বাধা পেরিয়ে নতুন গন্তব্যে ডিএসই সূচক

বাধা ভেঙে রেকর্ড সৃষ্টি করে নতুন গন্তব্যে যাত্রা শুরু করেছে ঢাকার পুঁজিবাজারের সূচক।

জ্যেষ্ঠ প্রদিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2017, 12:02 PM
Updated : 16 Nov 2017, 12:02 PM

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বৃহস্পতিবার ৪৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৪ শতাংশ বেড়ে ছয় হাজার ২৮২ পয়েন্টে পৌঁছেছে।

এদিন ৩০টি বাছাই করা শেয়ার নিয়ে ডিএসইর ডিএস৩০ সূচকও রেকর্ড অবস্থানে পৌঁছেছে। ডিএস৩০ দশমিক ৪১ শতাংশ নয় পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ২৭৯ পয়েন্টে।  

যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সেবাদাতা কোম্পানি এসঅ্যান্ডপি (স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওর) তৈরি করা ডিএসইর নতুন এই দুটি সূচক ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি শুরু হয়।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর ডিএসইএক্স ছয় হাজার ২৪১ পয়েন্টে পৌঁছে রেকর্ড করার করার পরই পেছাতে শুরু করে সূচক; ২৪ অক্টোবর পাঁচ হাজার ৯৬৮ পয়েন্টে নেমে আসে।

এরপর আবার উর্ধ্বমুখী হয়ে মঙ্গলবার ছয় হাজার ২৫২ পয়েন্টে পৌঁছে আবার রেকর্ড করে ডিএসইএক্স। বুধবার আবারও সূচক পতন হয়ে ছয় হাজার ২৩০ এর ঘরে নামে।

বৃহস্পতিবার লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইএক্স কিছুটা পড়ে গেলেও দ্বিতীয় ঘণ্টার লেনদেনে ভালভাবেই ঘুরে দাঁড়ায়। দিনশেষে রেকর্ড সৃষ্টি করে নতুন গন্তব্যের পথে রয়েছে ঢাকার বাজারের সূচক।

২০১০ সালে বাজার ধসের পর বাজার কর্তৃপক্ষ, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সরকারের পক্ষ থেকে নানামুখী সংস্কারমূলক কাজ করা হয়, যার মধ্যে অন্যতম ছিল আন্তর্জাতিক মানের একটি সূচক তৈরি।

চার হাজার ৫৫ পয়েন্ট নিয়ে চালু হওয়ার পর ওই বছরেরই মে মাসে ৩৬০০ পেয়েন্টের ঘরে নেমে যায় ডিএসইএক্স। কিন্তু এরপর আবার বাড়তে শুরু করে।

পাঁচ বছর বাজারে অস্থিরতার পর গত বছর থেকে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরতে শুরু করে। স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণও বেড়ে চলছে।

চলতি বছরের শুরু থেকেই লেনদেন ও সূচকে চাঙাভাব রয়েছে পুঁজিবাজারে। এবছর ডিএসইএক্স সূচক শুরু হয়েছিল পাঁচ হাজার ৩৬ পয়েন্ট থেকে। তার মানে গত ১১ মাসে সূচকের প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ।

ডিএসইতে বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছে ৭৩৭ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড, যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় সড়ে ১৬ শতাংশ কম। দর বেড়েছে ১৭২টি, কমেছে ৯০টি ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টি দাম।

দিনের শুরু থেকেই লেনদেনের শীর্ষস্থান দখল করে নেয় বড় মূলধনের কোম্পানিগুলো। লেনদেনের শীর্ষে থাকা ব্র্যাক ব্যাংক দশমিক ৪০ শতাংশ দর বাড়ার পাশাপাশি বড় অংকের শেয়ার হাতবদল হয়েছে। কোম্পানিটির ৫০ লাখ ৩২ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫৩ কোটি টাকা।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা স্কয়ার ফার্মার ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত রয়েছে। এক দশমিক ২০ শতাংশ দরবৃদ্ধির পাশাপাশি প্রায় ৩০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে বাজার মূলধনে দ্বিতীয় বৃহৎ কোম্পানিটির।

বাজার মূলধনের সবচেয়ে বড় কোম্পানি গ্রামীণফোন একদিন মূল্য সংশোধনের পর আবার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে। ২৯ কোটি টাকা লেনদেন হওয়া কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়েছে ২০ পয়সা।

সিটি ও এবি ব্যাংকও রয়েছে শীর্ষ লেনদেন হওয়া পাঁচ কোম্পানির তালিকায়।

দরবৃদ্ধির শীর্ষে রয়েছে- গোল্ডেন হারভেস্ট অ্যাগ্রো, ইস্টার্ন কেবলস, মিথুন নিটিং ও জেনারেশন নেক্সট।

দর হারানোর শীর্ষে রয়েছে- ডিএসএসএল, ডোরিন পাওয়ার, সোনারগাঁ, সাইনোবাংলা ও পিটিএল।

ডিএসইতে এদিনও লেনদেনের শীর্ষের রয়েছে ব্যাংক খাত। মোট লেনদেনের ৩৪ শতাংশ হয়েছে এ খাতে। ১১ শতাংশ লেনদেন হওয়া ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাত রয়েছে দ্বিতীয় এবং ১০ শতাংশ লেনদেন নিয়ে ওষুধ খাত রয়েছে তৃতীয় অবস্থানে।

এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সিএএসপিআই সূচক ১১৫ পয়েন্ট বেড়ে ১৯ হাজার ৪৪৫ পয়েন্টে পৌঁছেছে। লেনদেন হয়েছে ৬১ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড।

সিএসইতে দর বেড়েছে ১১৫টির, কমেছে ৬৭টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টির দাম।