পুঁজিবাজারে বাড়ছে বিদেশি বিনিয়োগ

চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ১৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, অর্থাৎ প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার নিট বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে পুঁজিবাজারে।

আবদুর রহিম হারমাছিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2017, 05:37 AM
Updated : 16 Feb 2017, 06:15 AM

গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে এর পরিমাণ ছিল মাত্র ৭০ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫৬ কোটি টাকার মত।

এই হিসাবে ছয় মাসে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে নিট বিদেশি বিনিয়োগ (ফরেন পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট) বেড়েছে ২৬ গুণের বেশি।

মোট যে পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ আসে তা থেকে মুনাফা ফেরত নিয়ে যাওয়ার পর যে অর্থ অবশিষ্ট থাকে, তাকেই নিট বিদেশি বিনিয়োগ বলা হয়।

বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, টাকার বিপরীতে ডলারের শক্তিশালী অবস্থান, স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ এবং অর্থনীতির সূচকগুলো ভালো অবস্থায় থাকায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আবার বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে ঝুঁকছেন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতিদিনই বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা নতুন কিছু মুখ দেখতে পাচ্ছি। এতে আস্থা ফিরে পেয়ে স্থানীয় বিনিয়োগকারীরাও বাজারমুখী হচ্ছেন। তার প্রভাবেই লেনদেনে সাম্প্রতিক চাঙ্গাভাব দেখা যাচ্ছে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মোট ১২ কোটি ৪০ লাখ ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ পেয়েছিল বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। তার আগের অর্থবছরে এসেছিল ৩৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার।

গতবছর বিদেশি বিনিয়োগ আগের বছরের তুলনায় কমে গেলেও এবার বাড়ার কারণ জানতে চাইলে শাকিল বলেন, “ব্যাংক খাতের শেয়ারসহ মৌলভিত্তিক শেয়ারের দর অনেক কমে গিয়েছিল। এছাড়া টাকার বিপরীতে ডলার আরও শক্তিশালী হয়েছে। এ কারণে বাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে।”

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ গত কয়েক বছর ধরে ভালো জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। আগামীতেও এই ধারা বজায় থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশে এখন রাজনৈতিক অস্থিরতা নেই। সব মিলিয়ে বাণিজ‌্যের ক্ষেত্রে এক ধরনের স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

২০১০ সালের পর টানা ছয় বছর মন্দা চলে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে। এরপর গতবছরের শেষ দিক থেকে ফিরতে থাকে চাঙ্গাভাব। মাঝখানে কয়েকদিন লেনদেন ও সূচক কমলেও ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে সূচক, সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বুধবার আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ৭৯ টাকা ২৫ পয়সা। তবে ব্যাংকগুলো ডলার বিক্রি করেছে সাড়ে ৩ টাকা থেকে ৪ টাকা বেশি দামে।

রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক বুধবার ৮২ টাকা ৯৫ পয়সায় ডলার বিক্রি করেছে। আর বিদেশি এইচএসবিসি প্রতি ডলারের জন‌্য নিয়েছে ৮৩ টাকা ৫০ পয়সা।