ঢাকা, জুলাই ১৮ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- কোটি কোটি মানুষকে হতাশায় ডুবিয়ে আর্জেন্টিনার পর ব্রাজিলও বিদায় নিলো কোপা আমেরিকার ৪৩তম আসর থেকে। শেষ আটের লড়াইয়ে মানো মেনেজেসের দল টাইব্রেকারে ০-২ গোলে হেরেছে প্যারাগুয়ের কাছে।
ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার বিদায়ে এবারের কোপা আমেরিকার আবেদন অনেকটাই কমে গেলো বলে মনে করছেন ক্রীড়া বিশ্লেষকরা।
শনিবার টাইব্রেকারে স্বাগতিক আর্জেন্টিনার বিদায়ের পর রোববার একই পরিণতি হয় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের।
নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে ব্রাজিল কিংবা প্যারাগুয়ে কোনো দলই গোল করতে পারেনি। এরপর টাইব্রেকারের পাহাড়সম চাপে সামলাতে পারেনি বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। চার খেলোয়াড়ের একজনও খুঁজে পাননি প্যারাগুয়ের জাল। আর তিন শটের দুটোই ব্রাজিলের জালে জড়িয়ে ২-০ ব্যবধানে টাইব্রেকার জিতে সেমিফাইনালে উঠে যায় প্যারাগুয়ে।
কোয়ার্টার ফাইনালে রোববারের অন্য খেলায় ভেনিজুয়েলা ২-১ গোলে চিলিকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে।
ফলে সেমিফাইনালে ভেনেজুয়েলাকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাচ্ছে প্যারাগুয়ে। ২০ জুলাই মুখোমুখি হবে দল দুটি।।
এর আগের দিন অন্য সেমিফাইনালে খেলবে উরুগুয়ে ও পেরু।
ম্যাচে হারলেও নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করেছেন ব্রাজিলের খেলোয়াড়রা। ল্যাটিন ছন্দে প্রতিপক্ষ প্যারাগুয়েকে নিয়ে করেছেন ছেলেখেলা। কিন্তু সুন্দর ফুটবল সবসময় গোল এনে দিতে পারে না। কমপক্ষে পাঁচটি গোল থেকে বঞ্চিত হয় দলটি । কখনো ক্রসবার, কখনো বল জালে রাখার ব্যর্থতায় আবার কখনো প্যারাগুয়ে গোলরক্ষক জাস্তো ভিলার দৃঢ়তায় গোলবঞ্চিত থেকেছে ব্রাজিল।
প্রথমার্ধের বেশিরভাগ সময় ব্রাজিলের পায়েই বল ছিলো, তারপরও প্যারাগুয়ের দুর্ভেদ্য রক্ষণ দেয়াল ভাঙতে ব্যর্থ হয় তারা।
এর মধ্যে সবচেয়ে সহজ সুযোগটি পেয়েছিলেন ব্রাজিল দলনেতা লুসিও। আন্দ্রে সান্তোসের ফ্রি-কিক গিয়ে পড়ে তার পায়ে। দারুন নৈপুণ্যে বলে পা ছোঁয়ান লুসিও। দুর্ভাগ্য ব্রাজিলের, বল গোলরক্ষক ভিলার পায়ে লেগে ফিরে আসে।
বিরতির পর গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে ব্রাজিল। একবার সুযোগ সন্ধানী নেইমার বল দখলের লড়াইয়ে ভিলারকে পরাস্তও করেন। কিন্তু রক্ষণভাগের খেলোয়াড় অ্যান্তোলিন আলকারাজ বল ফিরিয়ে দিয়ে সে যাত্রা রক্ষা করেন প্যারাগুয়েকে।
নেইমার, রবিনহো ও গানসোর আরো কিছু প্রচেষ্টা ভিলার ঠেকিয়ে দেন। তবে ম্যাচের সবচয়ে আকর্ষণীয় মুহূর্তের সৃষ্টি করেন পাতো ও ভিলার। নেইমারের ফ্রি-কিক সবাইকে ফাঁকি দিয়ে পাতোর পায়ে পড়লে হালকা টোঁকায় বল নিয়ন্ত্রনে নেন তিনি। এরপর গোলপোস্টের ৪-৫ হাত সামনে থেকে শট নেন তিনি। উল্টো দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও যেভাবে পা দিয়ে বল ফিরিয়ে দেন ভিলা তা ফ্রেমে বাঁধাই করে রাখার মতো।
ব্রাজিলের গোলে প্যারাগুয়ে প্রথম শটটি নেয় খেলার ৮৮ মিনিটের সময়। এ থেকে বোঝা যায় ম্যাচে ব্রাজিল কতটা প্রাধান্য বিস্তার করে খেলেছে।
শেষ পর্যন্ত খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত সময়ের খেলাও একই ভাবে চলতে থাকে। বাড়তে থাকে ব্রাজিলের হতাশা। এক পর্যায়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন ব্রাজিলের লুকাস ও প্যারাগুয়ের আলকারাজ। পরে লাল কার্ড দেখিয়ে দুজনকেই মাঠ থেকে বের করে দেন রেফারি।
সারাক্ষণই চাপে থাকা প্যারাগুয়ে অতিরিক্ত সময়ের খেলা শেষ হওয়ার মাত্র এক মিনিট আগে গোলের ভালো একটা সুযোগ পেয়েছিলো। কিন্তু নেলসন ভালদেজের বল গোলপোস্টের ওপর দিয়ে চলে যায়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসএনএল/এমআই/টিএ/০৮৩০ ঘ.