বড় হারে বাছাই শেষ বাংলাদেশের

আগের তিন ম্যাচের মতো লড়াকু ফুটবল খেলতে পারল না বাংলাদেশ। শক্তিশালী মালয়েশিয়ার গতিময় ফুটবলের সামনে বরং বেশিরভাগ সময় কোণঠাসা হয়ে থাকল তারা। মোহাম্মদ ইব্রাহিমের নৈপুণ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর উপলক্ষ পেলেও শেষ পর্যন্ত হেরে বসল বড় ব্যবধানে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 June 2022, 02:04 PM
Updated : 14 June 2022, 04:22 PM

এশিয়ান কাপের বাছাই থেকে খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে হাভিয়ের কাবরেরার দলকে। কুয়ালা লামপুরের বুকিত জলিল জাতীয় স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার বাছাইয়ে নিজেদের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে মালয়েশিয়ার কাছে ৪-১ গোলে হারে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সবগুলো হেরে বাছাই শেষ করল তারা।

হারলেও বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে জামাল-বিপলুদের গোছালো ও সাহসী ফুটবল প্রশংসা কুড়িয়েছিল বেশ। তাই সাত দিনের মধ্যে তৃতীয় ম্যাচ খেলার ক্লান্তির কথা বললেও কোচ কাবরেরা অপরিবর্তিত রাখেন সেরা একাদশ।

নিজেদের মাঠে, চেনা দর্শকের সামনে মালয়েশিয়া শুরু থেকে খেলে আগ্রাসী ফুটবল। ষষ্ঠ মিনিটে শফিক আহমেদের নিচু কোনাকুনি শট দূরের পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়।

সপ্তদশ মিনিটে সফল স্পট কিকে মালয়েশিয়াকে এগিয়ে নেন সাফাউই রশিদ। এই ফরোয়ার্ডের বাঁ পায়ের বুলেট গতির শট বলের লাইনে ঝাঁপিয়ে পড়লেও আটকাতে পারেননি আনিসুর রহমান জিকো। স্বাগতিকদের ফয়সাল হালিমকে ডিফেন্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদ ফাউল করলে পেনাল্টি দেন রেফারি।

১৯তম মিনিটে প্রতিপক্ষের থ্রো ইন বিশ্বনাথ ঘোষ হেডে ক্লিয়ার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল তার মাথার পেছনে লেগে চলে যায় রশিদের কাছে; তার হেড লাফিয়ে আটকান জিকো।

২৬তম মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার দারুণ রক্ষণ চেরা পাসে সাজ্জাদ হোসেন বক্সে ঢুকে শট নিতে পারেননি। এক ডিফেন্ডারের স্লাইডে বল পাওয়ার পর রাকিব হোসেনও উড়িয়ে মেরে নষ্ট করেন সুযোগ।

চার মিনিট পর সমতায় ফেরার উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে কোণঠাসা বাংলাদেশ। বিশ্বনাথের লং থ্রোয়ে রাকিবের ফ্লিকের পর ইব্রাহিম হেডেই জাল খুঁজে নেন। তুর্কমেনিস্তান ম্যাচেও একইভাবে গোল পেয়েছিলেন এই ফরোয়ার্ড।

বিরতির আগে মালয়েশিয়া গোলের জন্য মরিয়া হয়ে আক্রমণ শানাতে থাকে। ৩৭তম মিনিটে আরিফ আমিনের কাট ব্যাকে রশিদের শট ব্লক করেন ফাহাদ। এর একটু পর আবারও পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। কাছের পোস্টে ডিওন কুলের বাঁ পায়ের জোরাল শট বলের লাইনে থাকলেও আটকাতে পারেননি জিকো। তার হাতে ছুঁয়ে জালে জড়ায়।

প্রথমার্ধের শেষ দিকে শফিকের হেড গোললাইন থেকে কোনোমতে জিকো ফেরালে ব্যবধান বাড়েনি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আবারও গোল হজম করে বসে দল। ফয়সাল হালিমের থ্রু থেকে বক্সের ভিতরে ফাঁকায় থাকা শফিক হেডে গোলকিপার জিকোকে পরাস্ত করেন।

৫৭তম মিনিটে ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে বিপলুর কাট ব্যাকে গোলমুখে থাকা ফয়সাল আহমেদ ফাহিম গোলরক্ষকের গায়ে মেরে নষ্ট করেন সুবর্ণ সুযোগ।

এরপর কেবল সময় গড়িয়েছে, বাংলাদেশের খেলায় আগের দুই ম্যাচের ছন্দ আর ফেরেনি। বরং ৭৩তম মিনিটে সতীর্থের আড়াআড়ি ক্রসে বদলি ফরোয়ার্ড ড্যারেন লক গোলমুখ থেকে নিখুঁত টোকায় লক্ষ্যভেদ করলে বাছাইয়ে কাবরেরার দলের বড় হার নিশ্চিত করে দেয়।

৭৯তম মিনিটে আখিয়ার রশিদের প্রচেষ্টা ফিরে আসে ক্রসবারে প্রতিহত হয়ে। তাতে অবশ্য স্বাগতিকদের আনন্দে ভাটা পড়েনি। দারুণ এই জয়ে এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলা যে নিশ্চিত হয়ে গেছে মালয়েশিয়ার।

বাহরাইনের কাছে ২-০ গোলে হেরে বাছাই শুরুর পর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ।