৩০ জুন রোববার ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়েছে। ১৩ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল পুঁজিবাজারের জন্য কিছু ইতিবাচক প্রস্তাব করে এই বাজেট উপস্থাপন করেছিলেন।
সে সব প্রস্তাবের সঙ্গে আরও কিছু যোগ করে বাজেট পাস হয়েছে। বাজেট পেশের পরও বাজারে দরপতন হয়েছিল। পাসের পরও দরপতন দিয়ে শুরু হল নতুন অর্থবছর।
বাজেট পাসের পরের দিন ১ জুলাই সোমবার ব্যাংক হলিডের কারণে পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ ছিল।
মঙ্গলবার নতুন অর্থবছরের প্রথম লেনদেন দিবসে প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৬ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট।
অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১২২ দশমিক ২১ পয়েন্ট।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, আস্থার অভাবেই বাজারে দরপতন হচ্ছে। যতো ভালো পদক্ষেপই নেয়া হোক না কেনো আস্থা ফিরিয়ে না আনলে বাজার স্বাভাবিক হবে না।
প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় কোম্পানিগুলোকে ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিতে উৎসাহিত করতে স্টক ডিভিডেন্ডের ওপর ১৫ শতাংশ হারে কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছিল।
বিনিয়োগকারীদের দাবির কারণে সেই প্রস্তাব সংশোধন করে স্টক ডিভিডেন্ডের সঙ্গে সমান হারে নগদ লভ্যাংশও দেওয়ার বিধান রেখে বাজেট পাস হয়।
অর্থাৎ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি যে পরিমাণ স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করবে, কমপক্ষে তার সমপরিমাণ নগদ লভ্যাংশ দিতে হবে। যদি কোম্পানির ঘোষিত স্টক লভ্যাংশের পরিমাণ নগদ লভ্যাংশের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে স্টক লভ্যাংশে উপর ১০ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে।
এছাড়া নতুন বাজেটে করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ এ হাফিজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বেলেন,“পুঁজিবাজারকে ভাল করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনেক চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু বাজার ভাল হচ্ছে না; তার একটা প্রধান কারন বিনিয়োগকারীদের আস্থার অভাব আছে বাজারে।”
“আস্থার অভাবের পাশাপাশি তারল্য সংকট, গুড গভর্নেন্স এর অভাব। বাজারে ভাল কোম্পানি কম। এ ছাড়া সব বিনিয়োগকারীর টাকা আটকে গেছে। শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় শেয়ার বিক্রি করতে পারছে না। সে কারণে আবার শেয়ার কিনতে পারছে না।”
বাজার পরিস্থিতি
মঙ্গলবার ডিএসইএক্স বা প্রধান সূচক ৩৬ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩৮৪ দশমিক ৯২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৯ দশমিক ৫২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ২৩৫ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ সূচক ১৬ দশমিক ৫১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯১২ পয়েন্টে।
মঙ্গলবার ঢাকায় ৪৮২ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে। রোববার এই বাজারে ৪৬৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
মঙ্গলবার সিএসইতে ৫৪ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। রোববার লেনদেনের অংক ছিল ১১২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৫৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৩টির, কমেছে ১৭৪টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬টির দর।
অপরদিকে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১২২ দশমিক ২১ পয়েন্ট; সূচক হয়েছে ১৬ হাজার ৫১২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নিয়েছে ২৬৪টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৫টির, কমেছে ১২৬টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩টির দর।