মারাদানোর মৃত্যুর পেছনের ঘটনা নিয়ে তদন্ত শেষে বুধবার এই রায় দেওয়া হয়। আর্জেন্টিনার আদালতে বিচার হবে অভিযুক্তদের।
২৩৬ পৃষ্ঠার সেই রায়টি দেখেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। মামলার দায়িত্বে থাকা বিচারক রায়ে বলেছেন, অভিযুক্ত প্রত্যেকের আচরণ প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে প্রশ্নবিদ্ধ এবং তাদের কার্যকলাপ ঘটনাকে ক্ষতিকারক পথে এগিয়ে নিয়েছে ও ভূমিকা রেখেছে।
রায়ে মারাদোনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক লিওপোলদো লুক, তার সাইকিয়াট্রিস্ট অগাস্তিনা কোসাচভ সহ আট জনকে ‘হত্যাকাণ্ডের’ অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর মারা যান ফুটবল ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়দের একজন মারাদোনা।
মাদকাসক্তি, অ্যালকোহলের প্রতি আসক্তি ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা জটিলতায় দীর্ঘদিন ভোগা ১৯৮৬ বিশ্বকাপের এই মহানায়ক মৃত্যুর আগে বেশ কয়েকদিন ছিলেন হাসপাতালে। তখন তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়েছিল।
চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন আর্জেন্টাইনদের ‘ফুটবল ঈশ্বর।’ তবে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে ওঠার পথে হঠাৎ করেই আসে তার মৃত্যুর খবর।
মারাদোনা মারা যাওয়ার পরদিন তার আইনজীবী মাতিয়াস মোরিয়া মৃত্যুর পূর্ণ তদন্তের দাবি জানান। এরপর গত মার্চে তদন্ত শুরু হয়। ২০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্যানেলের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, মৃত্যুর আগে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তিকে দেওয়া চিকিৎসা ‘ত্রুটিপূর্ণ ও যত্নহীন’ ছিল।
চিকিৎসক ও মারাদোনার সহকারীদের মধ্যে কথাবার্তার একটি অডিও গণমাধ্যমে ফাঁস হয়েছিল। তাতেও মৃত্যুর আগে মারাদোনার উপযুক্ত চিকিৎসা না হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছিল।
মারাদোনার এক ছেলের আইনজীবী রয়টার্সকে বলেছেন যে, মৃত্যুর সময় ‘অসহায় অবস্থায়’ ছিলেন মারাদোনা।
“(মৃত্যুর) কারণ দেখার সঙ্গে সঙ্গেই আমি বলেছিলাম যে, এটি হত্যাকাণ্ড। দীর্ঘদিন ধরে লড়াই আমি করেছি এবং এই পর্যায়টি শেষ করে আমরা এখন এখানে।”
মারাদোনার ময়নাতদন্তে জানা যায়, ঘুমের মধ্যে হার্টফেল করে মারা গেছেন তিনি। টক্সিকোলজির রিপোর্টে অ্যালকোহল বা অবৈধ কোনো কিছুর অস্তিত্ব মেলেনি। তবে মানসিক অবসাদ দূরীকরণের ওষুধের প্রমাণ মিলেছিল।
অভিযুক্তরা তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বিচারক বলেছেন, অভিযুক্ত কয়েকজনের আইনজীবী মামলাটি খারিজ করার অনুরোধ করেছিলেন।