‘তারল্য সংকটে’ দরপতন পুঁজিবাজারে

ব্যাংক ও টেলিযোগাযোগ খাতসহ বড় বাজার মূলধনী কোম্পানির শেয়ারগুলোর দাম কমার মধ্যে নতুন বছরে টানা চতুর্থ দিনের মতো দরপতন হয়েছে পুঁজিবাজারে।

রিয়াজুল বাশার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Jan 2018, 03:16 PM
Updated : 9 Jan 2018, 04:15 PM

এই দরপতনের পেছনে ঋণ-আমানত (এডি) অনুপাত কমিয়ে আনাসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাম্প্রতিক কিছু পদক্ষেপের কারণে পুঁজিবাজারে তারল্য সংকট দেখা দেওয়াকে বড় করে দেখছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।

মঙ্গলবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক ডিএসইএক্স ১২ পয়েন্ট বা দশমিক ১৯ শতাংশ কমে হয়েছে ৬ হাজার ১৯৮ পয়েন্ট। এ নিয়ে টানা চারদিন ডিএসইএক্স কমেছে ১২০ পয়েন্ট।

এডি রেশিও কমিয়ে আনার বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষণায় বাজারে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে বলে মনে করেন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোকে এডি রেশিও কমাতে বলেছেন, যার ফলে তারল্যের কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে।”

বুধবার সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকে গভর্নর ফজলে কবির ‘এডি রেশিও’ কমানোর নির্দেশনা দিয়েছেন বলে ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান।

প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর জন্য এই সীমা ৮৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮০ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর জন্য ৯০ থেকে ৮৮ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে বলে সুর চৌধুরী। এর পরের দিন থেকে বাজারে টানা পতন শুরু হয়েছে।

এডি রেশিও ছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার ছেড়ে বাজার থেকে অর্থ তুলে নেওয়ায় পুঁজিবাজারে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে বলে মনে করেন লালী।

“বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি করে টাকা তুলে নিয়েছে, যার ফলে তারল্য সংকট আরো ঘনীভূত হয়েছে।”

২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ১০৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার (১.০৬ বিলিয়ন) বাজারে ছেড়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গত মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৬০৬ কোটি টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এদিন লেনদেন নেমেছে ৪৪৮ কোটি টাকায়; যা আগের দিনের চেয়ে ২৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা কম। হাতবদল হওয়া ৩৩৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১৩টির, কমেছে ১৫৪টির ও অপরিবর্তিত রয়েছ ৬৮টির।

ডিএসইতে লেনদেনে শীর্ষে রয়েছে- ড্রাগন সোয়েটার, ইউনাইটেড পাওয়ার, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, ব্র্যাক ব্যাংক ও স্কয়ার ফার্মা।

দরবৃদ্ধির শীর্ষে রয়েছে- জুট স্পিনার্স, আজিজ পাইপস, শ্যামপুর সুগার, সাফকো স্পিনিং ও জনতা ইন্সুরেন্স।

দর হারানোর শীর্ষে রয়েছে- ইউনাইটেড পাওয়ার, কর্নফুলি ইন্সুরেন্স, ইউনাইটেড এয়ার, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং, ও অ্যারামিট লিমিটেড।

দিন শেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন আগের দিনের চেয়ে প্রায় ১৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা কমে ২০ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

লেনদেনে থাকা ২২৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৭৬টির, কমেছে ১২১টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৩২টির দর।

দিন শেষে সিএসই সার্বিক সূচক সিএএসপিআই প্রায় ৫২ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট কমে ১৯ হাজার ১৭৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।