চীনা কনসোর্টিয়ামকে ডিএসইর শেয়ার বিক্রি করতে সোমবার চুক্তি

নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পাওয়ার পর চীনের দুটি স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়াম কৌশলগত অংশীদার হিসেবে পেতে চুক্তি করতে যাচ্ছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 May 2018, 12:58 PM
Updated : 12 May 2018, 12:58 PM

ডিএসই মুখপাত্র শফিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোমবার বিকালে হোটেল লো মেরিডিয়ানে চীনা কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে ডিএসইর চুক্তি হবে।

অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত থাকবেন।

চীনের দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে কৌশলগত অংশীদার করার মাধ্যমে দেশের প্রধান পুঁজিবাজারের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

গত ৩ মে চীনের শেনচেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জকে কৌশলগত অংশীদার করতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রস্তাব অনুমোদন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

চীনা এই কনসোর্টিয়াম ডিএসইর ‘ব্লকড অ্যাকাউন্টে’ থাকা ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ২৫ শতাংশ বা ৪৫,০৯,৪৪,১২৫টি শেয়ার ২১ টাকা দরে কিনবে; যার মূল্য নয়শ কোটি টাকার বেশি।

পাশাপাশি চীনা এই কনসোর্টিয়াম ডিএসইর কারিগরি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ৩০০ কোটিরও বেশি টাকা (৩৭ মিলিয়ন ডলার) খরচ করবে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করেছে তারা।

চীনের কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে পাওয়ায় ডিএসইর জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে বলে মনে করেন কোম্পানিটির সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “তাদের আর্থিক ও কারিগরি প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে ডিএসইর যেমন কাজে লাগবে তেমনি তাদের ব্রান্ড ডিএসইকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।”

চীনের প্রধান তিনটি স্টক এক্সচেঞ্জের মধ্যে সাংহাই ও শেনচেন রয়েছে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে। বাজার মূলধনের দিক থেকে বিশ্বের সেরা ১০টি স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকায়ও রয়েছে এই দুই পুঁজিবাজার।

সাংহাই স্টক একচেঞ্জের বাজার মূলধন সাড়ে তিন ট্রিলিয়ন ডলার আর শেনচেন স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধন দুই দশমিক দুই ট্রিলিয়ন ডলার।

অপরদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধন ৫১ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

শাকিল রিজভী বলেন, “পৃথিবীর বিভিন্নস্থানে শত বছরে পুরনো স্টক এক্সচেঞ্জ থাকলেও চীনের এ দুটি এক্সচেঞ্জ অপেক্ষাকৃত নতুন। কিন্তু এদের প্রবৃদ্ধির ধারা ব্যাপক। তাই তারা যখন কোনো বাজারের অংশীদার হবে তখন সেই বাজারেরও প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকবে।

চীনের কনসোর্টিয়াম কাজ শুরুর পর ডিএসইতে বিদেশি বিনিয়োগকারী, দৈনিক লেনদেন বাড়বে এবং পণ্যের বহুমূখীকরণ হবে বলে মনে করেন শাকিল রিজভী।

কৌশলগত অংশীদার পেতে গত বছরের শেষ দিকে ডিএসই আহ্বানে দুটি কনসোর্টিয়াম দরপত্র জমা দেয়। এদের মধ্যে ছিল চীনের শেনচেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়াম এবং ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ, ফ্রন্ট্রিয়ার বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের নাসডাক-এর কনসোর্টিয়াম।

দুটি কনসোর্টিয়ামের প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে ১০ ফেব্রুয়ারি চীনের কনসোর্টিয়ামকে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয় ডিএসই। এরপর চীনের কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে পেতে গত ২২ ফেব্রুয়ারি নিয়ন্ত্রক সংস্থায় আবেদন করে ডিএসই। কিন্তু ১৯ মার্চ প্রস্তাব অনুমোদন না দিয়ে কিছু শর্তসাপেক্ষে তা সংশোধন করতে বলে বিএসইসি।

এরপর ৩০ এপ্রিল কোম্পানির সাধারণ সভায় সংশোধিত প্রস্তাবে সায় দেয় ডিএসইর শেয়ার হোল্ডাররা। ডিএসইর এ সিদ্ধান্তের পর ৩ মে অনুমোদন দেয় বিএসইসি।