লিসবনে রোববার রাতে ‘এ’ লিগের ২ নম্বর গ্রুপের ম্যাচটিতে ৪-০ ব্যবধানে জিতেছে স্বাগতিকরা। তাদের অন্য দুই গোলদাতা উইলিয়াম কারবাইয়ো ও জোয়াও কানসেলো।
তিন বছর আগে ঠিক এই দিনেই রোনালদোর হ্যাটট্রিকে কপাল পুড়েছিল সুইসদের। সেদিন নেশন্স লিগের প্রথম আসরের ফাইনালসের শেষ চারে ৩-১ গোলে জিতেছিল পর্তুগাল।
রোনালদোর হ্যাটট্রিক হতে পারতো এদিনও। তবে অনেকগুলো সহজ সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। অধিনায়ক ছাড়া অন্যরাও কাজে লাগাতে পারেননি বেশ কিছু নিশ্চিত সুযোগ, নইলে ব্যবধান হতো আরও বড়।
গত সপ্তাহে আসরে প্রথম ম্যাচে স্পেনের বিপক্ষে ১-১ ড্র করেছিল পর্তুগাল। আর চেক রিপাবলিকের বিপক্ষে হেরেছিল সুইজারল্যান্ড। দুই দলই এদিন দলে ছয়টি করে পরিবর্তন আনে।
এগিয়ে যাওয়া তো তাদের হলোই না, উল্টো পঞ্চদশ মিনিটে পিছিয়ে পড়ে তারা। রোনালদোর নিচু ফ্রি কিক রক্ষণ দেয়ালের নিচ দিয়ে গিয়ে সুইজারল্যান্ডের আরেকজনের পায়ে লেগে দিক পাল্টে জালে জড়াতে যাচ্ছিল, দারুণ নৈপুণ্যে ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক গ্রেগর কোবেল। তবে বিপদমুক্ত করতে পারেননি, ফিরতি বল সহজেই লক্ষ্যে পাঠান কারবাইয়ো।
গোল পেয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে পর্তুগাল। করতে থাকে একের পর এক আক্রমণ। দারুণ দুটি আক্রমণ নিজেদের ভুলে বৃথা যাওয়ার পর ৩৫তম মিনিটে আসে দ্বিতীয় গোল।
প্রতিপক্ষের একটি আক্রমণ সামলে ওঠা পাল্টা আক্রমণে ব্রুনো ফের্নান্দেস পাস বাড়ান ডি-বক্সে দিয়েগো জটাকে। সঙ্গে লেগে থাকা ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে তিনি এক পলকে দেখে নেন পেছনে ছুটে এসেছেন রোনালদো। মুহূর্ত দেরি না করে সেদিকে বল বাড়ান লিভারপুল ফরোয়ার্ড আর প্রথম ছোঁয়ায় জোরাল শটে লক্ষ্যভেদ করেন অধিনায়ক।
৩৮তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়তে পারতো। তবে পেপের জোরাল হেড পোস্টে বাধা পায়। অপেক্ষা অবশ্য দীর্ঘ হয়নি।
পরের মিনিটেই আবারও রোনালদোর গোল। এবারও আক্রমণের শুরুতে ছিলেন ফের্নান্দেস। প্রতিপক্ষকে ফাঁকি দিয়ে তার বাড়ানো বল নিয়ে বাইলাইন ধরে এগিয়ে নুনো মেন্দেস বাড়ান ছয় গজ বক্সের মুখে। সেখানে জটার প্রথম প্রচেষ্টা কোনোমতে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক, কিন্তু বল হাতে রাখতে পারেননি। ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় থাকা রোনালদো অনায়াসে বল ঠেলে দেন জালে।
পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলারের জাতীয় দলের হয়ে গোল হলো ১১৭টি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আবারও জালে বল পাঠান রোনালদো। তবে এবার গোলের নয়, বাজে অফসাইডের বাঁশি।
৬৮তম মিনিটে আবারও গোল। বের্নার্দো সিলভার থ্রু বল ধরতে দারুণ ক্ষিপ্রতায এগিয়ে যান কানসেলো। বাধা দিতে বক্সের বাইরে বেরিয়ে এসেও পারেননি গোলরক্ষক, বুদ্ধিদীপ্ত টোকায় তাকে ফাঁকি দিয়ে কোনাকুনি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন ম্যানচেস্টার সিটি ডিফেন্ডার।
৮২তম মিনিটে কেভিন এমবাবু ফাউলের শিকার হলে প্রথমে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে ফাউলের ঘটনাটি ডি-বক্সের ঠিক বাইরে হওয়ায় ভিএআরে সিদ্ধান্ত পাল্টে দেওয়া হয় ফ্রি কিক। রোনালদোর দারুণ শট রক্ষণ দেয়াল এড়িয়ে লক্ষ্যেই ছিল, ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক।
হ্যাটট্রিকের এতগুলো সুযোগ নষ্ট হওয়ার আক্ষেপ রোনালদোর কিছুটা থাকলেও দলের দারুণ জয়ে তা মুছে যাওয়ার কথা।
পর্তুগাল পরের ম্যাচে খেলবে চেক রিপাবলিকের বিপক্ষে, আগামী বৃহস্পতিবার। সেদিনই সুইজারল্যান্ড ঘরের মাঠে মুখোমুখি হবে স্পেনের।
এদিন গ্রুপের আরেক ম্যাচে চেক রিপাবলিকের মাঠে ২-২ ড্র করেছে লুইস এনরিকের দল স্পেন।
গ্রুপ পর্বে দুই রাউন্ড শেষে পর্তুগাল ও চেক রিপাবলিকের পয়েন্ট সমান ৪ করে। গোল ব্যবধানে এগিয়ে শীর্ষে রোনালদোরা।
২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে স্পেন। সুইসদের পয়েন্ট শূন্য।