‘স্বস্তির’ সপ্তাহ পার করল পুঁজিবাজার

দীর্ঘদিন পর একটা ‘স্বস্তির’ সপ্তাহ পার করল বাংলাদেশের পুঁজিবাজার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Nov 2019, 11:40 AM
Updated : 7 Nov 2019, 11:40 AM

সপ্তাহের পাঁচ দিনের লেনদেনে চার দিনই মূল্যসূচক বেড়েছে। ঢাকায় প্রধান সূচক ডিএসইএক্স উঠেছে ৬০ পয়েন্টের মতো। গড় লেনদেনও হয়েছে ৩৫০ কোটি টাকার উপরে।

বাজার বিশ্লেষক শাকিল রিজভী এই সপ্তাহকে ‘ইতিবাচক’ মন্তব্য করে বলেছেন, “আস্তে আস্তে আস্থা ফিরছে বাজারে। আশা করছি, আগামী কয়েক মাস ভালোই যাবে।”

সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৭ দশমিক ২১ পয়েন্ট বেড়েছে। আগের দিন বুধবার বেড়েছিল ৫১ পয়েন্ট। মঙ্গলবার বাড়ে ২৫ পয়েন্টের বেশি।

৩ নভেম্বর রোবার ২৯ পয়েন্ট বাড়ার মধ্য দিয়ে সপ্তাহ শুরু হয়। পরের দিন সোমবার অবশ্য এই সূচক ৩৪ পয়েন্ট পড়ে যায়।

সবমিলিয়ে এই সপ্তাহে ডিএসইএক্স ৬০ পয়েন্টের মতো। বেড়েছে।

বাজারের এই ঘুরে দাঁড়ানোয় সন্তোষ প্রকাশ করে ডিএসইর ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাজারে টানা যে দরপতন হচ্ছিল, সেটা আপাতত বন্ধ হয়েছে। এখন আর ক্রমাগত পতন হবে না। বাড়বে-কমবে এমনটা হবে।”

“ভয় পেয়ে অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছিল।সে কারণে সূচকের পতন হচ্ছিল।সেটি এখন বন্ধ হয়েছে।”

শাকিল রিজভী

কেনো এমনটা মনে করছেন- এ প্রশ্নের উত্তরে শাকিল বলেন, “তারল্য সংকটের পাশাপাশি যে সব কোম্পানির বছর জুন মাসে শেষ হয়েছে তারা যে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল সেগুলো খারাপ ছিল। অর্থাৎ ঔ কোম্পানিগুলো শেয়ারহোল্ডারদের ভালো লভ্যাংশ দেয়নি। সে কারণে পুঁজিবাজারে প্রায় টানা দরপতন হয়েছে।”

“যেহেতু জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর ঘোষণা শেষ হয়ে গেছে। এখন ডিসেম্বরে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ অন্য কোম্পানির হিসাব বছর শেষ হবে। ফেব্রুয়ারি-মার্চে সেগুলোর লভ্যাংশ ঘোষণা আসবে। তার আগে পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতনের সম্ভাবনা নেই।”

“এখন আর আগের মত সূচক কমার সম্ভাবনা নেই; ৫০ পয়েন্ট বাড়বে, ২০ পয়েন্ট কমবে- এভাবেই হয়তো সূচক ইতিবাচক ধারার দিকে যাবে। যে সব কোম্পানির শেয়ারের দাম একটু বেশি বেড়েছিল সেগুলো কিন্তু কমে এখন সঠিক অবস্থায় এসেছে। এই অবস্থা থেকে আরও নিচের দিকে নামার সম্ভাবনা একবারেই কম। অন্য কোম্পানির দর কমতে কমতে একেবারে নিচে নেমে এসেছে।”

“দেখে-শুনে এই বাজারে শেয়ার কিনলে ভালো মুনাফা আসবে। বিনিয়োগকারীরা সেই সুযোগটা নিতে বাজারমুখি হবেন বলে আমার মনে হয়।”

বাজার পরিস্থিতি

বৃহস্পতিবার ঢাকায় ৩৬৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বুধবার লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩৮৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে ৯০ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ব্লক মার্কেটে কয়েকটি কোম্পানির শেয়ার বেশি লেনদেন হওয়ায় এই বাজারে অন্যান্য দিনের চেয়ে বৃহস্পতিবার লেনদেন বেশ বেড়েছে।

বুধবার সিএসইতে ১৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৩০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৬৪টির, কমেছে ১১৫টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫১টির দর।

ডিএসইএক্স বা প্রধান সূচক ১৭ দশমিক ২১পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৭৭১ দশমিক ৯১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক দশমিক ৩০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে এক হাজার ৮৯ দশমিক ৫৭ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ সূচক ৩ দশমিক ৭১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৬৭০ দশমিক ৯১ পয়েন্টে।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ( সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৩৭ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৪ হাজার ৪৮৩ দশমিক ২৭ পয়েন্টে।

লেনদেনে অংশ নিয়েছে ২৩৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১২৭টির, কমেছে ৭৩টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৯টির দর।