বিক্ষোভের খবর প্রকাশ হলে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়: ডিএসই

পুঁজিবাজার নিয়ে বিক্ষোভ দেশ-বিদেশে বাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে বলে মনে করছে বাংলাদেশের প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসই।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 August 2019, 01:49 PM
Updated : 6 August 2019, 01:49 PM

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ডিএসই জানিয়েছে, বিগত কিছুদিন যাবত্ বাজারে কিছুটা সংশোধনের ধারা অব্যাহত থাকায় স্বল্প সংখ্যক বিনিয়োগকারী ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে ব্যানার, ফেস্টুন এবং প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধন করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে আসছেন।

“এ বিক্ষোভের ফলে দেশ ও বিদেশে আমাদের পুঁজিবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে৷ পুঁজিবাজারের ধর্মই হলো উত্থান ও পতন৷”

“পুঁজিবাজারের ব্যাপ্তি বেড়েছে৷ যে কেউ ইচ্ছে করলেই এ বাজারকে প্রভাবিত করতে পারবে সে ধারনাও সঠিক নয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের স্টক এক্সচেঞ্জে এর চেয়েও বেশী উত্থান-পতন হয়৷ সেখানে কখনো ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধন অথবা বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয় না।”

‘বর্তমানে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিশ্বের উন্নত স্টক এক্সচেঞ্জের সাথে তাল মিলিয়ে চলার সক্ষমতা অর্জন করেছে’ উল্লেখ বিবৃতিতে বলা হয়, “এই উদীয়মান পুঁজিবাজারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হোক তা আমাদের কাম্য নয়।”

“এ ধরনের বিক্ষোভের ফলে নতুন বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে আসার উত্সাহ হারিয়ে ফেলে এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগে অনুত্সাহিত হয়।”

কিছুদিন আগে বাজারে টানা দরপতনে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫০০০ পয়েন্টের নীচে নেমে যায়। যা ছিল আড়াই বছরের মধ্যে কম।

লেনদেনও ৩০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছিল।

তবে গত কয়েক দিনে সূচক কিছুটা বেড়ে ৫০০০ পয়েন্টের উপরে অবস্থান করছে।

মঙ্গলবার ডিএসইএক্স ২৬ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৮৭ দশমিক ২৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। লেনদেনও বেড়ে ৫৬৯ কোটি টাকায় উঠেছে।

‘পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন দীর্ঘমেয়াদে একটি গতিশীল পুঁজিবাজার গড়ে তুলতে ব্যাপক সংস্কারমূলক কাজসহ প্রয়োজনীয় আইন-কানুন প্রণয়ন করে যাচ্ছে’ উল্লেখ করে ডিএসইর বিবৃতিতে বলা হয়, “একই সাথে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জও সব ধরনের প্রযুক্তিগত উন্নয়নসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছে৷ আর সবই করা হচ্ছে পুঁজিবাজার তথা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে৷”

“প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলে থাকেন ‘পুঁজিবাজারের মাধ্যমেই দেশের শিল্পায়ন ও নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা সম্ভব৷ একই সাথে শিল্পায়নের মাধ্যমে অধিকহারে কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হয়।’ তাই বিনিয়োগকারীদের অত্যন্ত ধৈ‍র্য সহকারে দেশের উদীয়মান পুঁজিবাজারকে কাজে লাগিয়ে নিজের এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে কোনরূপ অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করে একযোগে কাজ করার জন্য সকলের কাছে আহবান জানানো হচ্ছে।”

“একই সাথে ডিএসই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অনুরোধ জানাচ্ছে পুঁজিবাজারের মতো স্পর্শকাতর অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখার জন্য।”

বিবৃতিতে বলা হয়, পুঁজিবাজারে গণমাধ্যমের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ বিগত দিনে দেশের গণমাধ্যম পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিকাশে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে। গণমাধ্যমই পারে সঠিক এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সচেতন করতে৷

“কিন্ত সাম্প্রতিক সময়ে কিছু গণমাধ্যমে ‘বাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা মূলধন উধাও ও পাচার‘ এধরনের সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে। যা প্রকৃত অর্থে সঠিক নয়৷ বাজারের সিকিউরিটিজের মূল্য উঠা-নামার সাথে বাজার মূলধন বাড়ে বা কমে৷ বাজার মূলধন কমা-বাড়ার সাথে টাকা উধাও বা পাচার হওয়ার কোন সম্পর্ক নেই৷”

এ ধরনের নেতিবাচক প্রচারে পুঁজিবাজার সম্পর্কে দেশ-বিদেশে এক ধরনের বিরূপ প্রভাব পড়ে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

“তাই পুঁজিবাজার ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে ডিএসই গণমাধ্যমের প্রতি আহবান জানাচ্ছে, এধরনের সংবাদ পরিবেশন করে বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত না করতে৷ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ আশা করে পুঁজিবাজার তথা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে গণমাধ্যম বিগত দিনের মতো সঠিক এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সকলকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে৷”