ঢাকা স্টক একচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক শাকিল রিজভী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পুঁজিবাজারের অবস্থা আগে থেকেই খারা্প ছিল। এর মধ্যে অবার করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে পুঁজিবাজারের অবস্থা ‘আরও খারাপ হতে যাচ্ছে’।
“এ অবস্থায় পুঁজিবাজারকে গতিশীল করতে এবং আমরা যেন এই খারাপ অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারি সেজন্য অসন্ন বাজেটে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে সাহায্য দরকার। আশা করি, অর্থমন্ত্রী আমাদের দাবিগুলোর দিকে নজর দেবেন।”
পুঁজিবাজার ডিমিউচুয়ালাইজড করার সময় পাঁচ বছর কর অব্যাহতির কথা বলা হলেও দুই বছর পর ওই সুবিধা প্রত্যাহার করা হয় বলে জানিয়েছেন শাকিল রিজভী।
তিনি বলেন, “বর্তমানে যে অবস্থা এখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে পাঁচ বছর কর ছাড় দরকার হবে। আমাদের একভাবে কর শুরু হয়ে যাচ্ছে। অমাদের স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে হলে কর ছাড় দিতেই হবে।
“পুঁজিবাজারে লেনদেনের উপরে কর কমাতে হবে। এখন আমাদের দেশে প্রতি ১ লাখ টাকার শেয়ার কিনতে ৫০ টাকা কর যায়। আবার যে শেয়ার বিক্রি করছেন তার পক্ষ থেকে যায় ৫০ টাকা। অর্থাত্ এ হার দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। ১ লাখ টাকা ট্রেড করলে ১০০ টাকা কমে যাচ্ছে। বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে এটা কমিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি।”
বিনিয়োগকারীদের করমুক্ত লভ্যাংশের আয় সীমা ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
শাকিল রিজভী বলেন, “অপ্রদর্শিত টাকা ৫ শতাংশ কর দিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার সুযোগ দিলে এবং লিস্টেড কোম্পানির শেয়ার কিনলে সেটা কমপক্ষে দুই বছর ধরে রাখার প্রভিশন রাখলে ভালো হবে।
“বর্তমানে পুঁজিবাজারে যে তারল্য সংকট সেটা কমবে। একদিকে যেমন পুঁজিবাজার এর ভালো ফলে পাবে অন্যদিকে কর না দেয়া টাকা অর্থনীতির মূল ধারায় আসার সুযোগ হবে। সরকার এখান থেকে ৫ শতাংশ করও আয় করতে পারবে।”
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক, ইন্সুরেন্স ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করের হার ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩২.৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়ার কথা জানিয়েছেন শাকিল রিজভী।
এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “ব্যাংকগুলো এখন খুবই খারাপ অবস্থায় আছে। অনেক ব্যাংক মুনাফা করতে পারছে না, এভাবে চলতে থাকলে কিছু কিছু ব্যাংক বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে কিন্তু সরকার আর টাকা পাবে না।
এছাড়া ব্যাংক বন্ড ইস্যু করলে আরও ১০ শতাংশ কর ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “এটা করলে ব্যাংকগুলো বন্ড ছাড়তে উৎসাহী হবে। তাদের মূলধনী শক্তি আরও বাড়াতে পারবে।”
শাকিল বলেন, “বিনিয়োগকারীরা তালিকাভুক্ত কোম্পানির বন্ড কিনলে সেখানে থেকে যে আয় হবে তার থেকে সর্বোচ্চ কর আমরা ধরতে বলেছি ৫ শতাংশ। এতে মানুষজন বন্ড কিনতে উৎসাহী হবে এবং বন্ড বাড়লে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা অনেকাংশে বাড়বে।”
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে যেসব কোম্পানি বিভিন্ন জায়গায় অনুদান দিয়েছে তারা তথ্য-প্রমাণ দেখাতে পারলে তাদের কর ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে আগামী ১০ জুন বসছে সংসদের অষ্টম অধিবেশন। এই অধিবেশনেই ১১ জুন ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব তুলবেন অর্থমন্ত্রী।