২০২১-২২ মৌসুমের শুরুতে দোন্নারুম্মাকে দলে টানে পিএসজি। দলবদলের বাজারে সেবার বেশ তোলপাড় ফেলে দেয় ক্লাবটি। ইতালিয়ান গোলরক্ষকের সঙ্গে আশরাফ হাকিমি, সের্হিও রামোস, জর্জিনিয়ো ভেইনালডাম ও লিওনেল মেসিকে নিজেদের তাঁবুতে টানে প্যারিসের দলটি।
কিলিয়ান এমবাপে ও নেইমারের সঙ্গে মেসির সংযোজন পিএসজির আক্রমণভাবের ধার বাড়ায়। লিগে সফলও হয় দলটি। ঘরে তোলে রেকর্ড দশম শিরোপা। সবশেষ ১০ মৌসুমে যা তাদের অষ্টম লিগ জয়। পিএসজি কোচ হিসেবে মাওরিসিও পচেত্তিনোর ক্যারিয়ারে সেটিই প্রথম ট্রফি।
লিগের এই সাফল্যের আলো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ব্যর্থতার আঁধার আড়াল করতে পারেনি। সাবেক টটেনহ্যাম হটস্পার কোচের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। চারদিকে যেমন গুঞ্জন, তাতে নতুন মৌসুমে পিএসজির ডাগআউটে পচেত্তিনোকে না দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
এই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের জন্যই কাড়িকাড়ি অর্থ ঢেলে যাচ্ছে পিএসজি। কিন্তু কিছুতেই পূরণ হচ্ছে না স্বপ্ন। সবশেষ আসরের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নেয় তারা। দুই লেগে গোল করেন এমবাপে। কিন্তু ১৮০ মিনিটের লড়াইয়ের শেষ ৩০ মিনিটে করিম বেনজেমার অবিশ্বাস্য হ্যাটট্রিকে পরের রাউন্ডে পা রাখে রিয়াল মাদ্রিদ এবং পরে শিরোপাও জেতে দলটি।
পিএসজিতে নিজের প্রথম মৌসুমের মূল্যায়নে দোন্নারুম্মা আনন্দের অনেক উপলক্ষই পাচ্ছেন। তবে ক্লাবের চাহিদাটাও উপলব্ধি করতে কষ্ট হচ্ছে না তার। পিএসজি টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব নিয়েই খোলামেলা কথা বলেছেন এই গোলরক্ষক।
“(লিগ ওয়ানে) দশম শিরোপা জয় বিশেষ ব্যাপার। সত্যিই এটা জিততে পারাটা দারুণ। খেলোয়াড় হিসেবে আমরা সবাই এটা জিততে চেয়েছিলাম। ক্লাবের অন্য সবার ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই ছিল।”
“শিরোপা জয়ই ছিল আমাদের লক্ষ্য, তাই সত্যিই মৌসুমটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে যাই। কিন্তু (লিগ ওয়ানে) শিরোপা জিতে আমরা নিজেদের কিছুটা সান্ত্বনা দিতে পেরেছিলাম এবং এটা আমাদের সত্যিই খুশি করেছিল।”
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নেওয়াটা কঠিন ছিল পিএসজির জন্য। সেই সময়ে নিজের মানসিক অবস্থার কথাও তুলে ধরেন ২৩ বছর বয়সী গোলরক্ষক।
“বছরটা দারুণ এবং আবেগপূর্ণ ছিল; একটু কঠিনও ছিল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে আমাদের ছিটকে যাওয়ার পরের বিষয়গুলো একটু অদ্ভুত ছিল। ওই হতাশা হজম করা আমাদের জন্য কঠিন ছিল, কিন্তু মেনে নিতে হয়েছিল।”
“হতাশাময় ওই অধ্যায়কে পেছনে ফেলে আমাদের দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে হয়েছিল, যেহেতু লিগ শিরোপা জয় বাকি ছিল। শেষ পর্যন্ত আমরা যা জিততে পেরেছি। তাই আমি বলব, সব মিলিয়ে মৌসুমটা ইতিবাচক ছিল।”
নতুন মৌসুমে অবশ্য শুধু লিগ শিরোপায় তুষ্ট থাকতে চান না দোন্নারুম্মা। জিততে চান যত বেশি সম্ভব শিরোপা।
“চ্যাম্পিয়ন্স লিগকে একপাশে রাখলে, মৌসুমটা ভালো ছিল। কিন্তু এতেই আমরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারি না। আগামী বছর যতগুলো সম্ভব শিরোপা জয়ের চেষ্টা চালিয়ে যাব।”
ফ্রেঞ্চ লিগের দলগুলোর মধ্যে একমাত্র মার্সেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জিতেছিল। সেটাও সেই ১৯৯৩ সালে। লিগ ওয়ানের দলগুলোর মধ্যে এছাড়া পিএসজি এবং মোনাকোই শুধু ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে ফাইনাল খেলতে পেরেছে।