সাভার রিফ্র্যাকটরিজ সর্বশেষ কবে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়েছিল তার তথ্য নেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)।
Published : 16 Nov 2017, 01:22 PM
কোম্পানিটি বছরের পর বছর ধরে লোকসান করছে তারপরও বেড়েই চলছে সাভার রিফ্র্যাকটরিজের শেয়ারে দর।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে এ ধরনের কোম্পানির শেয়ারের লেনদেনকে জরুরি ভিত্তিতে তদারকির আওতায় আনার পরামর্শ দিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
গত পাঁচ মাসে জেড ক্যাটগরির এই কোম্পানিটির শেয়ারের দর প্রায় তিনগুণ বেড়ে অতিমূল্যায়িত হয়ে পড়েছে। বুধবার পর্যন্ত পাঁচদিনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) শেয়ারটির দর ৪১ শতাংশের বেশি বেড়ে ১৩৯ টাকা দশ পয়সায় পৌঁছেছে।
স্বল্প মূলধনী কোম্পানি সাভার রিফ্র্যাকটরিজ প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী প্রকাশ করেছে বুধবার; ১০ টাকার প্রতিটি শেয়ারে লোকসান করেছে ২১ পয়সা।
তারপরও এদিন নয় দশমিক ৯৬ শতাংশ বেড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষে রয়েছে জেড ক্যাটাগরির কোম্পানিটি শেয়ার। এদিন লেনদেনের কিছুক্ষণের মধ্যে মাত্র ২৬ হাজার শেয়ার হাতবদল হয়েই বিক্রেতা উধাও হয়ে যায়।
সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ছয় টাকা ১১ পয়সা। সে হিসাবে প্রকৃত সম্পদমূল্যের ২২ গুণেরও বেশি দামে কেনাবেচা হচ্ছে।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ এ হাফিজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিত হবে এ ধরনের কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে তদারকি আনা।”
ডিএসইর ওয়েবসাইটে কোম্পানির লভ্যাংশ ও আয় সম্পর্কে ২০১২ সাল থেকে পরিসংখ্যান দেওয়া আছে। ওই সময় থেকে কোম্পানি কোনো লভ্যাংশ দেয়নি বলে দেখা গেছে।
২০১২ সালে ৩২ পয়সা এবং ২০১৩ সালে শেয়ার প্রতি ২০ পয়সা আয় করেছিল কোম্পানিটি। কিন্তু পরের চার বছর ধরে টানা লোকসানে রয়েছে কোম্পানি।
গত বছর কোম্পানিটির পক্ষ থেকে লোকসান কাটানোর প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সে প্রতিশ্রতি রাখতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
কোম্পানিটির চেয়ারম্যান লুৎফুল তাহমিনা খান ২০১৬ সালে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, বাজারে সস্তা পণ্যের সহজলভ্যতা, শ্রম মজুরি বৃদ্ধি ও গ্যাসের অপ্রতুলতার কারণে তাদের কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এর ফলে তাদের পুঞ্জিভূত লোকসান বেড়ে যায়।
লোকসান কাটানোর বাস্তবভিত্তিক কার্যক্রম হাতে নেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যয় সংকোচন উৎপাদন বাড়ানো ও বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে কোম্পানিকে লাভজনক অবস্থায় আনা যাবে।
কিন্তু চেয়ারম্যানের কথার কোনো প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।
২০১৭ সালের শেষে শেয়ারপ্রতি লোকসান ১৭ পয়সা এবং চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে তা আরো বেড়ে ২১ পয়সা হয়েছে।
কোম্পানিটির ২০১৬ সালের নীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কোম্পানিটি পণ্য বিক্রি করে লাভ করলেও খরচ তা থেকে বেশি হওয়ায় লোকসানে চলে যায়।
এ ধরনের শেয়ার কারা “কেন কিনছে, কারা কিনে দর বাড়াচ্ছে- তা তদন্ত করে দেখা উচিত” বলেও মন্তব্য করেন হাফিজ।