সপ্তাহের প্রথম দিন রোববার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একমাত্র মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের শেয়ার দর প্রায় ২৪ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহের শেষ দিন বেড়েছিল ২৭ টাকা। দুই কার্যদিবসে বেড়েছে ৫১ টাকা।
রোববার সকালে লেনদেন শুরুর পর থেকেই জিপির শেয়ার কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন বিনিয়োগকারীরা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধনের ১২ শতাংশের বেশি ধারণ করা এই শেয়ারের দর প্রায় ৭ দশমিক ২০ শতাংশ বেড়েছে।
আর এর ওপর ভর করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। রোববার ঢাকায় প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৬৫ পয়েন্ট। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৮৫ পয়েন্ট।
গত বুধবার নিরীক্ষা আপত্তির টাকা নিয়ে দেশের দুই শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির বিরোধ আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসা করা হবে বলে ঘোষণা দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
গত বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইকেল ফোলির সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীর বলেন, যে মীমাংসা করা হবে তাতে দুই পক্ষই যেন ‘উইন উইন সিচুয়েশনে’ থাকে, তা নিশ্চিত করা হবে। সপ্তাহ তিনেকের মধ্যেই আলোচনার ফল পাওয়া যাবে।
“কয়েকদিন ধরে আলোচনা করছিলাম যে সমাধানে আসা উচিত। সমাধানটি হবে উইন উইন সিচুয়েশনে থেকে। আমরাও হারব না, তারাও হারবে না। আমরা আমাদের যেটুকু ন্যায্য দাবি হবে, সেটা আমরা আদায় করার চেষ্টা করব। তারাও আমাদেরটা মেনে নেবেন বিশ্বাস করি।
“আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, অন্য সব পথ বাদ দিয়ে আমরা আলোচনার টেবিলে বসব, আমরা সমঝোতায় আসব।”
বিটিআরসির দাবি, গ্রামীণফোনের কাছে নিরীক্ষা আপত্তির দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে তাদের।
নিরীক্ষা আপত্তির বড় অংকের এই টাকা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বিটিআরসির সঙ্গে জিপির বিরোধ চলছিল।
এর বড় প্রভাব পরে গ্রামীণফোনের শেয়ারে। ২০১৯ সালে ১ এপ্রিল এই শেয়ারটির দর ছিল ৪১৭ টাকা।
বিরোধের খবরে তা কমতে কমতে নেমে এসেছিল ২৮৯ টাকায়।
সমোঝতার খবরে বৃহস্পতিবার ২৭ টাকা দাম বেড়েছিল জিপির। রোববার আরো এক ধাপ বেড়ে দাম হয়েছে ৩৬০ টাকা।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গ্রামীণফোনের বাজার মূলধন ডিএসইর মোট বাজার মূলধনের প্রায় ১২ শতাংশ।
বাজার বিশ্লেষক ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুঁজিবাজার তার নিজের গতিতেই ঘুরে দাঁড়াবে। জিপিকে কেন্দ্র করে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাজারে। আশা করছি এ ধারা অব্যহত থাকবে।”
বাজার পরিস্থিতি
রোববার ডিএসইএক্স ৬৪ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ৯২০ দশমিক ৯৭ পয়েন্টে।
সিএসইতে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৮৫ দশমিক ৪২ পয়েন্ট।
রোববার ঢাকায় ৩০৪ কোটি ৭২ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে। গ০ত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার এই বাজারে ৩৮৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
রোববার সিএসইতে ১৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।বৃহস্পতিবার লেনদেনের অংক ছিল ১৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৫১টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৮৫ টির, কমেছে ১০৬টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৬০টির দর।
ডিএসইএক্স বা প্রধান সূচক দশমিক ৬৪ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৯২০ দশমিক ৯৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ২৬ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে এক হাজার ১৫০ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ সূচক ৩০ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৭৬৬ পয়েন্টে।
সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৮৫ দশমিক ৪২ পয়েন্ট; সূচক হয়েছে ১৪ হাজার ৯৪৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নিয়েছে ২৩২টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১২২টির, কমেছে ৭৪ টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬ টির দর।