মিথ্যা ঘোষণায় আইপিও নয়: বিএসইসি চেয়ারম্যান

আর্থিক প্রতিবেদন ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) না আনতে ম্যার্চেন্ট ব্যাংকারদের পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 April 2018, 12:23 PM
Updated : 28 April 2018, 12:23 PM

শনিবার বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) নতুন কার‌্যালয় উদ্বোধন উপলক্ষে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিএমবিএর নতুন লোগো এবং ওয়েবসাইটও উদ্বোধন করা হয় ।

খায়রুল হোসেন বলেন, “মার্চেন্ট ব্যাংকের ভূমিকা অত্যন্ত সুদৃঢ় যদি না থাকে এবং যথাযথ না থাকে মার্কেটের স্থিতিশীলতা আমরা কিছুতেই নিশ্চিত করতে পারব না। বিনিয়োগকারীর সুরক্ষার ক্ষেত্রে সব থেকে বড় ভূমিকা রয়েছে মার্চেন্ট ব্যাংকের। কারণ উদ্যোক্তার সঙ্গে, স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে, রেগুলেটরের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কাজটি এই মার্চেন্ট ব্যাংক করে।

“তারা যদি অনৈতিক পন্থায় উদ্যোক্তাদের সহায়তা করেন এবং ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে মিথ্যা ডিসক্লোজার (ঘোষণা) দিয়ে আইপিও আনার চেষ্টা করেন, তাহলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সুনাম যাবে, ব্রোকার-ডিলারসহ যারা বিডিং করছেন তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আর সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বিনিয়োগকারীরা। যারা এই ইনফরমেশনের ওপর ভিত্তি করে বাজারে এসেছেন, এই একটা নির্দিষ্ট স্ক্রিপ্টের ওপর ভরসা রেখেছেন তারা প্রতারিত হবেন।”

পুঁজিবাজারকে অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আজকে সরকার প্রধান, অর্থমন্ত্রী থেকে সকলে আমাদের বোঝাতে চেয়েছেন পুঁজিবাজার আমাদের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। এই পুঁজিবাজারের মাধ্যমে একদিকে যেমন দীর্ঘ মেয়াদি অর্থায়ন হবে, বিভিন্ন ধরনের শিল্প, অবকাঠামো এবং সেবা খাতকে আমরা এগিয়ে নিতে পারব, তেমনিভাবে পুঁজিবাজার আগামীতে দেশের জিডিপিতে ক্রমবর্ধমান হারে অবদান রেখে কর্মসংস্থানে বিরাট ভূমিকা রাখবে।”

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারীর বিষয়ে তিনি বলেন, “যদি সব প্রক্রিয়া সুন্দরভাবে এগিয়ে যায় তাহলে কৌশলগত বিনিরয়োগকারীর মাধ্যমে বাজারের গভীরতা বেড়ে যাবে।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, “বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার অন্যতম উপায় হলে নতুন নতুন প্রডাক্ট আনা। আজকে যদি আমরা বন্ড মার্কেট অনেক শক্তিশালী করতে পারি এবং ইটিএফ ও ডেরিভেটিভ মার্কেট শুরু করতে পারি এবং সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রডাক্ট সম্পর্কে ও প্রডাক্টের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করতে পারি, তাহলে আগামী দিনে পুঁজিবাজার দ্রুত গতিতে বিকশিত হবে। আজকে আমাদের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের প্রাধান্য পেনশন ফান্ড, প্রভিডেন্ট ফান্ড, বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ফান্ডগুলো এখানে আসে না।”

‘মার্কেট মেকারদের’ বাজারমুখী করার উদ্যোগ নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “মার্কেন্ট মেকার যাতে প্রকৃতপক্ষেই কাজ করতে পারে, সেজন্য তাদের আমরা যেসব ইনসেনটিভ ঘোষণা করেছি, তার থেকেও বেশি মাত্রায় ইনসেনটিভ তাদেরকে আমরা দিয়ে বাজারমুখী করার উদ্যোগ গ্রহণ করব। আমরা সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলছি।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএমবিএর সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী, সিনিয়র সহ-সভাপতি আহসান উল্লাহ, ডিএসইর সাবেক সভাপতি ও পরিচালক শাকিল রিজভী, ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী, ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান সভাপতি মুস্তাক আহমেদ সাদেক প্রমুখ।