সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার সূচক এবং লেনদেন কিছুটা কমলেও চাঙ্গাভাব অব্যাহত ছিল সপ্তাহজুড়ে।বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরেছে বাজারে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১০ সালের ধসের পর যারা বাজার থেকে চলে গিয়েছিলেন তারা আবার ফিরে আসছেন। সবমিলিয়ে বাজারে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। আগামীতে বাজার আরও ভালো হবে।
তার আগের সপ্তাহে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের পর তিন দিন লেনদেন হয় বাজারে। ঐ তিন দিনে ডিএসইএক্স সূচকে যোগ হয়েছিল ২০৫ পয়েন্ট।
সবমিলিয়ে ভোটের পর আট কার্যদিবসে ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪১২ পয়েন্ট।
তবে বৃহস্পতিবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১ দশমিক ২৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৭৯৭ দশমিক ৩০ পয়েন্টে।
এই সূচক গত সাড়ে আট মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে এর চেয়ে বেশি সূচক ছিল ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল সেদিন সূচক ছিল ৫ হাজার ৮১৩ দশমিক ৮০ পয়েন্ট।
ভোটের আগে ১৭ ডিসেম্বর থেকে পুঁজিবাজারে সূচক অল্প অল্প বাড়তে শুরু করে। ভোটের পর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সূচক।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ)সভাপতি শাকিল রিজভী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ফের ক্ষমতায় আসায় বাজারে চাঙ্গাভাব দেখা দিয়েছে। শেখ হাসিনা টানা তৃতীয় বার এবং মোট চার বার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। সুন্দর একটা মন্ত্রিসভা নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
“সবাই খুশি। চার দিকে আশার আলো। দেশের আরও উন্নয়ন হবে। পদ্মা সেতুসহ যে সব বড় বড় প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে সেগুলো শেষ হবে।
“এ সব কারণেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে এসেছে। এ আস্থা উন্নয়নের প্রতি; শেখ হাসিনার প্রতি।”
ডিএসইর সাবেক সভাপতি রকিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভোটের পর সবার মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে যে, বাজার ভালো হবে। নতুন সরকার বাজারের দিকে নজর দেবেন। শিল্প স্থাপনের জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ না নিয়ে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।
“এ সব কারণে ২০১০ সালের ধসের পর যে সব বিনিয়োগকারী বাজার থেকে চলে গিয়েছিল তারা আবার ফিরে আসছে। একইসঙ্গে নতুন বিনিয়োগকারীরাও বাজারে ঢুকছে। তাই শেয়ার ক্রয় বেড়ে গেছে এবং সূচক বাড়ছে।”
এ পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের গুজবে কান না দিয়ে দেখেশুনে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়ে রকিবুর রহমান বলেন, “বাজারে এখন প্রচুর ভালো শেয়ার প্রয়োজন। এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।”
অন্যদিকে বাজারে যাতে কোন মহল কোন ধরনের কারসাজি করার সুযোগ না পায় সে ব্যাপারেও সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ডিএসইর সাবেক সভাপতি রকিবুর রহমান।
বৃহস্পতিবারের বাজার পরিস্থতি
অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৭ দশমিক ০৬ পয়েন্ট।
বৃহস্পতিবার ডিএসইতে ৮৯৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বুধবারের চেয়ে লেনদেন কমেছে ১২৮ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৪৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৮টির, কমেছে ১৭৩টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৫টির দর।
ডিএসইএক্স ১ দশমিক ২৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭৯৭ দশমিক ৩১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ২ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে এক হাজার ৩১৮ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ দশমিক ৬২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ১১ পয়েন্টে।
অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ৩৩ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ২৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা কম।
সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৭ দশমিক ০৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৭ হাজার ৭৬৫ দশমিক ৯৮ পয়েন্টে।
লেনদেন হয়েছে ২৬৪টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১০৭ টির, কমেছে ১৪০ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭টির দর।