সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৯১ পয়েন্টে নেমে এসেছে, যা আড়াই বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।
এর আগে এর চেয়ে বাজে অবস্থা হয়েছিল ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি। সেদিন সূচক ৫ হাজার ৮৩ পয়েন্টে নেমে গিয়েছিল।
ঢাকার বাজারে সোমবার গ্রামীণফোনের শেয়ারের দাম কমেছে ২০ টাকা ২০ পয়সা বা ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। দিনের লেনদেন শুরু হয়েছিল ৩৪৪ টাকা ৭০ পয়সায়; শেষ হয়েছে ৩২৪ টাকা ৫০ পয়সায়।
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রামীণফোনের শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ শতাংশের বেশি কমায় সোমবার এ শেয়ারের দর কমেছে বলে জানান ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভী।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, গত কিছুদিন ধরেই জিপির দর কমছে। মুনফা কমার খবরে সোমবার আরও বেশি কমেছে।
শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হাসান বলেন, “বাজারে তারল্য সঙ্কট তো আছেই, সাথে গ্রামীণফোনের শেয়ার দর আজকে অনেক কমে গেছে। এর অনেক বড় প্রভাব পড়েছে বাজারে। আর পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ানোর মত কোনো খবর নেই যে বাড়বে।”
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্রামীণফোনের শেয়ারের দাম ছিল ৫১০ টাকা, যা এই শেয়ারটির সর্বোচ্চ মূল্য।
এরপর তা কমতে কমতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৪১০ টাকায় নেমে আসে। গত কয়েক মাসে তা আরও কমে এখন ৩২৪ টাকায় নেমে এসেছে।
দেশের সবচেয়ে বড় এই মোবাইল ফোন অপারেটরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের এপ্রিল-জুন সময়ে গ্রামীণফোনের শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৭ টাকা ৭ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ৭ টাকা ৭০ পয়সা।
তবে হিসাব বছরের প্রথম ছয় মাসে গ্রামীণফোনের ইপিএস বেড়েছে। ২০১৯ সালের জানুয়ারি-জুন সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ৩৭ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ১২ টাকা ১০ পয়সা ছিল।
মতিঝিলে বিক্ষোভ
এদিকে টানা দরপতনের প্রতিবাদে মতিঝিলে ডিএসই ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছে ছোট বিনিয়োগকারীরা।
এ সময় তারা পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেনের পদত্যাগ দাবি করেন।
বাজার পরিস্থিতি
সোমবার ডিএসইতে ৩০৬ কোটি ০৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। রোববারের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৪৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৫২টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৭টির, কমেছে ৩০৩টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১২টি কোম্পানির শেয়ার দর।
দিন শেষে ঢাকার প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৮৮ দশমিক ০১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৯১ দশমিক ৪৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক সিএএসপিআই আগের দিনের চেয়ে ১.৬৪ শতাংশ কমে ১৫৬১৯ পয়েন্ট হয়েছে।
এ বাজারে ১৪ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের তুলনায় ২ কোটি ৭২ লাখ টাকা বেশি।
লেনদেন হয়েছে ২৭টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪০টির, কমেছে ২২০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টির।