আরেকটি বাধা ভাঙার মুখে ডিএসই সূচক

ছয় হাজার আইড়াইশর ঘর অতিক্রম করে আবার পেছনমুখী হল ঢাকার পুঁজিবাজারের সূচক।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Nov 2017, 11:27 AM
Updated : 15 Nov 2017, 02:48 PM

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বুধবার ১৬ পয়েন্ট বা দশমিক ২৬ শতাংশ কমে লেনদেন শেষ হয়েছে ছয় হাজার ২৩৫ পয়েন্টে। হাতবদল হয়েছে ৮৮৩ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড, যা আগের দিনের চেয়ে ২৪ শতাংশ কম।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর ডিএসইএক্স ছয় হাজার ২৪১ পয়েন্টে পৌঁছে রেকর্ড করার করার পরই পেছাতে শুরু করে সূচক; ২৪ অক্টোবর পাঁচ হাজার ৯৬৮ পয়েন্টে নেমে আসে।

এরপর আবার উর্ধ্বমুখী হয়ে মঙ্গলবার ছয় হাজার ২৫২ পয়েন্টে পৌঁছে আবার রেকর্ড করে ডিএসইএক্স। বুধবার আবারও সূচক পতন হয়ে ছয় হাজার ২৩০ এর ঘরে নেমেছে।

বিচার্য বিষয় হলো, সেপ্টেম্বরে ছয় হাজার ২৪১ পয়েন্টে পৌঁছানোর সময় ডিএসইতে যে পরিমাণ লেনদেন হয়েছিল। মঙ্গলবার তার চেয়ে সূচ ১১ পয়েন্ট বেড়ে নতুন রেকর্ড করলেও সেই পরিমাণ লেনদেন দেখা যায়নি।

১৭ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে লেনদেন হয় ১২০০ কোটি টাকার বেশি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড। এর পর টানা দুই দিন ১৫০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়। ১৯ সেপ্টেম্বরের পর মঙ্গলবারই ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয় একহাজার ১৭৬ কোটি টাকার।

তার মানে সেপ্টেম্বরে সূচকের সীমা মঙ্গলবার অতিক্রম করলেও বাজারের লেনদেন ওই সময়ের চেয়ে কমেছে। 

বাজারের সাম্প্রতিক গতিপ্রকৃতি নিয়ে ডিএসইর পরিচালক ও সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। সূচক কমা-বাড়ার মধ্য দিয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারাতেই রয়েছে।

“বড় ভলিউমের লেনদেন মানেই বিক্রির চাপ আসে। সেপ্টেম্বরে ১৫০০ কোটি টাকা লেনদেন ছাড়ানোর পর সূচক কিছুটা নেমে আসে এবং আবার ঘুরে দাঁড়াতে প্রায় একমাস লেগে যায়।”

বর্তমানে লেনদেনকে বাজারের জন্য সন্তোষজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, লেনদেন হঠাৎ করে অনেক বেড়ে গেলে ভয় ছিল।

সেপ্টেম্বর মাসে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার। অক্টোবরে হয় ১৫ হাজার ৬৯৭ কোটি এবং চলতি মাসে লেনদেন হয়েছে আট হাজার ৮৭৭ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড।

বুধবার ডিএসইতে সূচক কমলেও অধিকাংশ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে। লেনদেনে থাকা ৩২৫টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৮টির, কমেছে ১৩৯টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮টির দর।

প্রথম প্রান্তিকের মুনাফায় ২৪ শতাংশের বেশি মুনাফার খবরে স্কয়ার ফার্মার শেয়ার এদিন লেনদেনের শীর্ষে চলে এসেছে। শেয়ারটির দরও বেড়েছে প্রায় তিন শতাংশ। এর ফলে ডিএসইএক্স প্রায় নয় পয়েন্ট বেড়ে গেছে।

স্কয়ারের পাশাপাশি লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক, এফএএএস ফাইন্যান্স, শাহজালাল ব্যাংক ও গ্রামীণফোন।

টানা কয়েকদিন বৃদ্ধির পর গ্রামীণফোনের শেয়ার প্রায় পৌনে তিন শতাংশ কমে ৪৮৬ টাকা দশ পয়সায় লেনদেন শেষ হয়েছে। গ্রামীণফোনের পতন সূচক প্রায় ৩২ পয়েন্ট কমিয়েছে।

সাভার রিফ্র্যাক্টরিজ দর বৃদ্ধির শীর্ষে রয়েছে। লোকসানে থাকলেও আগের প্রান্তিকের চেয়ে তা কমেছে এমন ঘোষণায় মাত্র ২৩ হাজার শেয়ার হাতবদলেই বুধবার কোম্পানিটির শেয়ারের বিক্রেতা উধাও হয়ে যায়।

দরবৃদ্ধির তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইস্টার্ন কেবলস, বিডি থাই, মার্কেন্টাইল ইন্সুরেন্স, আরএসআরএম স্টিল ও ফার্মা এইড।

এদিকে দাম কমার শীর্ষে রয়েছে রহিম টেক্সটাইল, আইএসএনএল, ইনটেক, ইউনাইটেড ইন্সুরেন্স ও মিথুন নিটিং।

বুধবার ব্লক মার্কেটে ১০৩ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ইস্টার্ন কেবলসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৪ লাখ ৩৮ হাজার ৫৪টি শেয়ার ব্লকে হাতবদল হয়েছে, যার মূল্য ৬৬ কোটি টাকার বেশি।

এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সিএএসপিআই সূচক ৫০ পয়েন্ট কমে হয়েছে ১৯ হাজার ৩৩০ পয়েন্ট। লেনদেন হওয়া ২৪১টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১১টি, কমেছে ১০০টি, অপরিবর্তিত রয়েছে ৩০টির দর।

লেনদেন হয়েছে ৫৪ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড; যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় ১৮ কোটি টাকা কম।