দরপতন থামছে না পুঁজিবাজারে

দরপতন চলছেই দেশের দুই পুঁজিবাজারে; শেয়ারের মূল্য সূচকে ধারাবাহিক পতনের ধারা সপ্তম দিনে ঠেকেছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Feb 2018, 09:57 AM
Updated : 26 Feb 2018, 10:12 AM

সোমবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৭ পয়েন্ট বা প্রায় এক শতাংশ কমে ৫ হাজার ৭৭৪ দশমিক ৫৭ পয়েন্টে নেমেছে।

পতনের ধারায় সাত দিনে ডিএসইএক্স কমেছে ৩২৭ পয়েন্ট বা প্রায় সাড়ে পাঁচ শতাংশ কমে সাত মাস আগের জায়গায় চলে এসেছে। এর আগে ২০১৭ সালে ৯ জুলাই ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ৭৭৪ দশমিক ২৯ পয়েন্ট।   

ডিএসইতে লেনদেন আগের দিনের থেকে ৩৪ কোটি টাকা কমে হয়েছে ৩৫০ কোটি টাকা। হাতবদল হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দাম কমেছে; ৩৩৪টি মধ্যে দর কমেছে ২৪৯টির, বেড়েছে ৩৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৭টির দাম।

এদিকে সোমবার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৬৩ দশমিক ৭২ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৯৫ শতাংশ কমে ১৭ হাজার ৮৪৫ পয়েন্টে নেমেছে।

সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২২২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর কমেছে ১৬১টির, বেড়েছে ৩৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির দাম।

মাসখানেক ধরেই মুদ্রানীতি, ব্যাংকের ঋণ-আমানত অনুপাত (এডিআর) কমানো, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার রায় নিয়ে বাজারে অস্থিরতা চলছিল।

এরপর সম্প্রতি যোগ হয় ডিএসইর কৌশলগত অংশীদার নেওয়ার নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির সঙ্গে টানাপড়েন।

চীনের শেনচেন ও সাংহাই স্টক স্টক এক্সচেঞ্জের সমন্বয়ে গঠিত কনসোর্টিয়াম ডিএসইর অংশীদার হতে যাচ্ছে এমন খবরের মধ্যে ১১ ফেব্রুয়ারি ডিএসইএক্স বেড়ে দাঁড়ায় ১২৮ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ১৫ শতাংশ, যা ২১ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

এরপর চীনা কনসোর্টিয়ামের এই দরপ্রস্তাব নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির আপত্তিসহ এই প্রস্তাবের বিষয়ে খবর গণমাধ্যমে আসতে থাকার মধ্যে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে বড় দরপতন শুরু হয় ডিএসইতে।

বৃহস্পতিবার চীনের দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে কৌশলগত অংশীদার করার অনুমতি চেয়ে বিএসইসিতে আবেদন করেছে ডিএসই।

গত সপ্তাহে ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের তুলনায় ১৪৩ পয়েন্ট বা দুই দশমিক ৪০ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৯০৭ পয়েন্টে।

এরপর বড় দরপতন দিয়ে শুরু হয় সপ্তাহের প্রথম দিন। সোমবার দিনের শুরুতে সূচক সামান্য বেড়ে লেনদেনের ২৩ মিনিটের মাথায় প্রায় ৪৯ পয়েন্ট নেমে যায়। এরপরের আধাঘণ্টয় কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। ১১টা ২৬ মিনিট থেকে কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই সূচক টানা নামতে শুরু করে।

বেলা ১টা ৪০ মিনিটে ডিএসইএক্স প্রায় ৮০ পয়েন্ট হারিয়ে যায়। এরপর সামান্য ঘুড়ে ৫৭ পয়েন্ট নেতিবাচক হয়ে দিন শেষ করে। 

ডিএসইতে বড় মূলধনের শেয়ারগুলোর দরপতন সূচকে বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে।

বাজার পর্যালোচনাকারী একটি ওয়েবসাইটের হিসাবে, সবচেয়ে বড় বাজার মূলধনের কোম্পানি গ্রামীণফোনের শেয়ারদর এক দশমিক ২৯ শতাংশ কমায় সূচক কমেছে ১৪ পয়েন্টের বেশি; স্কয়ার ফার্মা ও আইসিবিও ভূমিকা রেখেছে।

এদিন ডিএসইতে লেনদেনে শীর্ষে রয়েছে- অলিস্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ইফাদ অটোজ, স্কয়ার ফার্মা, ইউনিক হোটেল ও ন্যাশনাল টিউবস।

দরবৃদ্ধির শীর্ষে বেশিরভাগই স্বল্পমূলধনী ও দুর্বল মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ার। এর মধ্যে রয়েছে- বঙ্গজ, এটলাস বাংলাদেশ, ফাইন ফুডস, এসিআই ও আইপিডিসি।

দর হারানোর শীর্ষে রয়েছে- ডিএসপি ফাইন্যান্স, এশিয়া ইন্সুরেন্স, ইন্সুরেন্স, সোনার বাংলা ইন্সুরেন্স ও ইসলামিক ইন্সুরেন্স।