করোনাভাইরাস: ডিএসইর সূচক সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন

নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে পড়তে থাকা বাংলাদেশের দুই পুঁজিবাজার সপ্তাহের চতুর্থ দিন বুধবারও সূচক হারিয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2020, 10:15 AM
Updated : 18 March 2020, 10:19 AM

এদিন বাংলাদেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৬৮ দশমিক ৬০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬০৩ দশমিক ৯৫ পয়েন্টে, যা আগের দিনের তুলনায় ৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ কম। এই সূচক ৮২ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম।

এ নিয়ে গত চার কার্যদিবসে প্রায় ৬২৮ পয়েন্ট বা ১৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ সূচক হারিয়েছে ঢাকা স্টক একাসচেঞ্জ (ডিএসই)। গত সপ্তাহের বুধবার সূচক ছিল ৪ হাজার ২৩১ পয়েন্ট।

এর আগে এর চেয়ে কম সূচক ছিল ২০১৩ সালের ৯ মে, সূচক নেমেছিল ৩ হাজার ৫৫৯ দশমিক ২৫ পয়েন্টে।

বুধবার ডিএসইতে ৪২৯ কোটি ৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। মঙ্গলবার সরকারি ছুটি থাকায় পুঁজিবাজারেও লেনদেন হয়নি। আগের দিন সোমবার লেনদেন হয়েছিল ৪০৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৪৮৩ দশমিক ২৩ পয়েন্ট কমে বুধবার দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৯৩ দশমিক ২৮ পয়েন্টে, যা আগের দিনের তুলনায় ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ কম।

এদিন সিএসইতে ১৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সোমবার লেনদেন হয়েছিল ১৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

বুধবার ডিএসইতে অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৩৯ দশমিক ২৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৮৩৪ পয়েন্টে।  আর ডিএস৩০ সূচক ৬১ দশমিক ৬৩ কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২০৩ পয়েন্টে।

ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৫৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩টির, আর কমেছে ৩৩৩টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১০টি কোম্পানির শেয়ার দর।

অন্যদিকে সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৪৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৯টির, কমেছে ২১৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১০টির দর।

সূচক পতন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে পুঁজিবাজারে একটা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। মানুষ মনে করছে অর্থনীতির খারাপ অবস্থা হতে পারে। তারা ভাবছে শেয়ারের দাম আরও কমে যাবে। ভয়ে শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলে নিচ্ছে।”

এ অবস্থায় বাজার সামাল দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের তারল্য বাড়ানো উচিৎ বলে মনে করেন তিনি।

অধ্যাপক মিজান বলেন, “সরকারি বন্ড কিনে নিয়ে অর্থনীতিতে টাকার যোগান বাড়াতে হবে। তারপর ব্যাংকগুলোকে বলতে হবে শেয়ার কিনতে।”

বাজারের এই দশা নিয়ে সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান এইমস অব বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াওয়ার সায়ীদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দেশের পুঁজিবাজারে আগে থেকেই আস্থার অভাব ছিল। এর মধ্যে শুরু হয়েছে করোনাভাইরাসের প্রভাব। পুঁজিবাজারের সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। মার্চেন্ট ব্যাংক এবং মিউচুয়্যাল ফান্ডগুলোকে ভূমিকা রাখতে হবে এই সমস্যা থেকে উত্তরণে।”