গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় রোববারও দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে প্রায় ৪ শতাংশ কমে চার হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে এসেছে; লেনদেনও ৪০০ কোটির নিচে ঠেকেছে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইএক্স ১৬০ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট বা প্রায় ৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ কমে ৩ হাজার ৯৬৯ দশমিক ৩১ পয়েন্টে নেমেছে।
এর ফলে প্রায় ৫ বছর পর ডিএসইএক্স আবার চার হাজার পয়েন্টের নিচে নামল। ২০১৫ সালের ৪ এপ্রিল এই সূচক নেমে ৩ হাজার ৯৫৯ পয়েন্টে ঠেকেছিল।
২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি ডিএসইএক্স সূচক চালুর সাত বছর গত ৯ মার্চ ঢাকার বাজারে সবচেয়ে বড় ধস হয়; এক দিনেই সূচকটি ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ পড়ে ৪ হাজার ৮ পয়েন্টে এসে নামে।
এরপরেরা দুই দিন বাজারে কিছুটা উত্থান হলেও সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ২ দশমিক ৬ শতাংশ বা ১০১ দশমিক ৫২ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ১২৯ দশমিক ৯৬ পয়েন্টে নামে। রোববারও দিনের শুরু থেকে পতনের ধারা অব্যাহত ছিল।
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মহামারী নতুন করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট ভীতি ও পুঁজিবাজারে ব্যাংকের কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ না হওয়াকে এই দরপতনের জন্য দায়ী করছেন বাজারসংশ্লিষ্টদের কেউ কেউ।
শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভয় তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে আমদানি-রপ্তানি কমে গেছে।
“দেশের অর্থনীতির গতি কমে যেতে পারে- এ ভয় থেকে পুঁজিবাজারে ভয়ে সবাই শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে।”
রোববার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৭৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার, যা আগের কার্য দিবসে ছিল ৪০৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৪৮টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৭টি ছাড়া সবগুলির দর কমেছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ১০টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ৭টি কোম্পানির শেয়ার দর। বাকি ৩৩৮টির দর কমেছে।
এদিকে দেশের অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৪৮৯ দশমিক ২৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১২ হাজার ১৫৩ দশমিক ৯০ পয়েন্টে।
তবে সিএসইতে লেনদেন বেড়ে ২৪ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার হাতদবদল হয়েছে। বৃহস্পতিবার লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১১ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
এই বাজারে হাতবদল হওয়া ২৫০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১২টির, কমেছে ২৩৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪টির দর।
এবিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, “দেশের পুঁজিবাজারে এখন আস্থার অভাব রয়েছে। আবার করোনাভাইরাসের একটি বিরূপ প্রভাব পুঁজিবাজারে আসতে পারে। সব মিলিয়ে সামনে একটা খারাপ সময় আসছে। এ অবস্থায় পুঁজিবাজারে আস্থা বাড়াতে ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।”
সরকার ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার বড় সুযোগ করে দেওয়ার পরেও কেন ব্যাংকগুলো আসছে না, সেই প্রশ্ন রাখেন তিনি।
“তারা আমাদের কিছু সমস্যার কথা জানালেন। আমি বলতে চাই, এক মাস হয়ে যাওয়ার পরেও তারা নিজেদের মধ্যে একটি আলোচনাও করেননি। প্রধানমন্ত্রীর একটা নির্দেশ এত হালকাভাবে তারা কীভাবে নিল!”