দরপতন ‘সাময়িক’ বলছেন বিশ্লেষকরা

গেল তিন কার্যদিবস ধরে দেশের দুই পুঁজিবাজারে যে দরপতনের ধারা চলছে, তার পেছনে সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া না গেলেও বাজার বিশ্লেষকরা একে সাময়িক বলছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2018, 03:22 PM
Updated : 24 Sept 2018, 03:22 PM

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা বিক্রির অর্থ চীনা কনসোর্টিয়ামের কাছ থেকে তালিকাভুক্ত ব্রোকারেজদের হাতে এসে গেলেই অস্থিরতার মেঘ কাটবে বলে মনে করছেন তারা।

ঢাকা ও চট্টগ্রাম- দেশের দুই পুঁজিবাজারে সাম্প্রতিক এই দরপতনের শুরুটা হয় গত সপ্তাহের শেষ কার‌্যদিবস বৃহস্পতিবার।

ওইদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছিল ৩৮ পয়েন্টের বেশি।

দুইদিন সাপ্তাহিক ছুটির পর রোববার চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ফের ৫২ পয়েন্ট কমে ডিএসইএক্স। আর সবশেষ সোমবার ডিএসইএক্স কমেছে প্রায় ৫৮ পয়েন্ট। তিন কার্যদিবস মিলিয়ে প্রায় ১৫০ পয়েন্ট পড়ে গেছে প্রধান সূচক।

আর ১৮ কার্যদিবসে প্রায় ৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ সূচক হারিয়েছে ডিএসই।

ঢাকার মত চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দরপতনের একই চিত্র দেখা গেছে।

তিন কার্যদিবসে চট্টগ্রামের সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে যথাক্রমে ৫০, প্রায় ১৮৫ এবং ২২২ পয়েন্ট।

এই দরপতনের কারণ সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট ধারণা দিতে পারেননি ডিএসইর সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পরিচালক রকিবুর রহমান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সার্বিক বিবেচনায় বাজার এখন ভালো হওয়ার কথা। কিন্তু কেন দরপতন হচ্ছে তা আমরা বুঝতে পারছি না।

“পুঁজিবাজার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ইতিবাচক বক্তব্য, চীনা কনসোর্টিয়ামের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে তিন বছরের জন্য বিনিয়োগ করলে ১০ শতাংশ কর ছাড়ের ঘোষণা, ইতিবাচক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আমরা ভেবেছিলাম বাজার ভালো হবে। কিন্তু হচ্ছে তার উল্টো।”

তবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যদের সংগঠন ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী মনে করেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিনিয়োগকারীদের বাড়তি সতর্কতা এবং চীনা কনসোর্টিয়ামের কাছ থেকে অর্থ ব্রোকারেজগুলোর কাছে না পৌঁছানোর কারণে পুঁজিবাজারে মন্দা চলছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সামনে নির্বাচন তাই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে বসে আছে, আবার বড় বিনিয়োগকারীরাও সাইড লাইনে।

“আমরা জানতাম ডিসেম্বরের আগে এমন হবে, তাই আমার কর ছাড় চেয়েছিলাম যেন চীন থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে বাজারে একটু সাপোর্ট দেওয়া যায়। কিন্তু সেই টাকা এখনো ছাড় হয়নি, এসআরও হওয়ার কথা ছিল, সেটাও হয়নি।”

চীনা কনসোর্টিয়ামের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ তালিকাভুক্ত ব্রোকারেজগুলোতে তিন বছরের জন্য বিনিয়োগ করলে ১০ শতাংশ কর ছাড় দেওয়ার ঘোষনা দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ এ হাফিজ বলেন, “আমি মনে করি এই পতন সাময়িক। ১০ শতাংশ কর ছাড়ের এসআরও হয়ে গেলে ব্রোকাররা টাকাগুলো পেয়ে যাবেন, পুঁজিবাজারও ভালো হয়ে যাবে।”

শেনচেন-সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের চীনা কনসোর্টিয়াম ২৫ শতাংশ শেয়ার কিনে ডিএসইর মালিকানার অংশীদার হয়েছে। এতে ডিএসই পেয়েছে ৯৪৭ কোটি টাকা।

এই অর্থের ওপর ‘ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স’ আরোপ না করার জন্য ডিএসই ও ডিবিএর নেতাদের অনুরোধ ছিল অর্থমন্ত্রীর প্রতি।