক একরামুল হক।

ই-জেনারেশন

তথ্য-প্রযুক্তি খাতের কোম্পানি ই-জেনারেশন ফিক্সড প্রাইস মেথডে ১৫ কোটি টাকা তুলবে। কোম্পানি যেদিন চাইবে সেদিন বাজার থেকে টাকা তুলতে পারবে।

কোম্পানিটি ২০১৯ সাল থেকে আগের তিন বছর যথাক্রমে ১০ কোটি ৯০ লাখ, ১০ কোটি ৪৯ লাখ ও ৮ কোটি ৬৮ লাখ মুনাফা দেখিয়েছে।

২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানির মোট সম্পদ ১৩১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। রিটার্ন অন অ্যাসেট হচ্ছে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। নেট প্রফিট মার্জিন ২৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

ই-জেনারেশনের চেয়ারম্যান সইয়দা কামরুন নাহার আহমেদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম আহসান।

মীর আক্তার হোসাইন লিমিটেড

বুক বিল্ডিং মেথডে পুঁজিবাজার থেকে ১২৫ কোটি টাকা তোলার অনুমতি পেয়েছে মীর আক্তার হোসাইন লিমিটেড। আইপিওর জন্য চাঁদা তোলার তারিখ এখনও ঠিক হয়নি।

মীর আক্তারের শেয়ারের কাট অব প্রাইস বা প্রান্তসীমা মূল্য ৬০ টাকা ঠিক হয়েছে। এর থেকে ১০ শতাংশ কম দামে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার পবেন।

কোম্পানিটি ২০১৯ সাল থেকে আগের তিন বছর যথাক্রমে ৬৩ কোটি ২৫ লাখ, ৬১ কোটি ৮৮ লাখ ও ৫২ কোটি ৯১ লাখ টাকা মুনাফা দেখিয়েছে।

২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মীর আক্তার হোসাইন লিমিটেডের মোট সম্পদ ১ হাজার ৬৯৯ কোটি; রিটার্ন অন অ্যাসেট ৩ দশমিক ৭২ শতাংশ, নেট প্রফিট মার্জিন ১৪ দশমিক ৮২ শতাংশ।

মীর আক্তার হোসাইনের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সহেলা হসেইন এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাছির হোসেন।

লুব-রেফ বাংলাদেশ

বুক বিল্ডিং মেথডে ১৫০ কোটি টাকা লুব-রেফ বাংলাদেশ। লুব-রেফ বাংলাদেশের কাট অব প্রাইস ঠিক হয়েছে ৩০ টাকা।

এর চেয়ে ১০ শতাংশ কম দামে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার পাবেন। তবে চাঁদা তোলার দিন ঠিক হয়নি।

কোম্পানিটি ২০১৯ সালে আগের তিন বছরে যথাক্রমে ২০ কোটি ৭৬ লাখ, ২০ কোটি ৪৫ লাখ ও ১৫ কোটি ৬ লাখ টাকা মুনাফা দেখিয়েছে।

২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, লুব-রেফ বাংলাদেশের মোট সম্পদ ৫০৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা; রিটার্ন অন অ্যাসেট ৪ দশমিক ১১ শতাংশ ও নেট প্রফিট মার্জিন ১৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

লুব-রেফ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মিসেস রুবিয়া নাহার ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ।

ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ

বুক বিল্ডিং মেথডে ৫০ কোটি টাকা তুলবে ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ। কাট অব প্রাইস বা প্রান্তসীমা মূল্য নির্ধারণের জন্য বিডিং শুরু হবে পহেলা নভেম্বর।

ইনডেক্স এগ্রো ২০১৯ সাল থেকে আগের তিন বছরে যথাক্রমে ২৭ কোটি ৫৭ লাখ, ২৬ কোটি ৫২ লাখ ও ২১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা মুনাফা দেখিয়েছে।

২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুয়যায়ী, কোম্পানির মোট সম্পদ ৩১৮ কোটি ১২ লাখ টাকা; রিটার্ন অন অ্যাসেট ৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ ও নেট প্রফিট মার্জিন ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মাজহারুল কাদের ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহিন বিন মাজহার।

এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড

বুক বিল্ডিং মেথডে এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড বাজার থেকে ১৫০ কোটি টাকা তুলবে। চাঁদা তোলার দিন এখনও ঠিক হয়নি।

এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের কাট অফ প্রাইস হয়েছে ৩৫ টাকা। এর থেকে ১০ শতাংশ কম দামে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কিনতে পারবেন।

এনার্জিপ্যাক ২০১৯ সাল থেকে আগের তিন বছর যথাক্রমে ৪৭ কোটি ৯৯ লাখ, ৪৫ কোটি ৩৫ লাখ ও ৩০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা মুনাফা দেখিয়েছে।

২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এনার্জিপ্যাকের মোট সম্পদ ৩ হাজার ২০৪ কোটি টাকা; রিটার্ন অন অ্যাসেট ১ দশমিক ৫০ শতাংশ ও নেট প্রফিট মার্জিন ৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান রবিউল আলম এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন রশিদ।

বিনিয়োগকারীদের অনেকে এসব আইপিও কিনতে নিজেদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দিতে পারেন। তখন বিক্রির চাপে পুঁজিবাজারের সূচক পতন হতে পারে।

এ বিষয়ে শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পুঁজিবাজারে আইপিও এলে মুনাফা করার আশায় সবাই ‌সেই শেয়ার পেতে চায়। কারণ বাংলাদেশে নতুন শেয়ারের দাম প্রথমে অনেক বেড়ে যায়। তবে এই প্রভাব কম সময় থাকে। সেটা পরে ভাল হয়ে যায়।

“আইপিও স্বল্প মেয়াদে কিছুটা সূচক কমালেও পুঁজিবাজারের জন্য ভালো। কারণ যত বেশি আইপিও আসবে পুঁজিবাজারের গভীরতা ততই বাড়বে। গভীরতা বাড়লে কারসাজি করার সুযোগ কমে আসবে।”

চলতি বছর ১৮ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বিএসইসির দায়িত্ব নেওয়ার পর মাত্র একটি আইপিওর আবেদন হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া সবগুলো আইপিও আগের কমিশনের।

চলতি বছর এ পর্যন্ত আইপিও ছেড়ে অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন ১৫ কোটি টাকা, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স ২৬ কোটি ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা ও ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ১০০ কোটি টাকা টাকা তুলেছে।

২০১৯ সালে নয়টি কোম্পানি পুঁজিবাজারে আইপিও ছেড়ে ৫৪০ কোটি টাকা তুলেছিল। তার আগের বছর ১২টি কোম্পানি আইপিও ছাড়ার অনুমোদন পেয়ে ৫০১ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক শাকিল রিজভী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পুঁজিবাজারের দীর্ঘমেয়াদী ভালোর জন্য বেশি বেশি আইপিও আসতে দিতে হবে। তবে আইপিওর মান ভালো হতে হবে। আইপিওর মান নিশ্চিত করতে অবহেলার ক্ষেত্রে ইস্যু ম্যানেজারে বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থার কথা ভাবতে পারে বিএসইসি।

“ইন্ডিয়াতে এক সময়ে কখনো কখনো চারটা/পাঁচটা কোম্পানির আইপিওর চাঁদার তারিখ ফেলা হয়। ভাল কোম্পানিগুলো ফান্ড পায়, খারাপগুলো ফান্ড পায় না। কিন্তু আমাদের দেশে তো বাঁচিয়ে করা হয়।”