‘এই ম্যাচ হারব, কখনও ভাবতে পারিনি’

লড়াকু ফুটবল খেলার ফল মিলেছিল ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষের প্রীতি ম্যাচে। বাংদুংয়ের সেই ড্র ম্যাচের মতো বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষেও রক্ষণ জমাট রেখে পাল্টা আক্রমণে ওঠার কৌশলে খেলে বাংলাদেশ, তবে এই দুই ম্যাচে হার এড়াতে পারেনি তারা। বিশেষ করে তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে বলের নিয়ন্ত্রণ ও আক্রমণে দারুণ খেলেও কাঙ্ক্ষিত পয়েন্ট মেলেনি। জাতীয় ফুটবল দলের গোলকিপিং কোচ বিপ্লব ভট্টাচার্য কিছুতেই মানতে পারছেন না তুর্কমেনিস্তান ম্যাচের হার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 June 2022, 12:22 PM
Updated : 12 June 2022, 12:22 PM

মালয়েশিয়ার কুয়ালা লামপুরে শনিবার এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে তুর্কমেনিস্তানের কাছে ২-১ গোলে হারে বাংলাদেশ। পিছিয়ে পড়া দলকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে সমতায় ফেরান মোহাম্মদ ইব্রাহিম। এরপর দারুণ সব সুযোগ হারিয়ে আর আচমকা গোল খেয়ে হারে হাভিয়ের কাবরেরার দল।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) মাধ্যমে পাঠানো ভিডিও বার্তায় বিপ্লব জানালেন হতাশার কথা। তবে সাবেক এই তারকা গোলরক্ষকের কথায় থাকল সম্ভাবনাময় আগামীর ইঙ্গিতও।

“আসলে সারারাতই ঘুমাতে পারিনি।  (ম্যাচের সময়) মনে হয়েছে, এই মনে হয় আমরা জিতে গেছি, মনে হয়েছে…এই ম্যাচ হারব, কখনও ভাবতে পারিনি। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, আমাদের দেশের মানুষ একটা জয় চায়, মালয়েশিয়াতে প্রবাসী আছে, যারা মাঠে এসেছিলেন...আমরা আসলে ভাবতেই পারছি না, এই ম্যাচ হেরে গেছি।”

“তবে সবচেয়ে ভালো লেগেছে, আমাদের দেশের মানুষ, ফুটবলকে নিয়ে তাদের যে একটা আশা, তাতে কিছুটা হলেও উপহার দিতে পেরেছি। আমাদের মানুষ কিন্তু ভালো ফুটবল চায়। হার-জিত থাকবেই, সেটা খেলার অংশ। ইন্দোনেশিয়া থেকে কালকের ম্যাচ পর্যন্ত দেখুন, তিনটি ম্যাচেই আমরা দেখিয়েছি আমরাও ভালো খেলতে পারি। আত্মবিশ্বাস যদি থাকে, কোচের নির্দেশনা যদি প্রয়োগ করতে পারি, তাহলে আমরা অবশ্যই ভালো খেলতে পারি। আমাদের প্লেয়ারদের সেই সামর্থ্য আছে।”

বাছাইয়ের তিন প্রতিপক্ষই ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে বেশ এগিয়ে। তাদের বিপক্ষে সাহসী ফুটবল খেলায় উত্তরসূরিদের নিয়ে আশাবাদী বিপ্লব। নিজেদের সোনালী সময়ের পর তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষের পারফরম্যান্স ‘সেরা’ আখ্যা দিলেন তিনি। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সমমানের দলের বিপক্ষে ভালো ফল পাওয়ার আশাও দেখছেন বিপ্লব।

“অবশ্যই এটা বেস্ট পারফরম্যান্স। আপনারা যদি দেখেন, দেখবেন আমরা বেশ কিছু ম্যাচে ভালো খেলেছি। ইন্দোনেশিয়া, বাহরাইন ও সবশেষ তুর্কমেনিস্তান-এই তিনটা ম্যাচ আমরা ভালো খেলেছি। এই তিনটা ম্যাচ থেকে আমাদের অনেক প্রাপ্তি আছে। সামনে যে ম্যাচ আসবে, যে পর্যায়ের দলের সঙ্গে এখানে খেলছি, ভবিষ্যতে সাফের অঞ্চলে যে দলগুলো আছে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল বা ভুটান এসব টিমের বিপক্ষে আমরা আরও ভালো ফুটবল খেলতে পারব।”

“এখন আমরা যেভাবে এগুচ্ছি, খেলোয়াড়রা যেভাবে নিজেদের শতভাগ দিচ্ছে, তারা অপেক্ষা করছে ভালো কিছু দেওয়ার…বাংলাদেশের মানুষ ফুটবলটা এত ভালোবাসে। দেশের মানুষকে কিছু দেওয়া, জয় উপহার দেওয়া। আমরা চেষ্টা করছি, কিন্তু দূর্ভাগ্য। গতকালের ম্যাচে যেমন আমরা জয় বঞ্চিত হয়েছি।”

বর্তমান দলে কেবল জামাল ভূইয়ার বয়সই তিরিশের উপরে। অধিকাংশই তরুণ। বিপ্লব তাই এই দল নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন আরও বেশি। তবে তুর্কমেনিস্তান ম্যাচের হতাশা ঘুরেফিরে এলো তার কথায়।

“এ মুহূর্তে আমাদের যে স্কোয়াড আছে, সেখানে দুই-একজন সিনিয়র বাদে অন্যরা অনেক দিন খেলবে। বাংলাদেশের মানুষকে আমরা ভালো কিছু উপহার দিতে চাই। জয়টা হয়ত আল্টিমেট প্রসেস। একদিন আসবে। আমরা সে পথেই আছি।”

“আমরা সবকিছু করেছি, সুযোগ তৈরি করেছিলাম, এগুলো থেকে গোল না পেলে ব্যাডলাক বলা ছাড়া কিছু করার নেই। হয়ত আমরা শুরুতে গোল খেয়েছি, এটা হতেই পারে, ভুল খেলারই অংশ, কিন্তু দ্রুত কামব্যাক করেছি। আমার মনে হয়, খেলোয়াড়রা সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করেছে। দুর্ভাগ্য বলতে যদি কিছু থাকে, সেটাই হয়েছে গতকাল। যদি ব্যাডলাক না থাকত, তাহলে অবশ্যই আমরা জিততাম।”