ক্রেস্টের বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করল ডিএসই

গুটিয়ে যাওয়া ব্রোকারেজ হাউজ ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2020, 03:14 PM
Updated : 6 July 2020, 11:57 AM

ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ছানাউল হক রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ক্রেস্টের গ্রাহকরা দ্রুতই তাদের শেয়ার ও টাকা ফিরে পাবেন।

ব্রোকারেজ হাউজটির ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে এবং এর মালিকের বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার পথও বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএসই সভাপতি।

করোনাভাইরাস মহামারীকালে ঢাকার পুঁজিবাজারের ব্রোকারেজ হাউজ ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ গুটিয়ে এর মালিক শহিদ উল্লাহ সম্প্রতি লাপাত্তা হয়ে গেছেন।

এতে বিপাকে পড়েছেন ব্রোজারেজ হাউজের গ্রাহকরা। সঙ্কটকালে তাদের শেয়ার ও অর্থ আটকে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন তারা।

ব্রোকারেজ হাউজটির অধীনে প্রায় ২১ হাজারের মতো একাউন্ট রয়েছে, তাতে যে শেয়ার রয়েছে, তার বাজার মূল্য ৮২ কোটি টাকার মতো।

এই পরিস্থিতিতে রোববার জরুরি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আসেন ডিএসই সভাপতি ছানাউল।

“বিষয়টিকে আমরা খুব গুরুত্বের সাথে নিয়েছি। আমরা যত দ্রুত সম্ভব বিনিয়োগকারীদের শেয়ার এবং টাকা তাদের কাছে ফিরিয়ে দেব। এটা আমাদের জন্য একটা এসিড টেস্ট। আমরা বিষয়টি দ্রুত শেষ করে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই।”

বিনিয়োগকারীদের সহায়তা চেয়ে তিনি বলেন, “আমরা বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে তাদের পাওনার ব্যাপারে তথ্য চাচ্ছি। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আমাদের কাছে তথ্য পাঠান, আমরা যত দ্রুত সম্ভব, সব কিছু শেষ করতে চাই।”

রোববার বিষয়টি নিয়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিএসইসির সঙ্গে বসেছে ডিএসই।

“তারা আমাদের জানিয়েছে, তারা আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে,” বলেন ছানাউল।

ক্রেস্টের দায়দেনার হিসাব ইতোমধ্যে শুরু করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা সিডিবিএলের (সেন্ট্রাল ডিপসেটরি বাংলাদেশ লিমিটেড) কাছে যে তথ্য পেয়েছি তাতে দেখা যাচ্ছে, এই ব্রোকারেজ হাউজে প্রায় ২১ হাজারের মতো একাউন্ট আছে। আর এর মধ্যে যে শেয়ার আছে, তার বাজার মূল্য ২৫ জুনের হিসাব অনুয়ায়ী ৮২ কোটি টাকা।”

ছানাউল বলেন, ““আমরা ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের বর্তমান অবস্থা খতিয়ে দেখছি, তাদের সম্পদের পরিমাণ কত, তাদের দেনা কত এবং তাদের কাছে কী পরিমাণ সম্পদ আছে। তাদের সম্পদ বিক্রি করে বিনিয়োগকারীদের টাকা বুঝিয়ে দেব।

“এর বাইরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের যে শেয়ারটা সিডিবিএলে আটকানো আছে, সেটার ভ্যালু আছে ১০ কোটি টাকার উপরে। প্রয়োজন হলে সেটাও আমরা সেল করে দিয়ে বিনিয়োগকারীদের পাওনা মিটিয়ে দেব।”

‘পালানোর পথ বন্ধ’

ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মালিকের বিদেশে পালানোর পথ বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএসই সভাপতি।

তিনি বলেন, “আমরা পল্টন থানায় সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে অভিযোগ করেছি। যেহেতু ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের অফিস পল্টন থানায়।

“পাশাপাশি অভিযোগের একটি কপি আমরা ইমিগ্রেশন অফিসে পাঠাই যেন এর সাথে জড়িতরা দেশের বাইরে না যেতে পারে।”

গত ২৩ জুন খবর পাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয় বলে জানান ছানাউল।

তিনি বলেন, “২৪ তারিখে তাদের লেনদেন বন্ধ করে দিই। আমরা বিষয়টি সিডিবিএলকে জানাই যেন তারা আর লেনদেন করতে না পারে।

“আমরা সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে পত্র মারফত বিষয়টি জানাই এবং ব্যাবস্থা নিতে অনুরোধ করি।”

তিনি বলেন, “আমাদের চিঠির পরে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা আমাদের কাছ থেকে সমস্ত তথ্য নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানায় এবং একাউন্ট ফ্রিজ করার জন্য তারা চিঠি লেখে।

“এর বাইরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে আমরা ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের পরিচালকদের ব্যাংক একাউন্টগুলো ফ্রিজ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাই।”

ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৬ সাল থেকে কাজ করছে তারা। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লায় তাদের তিনটি অফিস আছে।