বসুন্ধরা পেপারের দরপ্রস্তাব তদন্তে বিএসইসি

বসুন্ধরা পেপার মিলসের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) নিলামে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের দরপ্রস্তাব নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

ফারহান ফেরদৌসবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Nov 2017, 02:41 PM
Updated : 6 Nov 2017, 02:42 PM

তাদের দরপ্রস্তাবের যৌক্তিকতার ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে (সিইএসই) চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে বিএসইসির কাছে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।”

বসুন্ধরা পেপার মিলসের নিলামে যে ‘কাট-অফ প্রাইস’ নির্ধারিত হয়েছে সেটাকে ‘অনেক বেশি ও অস্বাভাবিক’ মনে করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

সিএসইর একজন মুখপাত্র বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কাছ থেকে একটি চিটি পেয়েছি, যেখানে বসুন্ধরা পেপার মিলসের আইপিওর বিডিংয়ে যে মূল্য এসেছে তার যৌক্তিকতা যাচাই করতে বলা হয়েছে ।”

নিয়ন্ত্রণক সংস্থার অনুমোদনের পর গত ১৬ অক্টোবর থেকে বসুন্ধরা পেপার মিলসের আইপিওর নিলাম শুরু হয়। চার দিনের নিলামে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা অংশ নিয়ে কাট অব প্রাইস নির্ধারণ করে ৮০ টাকা দরে। নিলামে শেয়ারটির দাম ১২ টাকা থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত প্রস্তাব করা হয়।

নিলামে ৪৭৪ জন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী থেকে শেয়ার কেনার জন্য মোট ৯৫৭ কোটি ২০ লাখ টাকার প্রস্তাব জমা পড়েছিল।

বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ইলেক্ট্রনিক বিডিং সম্পাদনের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রির পাশাপাশি কাট-অফ প্রাইস নির্ধারণ করা হয়।

অর্থাৎ যে দামে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত কোটার শেয়ার বিক্রি শেষ হবে, সেই দামে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়।

২০১৫ সালে পাবলিক ইস্যু রুলস চালু হওয়ার পর পুঁজিবাজারে প্রিমিয়াম নিয়ে যেসব কোম্পানি বাজারে এসেছে, তাদের বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে কাট অব প্রাইস নির্ধারণের মাধ্যমে আসতে হয়েছে।

বাজারসংশ্লিষ্টরা কেউ কেউ মনের করেন, বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে আসা কোম্পানিগুলোর অনেকেই উচ্চ মূল্যে কাট অব প্রাইস নির্ধারণের জন্য কারসাজির আশ্রয় নিচ্ছে।

আইপিও ছেড়ে পুঁজিবাজার থেকে ২০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা পেপার মিলস।

পুঁজিবাজার থেকে সংগ্রহ করা অর্থের একটি বড় অংশ দিয়ে কারখানার আধুনিকায়ন ও মেশিনারি আমদানি করবে কোম্পানিটি, যাতে ব্যয় করা হবে ১২০ কোটি টাকা।

আইপিওতে উত্তোলিত অর্থ থেকে ৬০ কোটি টাকা ব্যয় হবে ঋণ পরিশোধে। কারখানার অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যয় হবে ৬ কোটি টাকা। ইনস্টলেশন কস্টে ব্যয় হবে ৩ কোটি টাকা। যন্ত্রাংশে খরচ হবে ৩ কোটি টাকা। ভূমি ও ভূমি উন্নয়নে খরচ হবে ৩ কোটি টাকা, আইপিওতে খরচ হবে ৫ কোটি টাকা।

কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের অভিহিত মূল্য হবে ১০ টাকা।

২০১৬ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, বসুন্ধরা পেপারের শেয়ার প্রতি নিট অ্যাসেট ভ্যালু (রিভ্যালুয়েশন রিজার্ভসহ) ৩০ টাকা ৪৯ পয়সা, রিভ্যালুয়েশন রিজার্ভ ছাড়া ১৫ টাকা ৭৯ পয়সা। শেয়ার প্রতি আয় ১ টাকা ৪৬ পয়সা।

কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছে এএএ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।