মুদ্রানীতি ঘোষণার পর সূচক পড়ছেই

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে। সপ্তাহের প্রথম দিন রোববার মূল্যসূচক কমেছে দুই বাজারেই।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Feb 2019, 12:01 PM
Updated : 3 Feb 2019, 12:02 PM

৩০ জানুয়ারি নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণার দিনসহ টানা তিনদিন সূচক কমল বাজারে।

রোববার প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৯ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৮০১ দশমিক ৩৩ পয়েন্টে।

অন্য দিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১০৯ দশমিক ০২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৭ হাজার ৭৮১ দশমিক ৯০ পয়েন্টে।

বাজার বিশ্লেষণ করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“ডিএসইর প্রধান সূচক ৫ হাজার ২৫০ থেকে বেড়ে ৫ হাজার ৯৫০ পয়েন্টে উঠেছিল, এখন তো একটু কমবেই। বাড়ার পর কমে যেটা থাকবে সেটাই টিকবে।”

২০১৮ সালের ১৭ ডিসেম্বরের থেকে ২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি পর‌্যন্ত ২৬ কার‌্যদিবসে ৭৩২ পয়েন্ট বেড়েছিল ডিএসইএক্স। সিএসইতেও ছিল এই রনের তেজিভাব।

কিন্তু মুদ্রানীতি ঘোষণাকে ঘিরে বাজারে ধীরগতি লক্ষ্য করা যায়। ঘোষণার পর থেকে বাজারে সূচক কমছেই।

যদিও বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের দ্বিতিয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) ঘোষিত মুদ্রানীতি প্রথমার্ধের মুদ্রানীতির মতোই। বাজারে কোন নেতিবাচক প্রভাব পরার কথা নয়।

বাজার বিশ্লেষক ডিএসইর সদস্যদের সংগঠন ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নতুন মুদ্রানীতি নিয়ে সব সময়ই পুঁজিবাজারে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করে। এবারও তাই হয়েছে; সে কারণেই শেয়ার বিক্রির চাপে মূল্যসূচক কমেছে।

“মুদ্রাবাজার নিয়ে হচ্ছে মুদ্রানীতি। আসলে মুদ্রানীতির একদম সরাসরি কোনো প্রভাব পুঁজিবাজারে থাকে না। কিন্তু তারপরও দেখা যায়, যখন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয় তখন পুঁজিবাজারটা কিছুটা সেইকি থাকে বা বলা যায় পুঁজিবাজারে কিছুটা আতঙ্ক বিরাজ করে। শেয়ারের দাম কিছুটা কমে যায়।”

“বিনিয়োগকারীরা মনে করে নেতিবাচক কিছু পুঁজিবাজারের জন্য মুদ্রানীতিতে চলে আসে কিনা। সে কারণেই আতঙ্কে থাকেন তারা।”

‘তবে বুধবার নতুন যে মুদ্রানীতি ঘোষিত হয়েছে সেটা আগের মুদ্রানীতি থেকে তেমন কোন পার্থক্য দেখা যাচ্ছে না। শুধু একটা জায়গা ছাড়া সেটা হচ্ছে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ খুবই সামান্য কমিয়ে ধরা হয়েছে। সেটাতে পুঁজিবাজারে কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কথা নয়।”

বাজার পরিস্থিতি

রোববার ডিএসইতে প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৯৮৪ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবারের চেয়ে ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা কম।

বৃহস্পতিাবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৯ ৯২ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার।

লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৪৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩৩টির, কমেছে ১৮৬টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টি কোম্পানির শেয়ার দর।

ডিএসইএক্স বা প্রধান মূল্য সূচক ১৯ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৮০১ দশমিক ৩৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক দশমিক ৭৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ৩১১ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ ৪ দশমিক ১২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ৩ পয়েন্টে।

অন্যদিকে সিএসইতে ৩৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বেশি।

লেনদেন হয়েছে ২৭৪টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৯৯ টির, কমেছে ১৬৬ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৯টির দর।