‘ব্যাংকগুলোকে ছাড় পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক’

ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট নিরসনে সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার নেওয়া দুটি পদক্ষেপে পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক ভবিষ্যত দেখছেন সংশ্লিষ্ঠরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 April 2018, 01:27 PM
Updated : 2 April 2018, 02:07 PM

দেশের দুই পুঁজিবাজারে টানা ধসের মধ্যে কয়েকদিনে ব্যাংক মালিক ও শীর্ষ নির্বাহীদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকের পর রোববার দুটি ঘোষণা দেন অর্থমমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

অর্থমন্ত্রী জানান, বর্তমানের থেকে দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থাৎ সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে জমা রাখা হবে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নগদ জমা রাখার (সিআরআর) এক শতাংশ পয়েন্ট কমিয়ে সাড়ে পাঁচ শতাংশ করা হবে।

এর ফলে পতনের ধারায় থাকা পুঁজিবাজার হঠাৎ করেই ঘুড়ে দাঁড়িয়েছে।

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ডিএসইএক্স দুই দশমিক ৬৭ শতাংশ বা প্রায় ১৫০ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৭৪৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালের ২৫ মে ডিএসইএক্স বেড়েছিল দুই দশমিক ৯১ শতাংশ। 

টানা দরপতনে থাকা ডিএসইর সূচক বৃহস্পতিবার থেকে বাড়তে শুরু করে। গত দুই দিনে ডিএসইএক্স ২৫৯ পয়েন্ট বা চার দশমিক ৭১ শতাংশ বেড়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ডিএসইর সাবেক সভাপতি আহসানুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুঁজিবাজারের জন্য গত নয় বছরে এর চেয়ে কার্যকর কোন ব্যবস্থা এই অর্থমন্ত্রী নেননি। পুঁজিবাজারে আরেকটা বিপর্যয়কে থামানো গেছে।”

এ পদক্ষেপের ফলে সামনের দিনগুলো পুঁজিবাজারের জন্য ভাল হবে বলে মনে করেন তিনি।

সিআরআর কমানোর জন্য দীর্ঘদিন থেকে ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে দাবি তোলা হচ্ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে ঋণ আমানত অনুপাত (এডিআর) কমানোর পর ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে।

তারল্য বাড়াতে উচ্চ সুদে আমানত নেওয়া শুরু করে ব্যাংকগুলো। এর ফলে ঋণে সুদের হার বাড়তে শুরু করে। পাশাপাশি পুঁজিবাজারের তারল্যেও ঘাটতি শুরু হয়।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণে এ দুটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

আর এ দুটি সিদ্ধান্তই পুঁজিবাজারের জন্য সুফল নিয়ে আসবে বলে মনে করছেন আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সরকারি আমানতের অর্ধেক বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে রাখা হলে তারল্য সংকট কেটে যাবে। এছাড়া সিআরআর এক শতাংশ কমানোর ফলেও পুঁজিবাজারে যে তারল্যের অভাব তা দুর হবে।”

রোববার সকাল থেকে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় লেনদেন শুরু হয় ঢাকার বাজারে। শুরু থেকে সিংহভাগ শেয়ারের দর বাড়তে শুরু করে। ক্রেতার চাপে বেশ কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারের বিক্রেতা উধাও হয়ে যায়।

ডিএসইতে এদিন লেনদেন হওয়া কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৮৭ শতাংশেল বেশি দর বেড়েছে।

লেনদেন হওয়া ২৩৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৯৮টির, কমেছে ২৫টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫টির দর।

ডিএসইতে দরবৃদ্ধির শীর্ষে রয়েছে- বিআইএফসি, দুলাময়া কটন, শাশা ডেনিম, প্রিমিয়ার লিজিং ও শ্যামপুর সুপার।

দর হারানোর শীর্ষে রয়েছে- নিটোল ইন্সুরেন্স, ভিএএমএলআরবিবিএফ, সিএপিএমআইবিবিএমএফ, ওয়াটা কেমিক্যাল ও তাকাফুল ইন্সুরেন্স।

লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে-লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, বেক্সিমকো, মুন্নু সিরামিক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংক।

সূচক বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশ ভূমিকা রেখেছে গ্রামীণ ফোন, আইসিবি ও স্কয়ার ফার্মা।

ডিএসইতে এদিন ৪৪১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে; যা আগের দিনের চেয়ে সোয়া ছয় শতাংশ কম।