ব্রাজিলকে রুখে দিল মেক্সিকোর ওচোয়া

ষষ্ঠ শিরোপার স্বপ্ন নিয়ে চলা ব্রাজিল বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচেই এসে হোঁচট খেল। ম্যাচের ফল গোলশূন্য ড্র রেখে পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের রুখে দিয়েছে মেক্সিকো। নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে নেইমারদের একাই ঠেকিয়ে দিয়েছেন গোলরক্ষক গিয়েরমো ওচোয়া। ম্যাচ জুড়ে দুর্দান্ত চারটি সেভ করেছেন ম্যাচের সেরা এই খেলোয়াড়।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 June 2014, 09:49 PM
Updated : 17 June 2014, 10:23 PM

১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপের পর দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করতে কখনো দুই ম্যাচের বেশি খেলতে হয়নি ব্রাজিলকে।

মঙ্গলবার ফরতালেজার স্তাদিও কাস্তেলাওয়ে ম্যাচের শুরুটা ছিল এলোমেলো। নিজেদের রক্ষণ সামলে আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করছিল দল দুটি। ভুল পাসের ছড়াছড়িতে সেই অর্থে কোনো সুযোগ তৈরি হচ্ছিল না।

অবশেষে ২৬তম মিনিটে প্রথম পরিস্কার সুযোগটি তৈরি হয়েছিল ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় তারকা নেইমারের সৌজন্যে। দানি আলভেসের ক্রসে ডিফেন্ডারের বেশি লাফিয়ে হেড দিয়েছিলেন নেইমার। বল চলে যাচ্ছিল জালে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে অসাধারণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন ওচোয়া।
৪৪তম মিনিটে আবার ব্রাজিলকে হতাশায় পোড়ান ওচোয়া। সুযোগের উৎস ছিল নেইমারের চমৎকার এক ফ্রি কিক। ডি বক্সে চিয়াগো সিলভাকে খুঁজে পেয়েছিলেন বার্সেলোনা তারকা। ব্রাজিল অধিনায়ক বুক দিয়ে বল নামান। গোলের ঠিক সামনে থেকে শট নেন পউলিনিয়ো, কিন্তু ওচোয়াকে পরাস্ত করা সম্ভব হয়নি।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যেতে পারতো ব্রাজিল। রামিরেসের বদলি বের্নার্ডের দারুণ ক্রসে ডি বক্সে নেইমার মাথা ছোঁয়ানোর আগেই কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন ওচোয়া।

এর পরের মিনিট বিশেক মেক্সিকো দারুণ চাপ তৈরি করে স্বাগতিকদের রক্ষণভাগে। কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে দামি দুই ডিফেন্ডার চিয়াগো ও দাভিদ লুইসের নেতৃত্বাধীন রক্ষণ তারা ভাঙতে পারেনি। ডি বক্সে বাইরে থেকে আচমকা শটেই সীমাবদ্ধ ছিল মেক্সিকোর ফরোয়ার্ডদের প্রচেষ্টাগুলো।

ম্যাচের ৬৮তম মিনিটে আবার মেক্সিকোর ত্রাতা ওচোয়া। বের্নার্ডের ক্রস ডি বক্সের মধ্যে বুক দিয়ে নামিয়ে বাঁ পায়ে শট নেন নেইমার। কিন্তু দারুণ দক্ষতায় শটটি ঠেকিয়ে দেন অবিচল ওচোয়া।

বদলি হিসেবে নামা জো এরপর সহজ গোলের সুযোগ হারান। গোলরক্ষককে একা পেয়েও বাইরে মেরে দেন তিনি।

ম্যাচের ৮৬তম মিনিটে নেইমারের ফ্রিকিক থেকে আবারো সুযোগ পেয়েছিল ফেলিপে লুইস স্কলারির শিষ্যরা। লাইনের খুব কাছ থেকে পিএসজি তারকা চিয়াগোর তীব্র গতির হেড দারুণ ভাবে ঠেকিয়ে দেন মেক্সিকো গোলরক্ষক।

মেক্সিকো কয়েকটি আক্রমণ গড়লেও ব্রাজিলের দুর্ভেদ্য রক্ষণদূর্গ ভাঙতে পারেনি ওরিবে পেরালতা, হাভিয়ের এর্নানদেসরা। তারা দূরপাল্লার শটগুলো রাখতে পারেননি লক্ষ্যে। তবে ইনজুরি সময়ে রাউল হিমিনেসের জোরালো শট ঠেকিয়ে দলকে বাঁচান জুলিও সেজার।          

বিশ্বকাপে এই প্রথম কনকাকাফ অঞ্চলের কোনো দলের কাছে পয়েন্ট হারাল ব্রাজিল। এর আগ পর্যন্ত ওই দেশগুলোর সঙ্গে ছয়টি ম্যাচ খেলে সবকটি জিতেছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

একই সঙ্গে মেক্সিকোয় থামল ব্রাজিলের জয়রথ। গত সেপ্টেম্বর থেকে টানা দশ ম্যাচ জেতা ব্রাজিল আসলে পারল না ওচোয়ার সঙ্গে। নেইমারদের বিরুদ্ধে চীনের প্রাচীর হয়েই দাঁড়িয়েছিলেন মেক্সিকোর ওচোয়া।
গ্রুপ 'এ' তে দুই ম্যাচ শেষে দুই দলেরই পয়েন্ট ৪। মেক্সিকো কোচ মিগেল এররেরা এই ফলে খুশি হতে পারেন। তবে তার প্রতিপক্ষ ফেলিপে লুই স্কলারিকে যে সমালোচনার মুখে পড়তে হবে, তাতে কোনো সন্দেহই নেই।

এই ম্যাচের ধারাবিবরণী পড়তে ক্লিক করুন