মালয়েশিয়ার কুয়ালা লামপুরের বুকিত জলিল জাতীয় স্টেডিয়ামে শনিবার এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের কাছে ২-১ গোলে হেরেছে জামাল-জিকোরা।
এ নিয়ে বাছাইয়ে টানা দুই ম্যাচ হারল বাংলাদেশ। বাহরাইনের কাছে ২-০ গোলে হেরে বাছাই শুরু করেছিল হাভিয়ের কাবরেরার দল। স্বাগতিক মালয়েশিয়ার কাছে ৩-১ গোলে হেরে বাছাই শুরু করা তুর্কমেনিস্তান পেল প্রথম জয়ের স্বাদ।
দ্বিতীয় মিনিটে কর্নারের পর ডি-বক্সে বল পেয়ে অরক্ষিত বাবাজানোভ জাফরের নেওয়া শট ক্রসবারের উপর দিয়ে যায়। প্রথম সাত মিনিটের মধ্যে চারটি কর্নার পাওয়া তুর্কমেনিস্তান এগিয়ে যায় চতুর্থটি কাজে লাগিয়ে। কর্নারে আন্নাদুরদিয়েভ আলতিমিরাতের কোনাকুনি শট আটকানোর পথ জানা ছিল না গোলরক্ষক জিকোর।
২০তম মিনিটে বল নিয়ে সাজ্জাদ হোসেন বক্সে ঢুকে পড়লেও শেষ পর্যন্ত গায়ের সঙ্গে সেঁটে থাকা ডিফেন্ডারের সঙ্গে পেরে ওঠেননি। ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যান এই ফরোয়ার্ড। তিন মিনিট পর রাকিবের দুর্বল শট আটকান গোলরক্ষক। সাজ্জাদ বক্সে সুযোগ পেয়েছিলেন শট নেওয়ার, কিন্তু নেননি তিনি।
২৫তম মিনিটে সতীর্থের পাসে অনেকটা লাফিয়ে আন্নাগুলিয়েভ গুচমিরাতের শট ক্রসবারের উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। এরপরই সাজ্জাদের পাসে ইব্রাহিমের শট সরাসরি গোলরক্ষক বরাবর যায়।
৩৬তম মিনিটে বিশ্বনাথের লম্বা থ্রো ইনে সাজ্জাদের ব্যাক হেডের পর ইয়াসিন আরাফাত গোলমুখ থেকে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি। গোললাইন থেকে বিপদমুক্ত করেন ডিফেন্ডার।
বিরতির আগের পাঁচ মিনিট ভালো সুযোগ পায় দুই দলই। হালমামেদভ রোভসেনগেল্দির কাছের পোস্টে নেওয়া শট আটকান জিকো। একটু পরই ডান দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা রাকিব দারুণ ক্রস বাড়ান সাজ্জাদের উদ্দেশে। দুর্দান্ত স্লাইডে বিপদমুক্ত করেন গুশমিরাত।
দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। ৪৭তম মিনিটে রাকিবের ক্রসে সাজ্জাদ আগুয়ান গোলরক্ষককে একা পেয়েও লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি। নষ্ট হয় দারুণ একটি সুযোগ।
৫২তম মিনিটে সতীর্থের কাটব্যাক থেকে ফাঁকায় আমানভ আরসলানের প্লেসিং শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। দুই মিনিট পর ইব্রাহিমের ক্রসে সাজ্জাদ ঠিকমতো মাথা ছোঁয়াতে পারেননি। পরের মিনিটে ইব্রাহিম চোট পেয়ে বাইরে চলে যান, ফয়সাল আহমেদ ফাহিম নামেন।
৭১তম মিনিটে একক প্রচেষ্টায় আক্রমণে ওঠা বিপলু আহমেদ পাস বাড়িয়েছিলেন বক্সে বাঁ দিক থাকা ফাহিমের উদ্দেশে। বদলি এই ফরোয়ার্ড গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে হতাশ করেন।
শেষ দিকে ভারি বর্ষণ শুরু হয়। তার মাঝেই ৮৮তম মিনিট জামালের ফ্রি কিকে দুরের পোস্টে ফাঁকায় ছিলেন বাংলাদেশের তিন জন। তাদের মধ্যে টুটুল হোসেন বাদশার শট বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। সুবর্ণ সুযোগ নষ্টের হতাশায় মাথা কুটতে দেখা যায় এই ডিফেন্ডারকে। ম্যাচজুড়ে সাহসী ফুটবল খেলা বাংলাদেশকে শেষ পর্যন্ত মাঠ ছাড়তে হয় হারের বিষাদ নিয়ে।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ৫৪ ধাপ এগিয়ে থাকা তুর্কমেনিস্তান লাল-সবুজ জার্সিধারীদের উপর পরিসংখ্যানের পাতায় আধিপত্য ধরে রাখল। ২০০২ সালে এশিয়ান গেমসে মুখোমুখি লড়াইয়ে ৩-১ গোলে জিতেছিল তারা। তবে এবার জামালদের বিপক্ষে তাদের জয়টি সহজ হয়নি মোটেও।
টানা দুই ম্যাচে হারলেও লড়াকু ফুটবল খেলার আত্মবিশ্বাস নিয়ে আগামী মঙ্গলবার স্বাগতিক মালয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।