দুই-তিন বছরেই জিডিপির ৪০% হবে পুঁজিবাজার: খায়রুল

আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যেই বাংলাদেশের পুঁজিবাজার জিডিপির ৪০ শতাংশ প্রত্যাশা করছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Oct 2019, 06:12 PM
Updated : 7 Oct 2019, 06:22 PM

সোমবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বাংলাদেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আয়োজিত ‘প্রমোটিং ডিএসই এসএমই এন্ড ভি-নেক্সট প্লাটফর্ম’ অনুষ্ঠানে তিনি এ আশার কথা শুনিয়েছেন।

স্মল ক্যাপ প্ল্যাটফর্ম এবং ভি-নেক্সট সেবা বিনিয়োগকারীদের সামনে তুলে ধরতেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডিএসই।

খায়রুল হোসেনে বলেন,“আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যেই আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেট একটি অত্যন্ত সুদৃঢ় অবস্থানে যাবে। এবং আমাদের জিডিপির ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ হবে।”

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারের অবদান খুঁজে বের করতে গিয়ে দেখা যায়, ২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের পুঁজিবাজার জিডিপির ১৮ শতাংশের কাছাকাছি। সেখানে ভারতে ৭০ শতাংশের উপরে। আর থাইল্যান্ড ১০০ শতাংশের উপরে।

পুজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান ব্যক্তি মনে করছেন দুই-তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বর্তমানের তুলনায় অনেক গুণ বড় হবে। অর্থনীতিতে অবদান অনেকটা বাড়বে।

এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে খায়রুল হোসেন বলেন, “এখন থেকে আমাদের ছোট ছোট কোম্পানিগুলো যাদেরকে আমরা এসএমই বলে থাকি তারা পুঁজিবাজার থেকে পুঁজি সংগ্রহ করতে পারবে। পাশাপাশি তারা বিদেশ থেকেও টাকা পাবে। আমরাও এসএমই এর উপর ভর করে চায়না যেভাবে অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত করেছে আমরাও সেটা করতে পারব।”

“এতদিন এটা সম্ভব হয়নি কারণ আমাদের এসএমই গুলো বাংলাদেশের সাধারণ যে ব্যাংকিং ব্যবস্থা সেখান থেকে মূলধন নিতে পারছিল না এবং বড় হতে পারছিল না।”

“আমরা যদি পৃথিবীর উন্নয়ন ইতিহাস ব্যাখ্যা করি তাহলে দেখা যাবে আমেরিকা, ইউকে, রাশিয়া, জাপান শুরু হয়েছিল বড় মাপের ইন্ডাস্ট্রি দিয়ে। সেখানে কিন্তু স্মল মিডিয়াম প্রতিষ্ঠানগুলোর কন্ট্রিবিউশন কম। একমাত্র চায়না স্মল মিডিয়াম ইন্ডাস্ট্রিজ দিয়ে বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষমতার মালিক হয়েছে।”

“তাদের দেশ যেহেতু জনবহুল তারা এভাবেই সফলতা লাভ করেছে। আমাদের দেশও  যেহেতু জনবহুল আমাদেরও স্মল এন্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ এর মাধ্যমেই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে এবং এমপ্লয়মেন্ট জেনারেট করতে হবে,” বলেন বিএসইসির প্রধান।

তিনি বলেন, “আজকে ডিএসই যে দুটি সেবা নিয়ে সামনে এসেছে। এ দুটি সেবা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভি নেক্সট নামে যে সেবাটি আজকে সবার সামনে তুলে ধরা হলো এর মাধ্যমে বাংলাদেশের কোম্পানিগুলো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অর্থ পাবে।”

“পাশাপাশি যে স্মল ক্যাপ বোর্ড আজকে সবার সামনে তুলে ধরা হলো এই বিনিয়োগকারীরা আবার এই স্মল ক্যাপ বোর্ড এর মাধ্যমে তাদের টাকা বের করে নিতে পারবে। এর ফলে আমাদের দেশে এই ছোট ছোট কোম্পানিতে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ এখন অনেক বেড়ে যাবে।

“আমার জানামতে আইসিটি মিনিস্ট্রির মাধ্যমে অলরেডি প্রায় ৪০ টি প্রতিষ্ঠান অর্থায়ন পেয়েছে আরো অনেক প্রতিষ্ঠান পাইপলাইনে আছে।”

পুঁজিবাজরের গভীরতা বাড়বে

‘ছোট এবং মাঝারি কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আসলে বাজারের গভীরতা বাড়বে’ উল্লেখ করে খায়রুল হোসেন বলেন, “আজকেরে এই কর্মকাণ্ডের এই কোম্পানি গুলো বাজারে আসতে শুরু করবে। একটি কোম্পানিকে আমরা এই অক্টোবর মাসেই অনুমতি দেবো।”

“আরও ১৯টি কম্পানির জন্য আজকে চুক্তি বিনিময় হয়েছে। সেগুলো ধীরে ধীরে বাজারে আসবে।এর ফলে বাংলাদেশের ক্যাপিটাল মার্কেট এর গভীরতা অনেক বেড়ে যাবে। ক্যাপিটাল মার্কেটের কনট্রিবিউশন টু জিডিপি বেড়ে যাবে।”

“পুঁজিবাজারের যে সকল অংশীদার-ডিলার এখন যে কষ্টে আছেন। লেনদেন কম হওয়ার কারণে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবস্থাপনায় যে সমস্যা হচ্ছে। সেই সমস্যাও আস্তে আস্তে কেটে যাবে,” নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রধান।