ব্যবসা বিক্রির খবরে দাম বেড়েছে জিএসকের শেয়ারের

ইউনিলিভারের কাছে ব্যবসা বিক্রির খবরে ঢাকার পুঁজিবাজারে গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে) বাংলাদেশের শেয়ারের দামে উল্লম্ফন ঘটেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Dec 2018, 06:06 AM
Updated : 4 Dec 2018, 06:24 AM

মঙ্গলবার মাঝবেলায় এক পর্যায়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে জিএসকের শেয়ারের দাম আগের দিনের চেয়ে ৬.২৫ শতাংশ বেড়ে ১৪২৫ টাকা হয়, যা গত ৮ জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ।   

পাঁচ মাস আগে জিএসকে বাংলাদেশ থেকে তাদের ওষুধের ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর পুঁজিবাজারে এ কোম্পানির শেয়ার বাজে অবস্থায় পড়েছিল।

গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন জানিয়েছে, বাংলাদেশে তাদের ৯৮ লাখ ৭৫ হাজার ১৪৪টি শেয়ার তারা ইউনিলিভারের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে।     

আর ইউনিলিভার জানিয়েছে, বাংলাদেশে গ্লাক্সোস্মিথক্লাইনের কনজিউমার হেলথকেয়ার ইউনিটের ব্যবসার ৮২ শতাংশ নগদ ১৬০ কোটি টাকায় কিনে নিচ্ছে তারা।

পাশাপাশি ভারতের বাজারে জিএসকের কনজিউমার হেলথকেয়ারের পুরো ব্যবসা ইউনিলিভার কিনে নিচ্ছে ৩৮ কোটি ডলারে (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা)।

এর ফলে ভারত ও বাংলাদেশে হরলিকস, মালটোভার মত জনপ্রিয় হেলথ ড্রিংক, গ্ল্যাক্সোজ-ডি, সেনসোডাইনের মত পণ্যের ব্যবসা চলে যাচ্ছে ইউনিলিভারের হাতে।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মালিকানা হাত বদলের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে একটি প্রতিযোগিতামূলক নিলামের মাধ্যমে। বিশ্বখ্যাত তিন কোম্পানি নেসলে, ইউনিলিভার এবং কোকা-কোলা ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি জিএসকের কনজিউমার হেলথকেয়ার ব্যবসা কিনে নিতে দরপ্রস্তাব দিয়েছিল।

তাদের মধ্যে ইউনিলিভারের সঙ্গেই চুক্তি করেছে জিএসকে। এই হাতবদলের মাধ্যমে এ অঞ্চলের ২০টি বাজারে হরলিকসসহ জিএসকের কনজিউমার হেলথকেয়ারের বিভিন্ন পণ্য বিক্রির পূর্ণ স্বত্ত্বও ইউনিলিভার পেয়েছে। 

বাংলাদেশে জিএসকের ব্যবসার ৭০ শতাংশ ছিল কনজিউমার হেলথকেয়ার ইউনিটের, বাকি ৩০ শতাংশ ফার্মাসিউটিক্যালসের। কিন্তু লাভের প্রায় পুরোটাই আসত কনজিউমার হেলথকেয়ারের পণ্য বিক্রি করে।

এ কারণে ৪৪ বছর ধরে বাংলাদেশে ব্যবসা চালিয়ে আসা এ কোম্পানি গত জুলাই মাসে চট্টগ্রামে তাদের ওষুধ উৎপাদন কারখানা এবং ফার্মাসিউটিক্যাল বিজনেস ইউনিটের সব কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত জানায়।

১৯৭৪ সাল থেকে বাংলাদেশে কারখানা চালিয়ে আসা এ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ বৃহস্পতিবার এক বৈঠকের পর তাদের ফার্মাসিউটিক্যাল বিজনেস ইউনিটের উৎপাদন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত জানায়।

ওষুধ খাতের কোম্পানি হিসেবে ১৯৭৬ সালের বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন বাংলাদেশ লিমিটেড।

জিএসকে বাংলাদেশ লিমিটেডের মোট শেয়ারের ৮১.৯৮ শতাংশ ছিল পুঁজিবাজারে। বাকি ১৫.৯৮ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ১.২৪ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগকারী ও ১.২১ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে ছিল।

মালিকানার হাতবদলে জিএসকে বাংলাদেশের ১ কোটি ২০ লাখ ৪৬ হাজার ৪৪৯টি শেয়ারের মধ্যে ৯৮ লাখ ৭৫ হাজার ১৪৪টি শেয়ার ইউনিলিভারের হাতে যাচ্ছে।

হিন্দুস্তান ইউনিলিভারের ফিন্যান্স বিভাগের প্রধান শ্রীনিবাস পাঠক আশা করছেন, ব্যবসা হাতবদল হওয়ায় হরলিকসের বিক্রি ‘ডাবল ডিজিট’ হারে বাড়বে বলে তারা আশা করছেন।