কলকাতায় মারোংয়ের গোলে শুভসূচনা কিংসের

সুযোগ তৈরি হলো অনেক। তুলনায় অত বেশি গোল মিলল না। তবে স্বস্তির জয় পেল বসুন্ধরা কিংস। নুহা মারোংয়ের গোলে মাজিয়া স্পোর্টিস অ্যান্ড রিক্রিয়েশনকে হারিয়ে এএফসি কাপে শুভসূচনা করল অস্কার ব্রুসনের দল।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2022, 04:55 PM
Updated : 18 May 2022, 05:18 PM

ভারতের কলকাতার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে বুধবার ১-০ গোলে জিতেছে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন কিংস। ব্যবধান গড়ে দেওয়া একমাত্র গোলটি প্রথমার্ধের ৩৩তম মিনিটে করেন গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড মারোং।

গতবার মাজিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে এএফসি কাপের গ্রুপ পর্ব শুরু করেছিল কিংস। ওই ম্যাচে আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেছিলেন রবসন দি সিলভা রবিনিয়ো।

এ ম্যাচেও আক্রমণের সুর বেঁধে দেন এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা মেলা কিংস ভালো সুযোগ তৈরি করতে থাকে।

সপ্তম মিনিটে পায়ের কারিকুরিতে একাধিক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে তালগোল পাকিয়ে শট নিতে পারেননি রবিনিয়ো। চার মিনিট পর এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে তার নেওয়া কোনাকুনি শট দূরের পোস্ট লেগে ফিরে। ছোট বক্সের ঠিক ওপর থেকে মোহাম্মদ ইব্রাহিমও বাইরে উড়িয়ে মেরে হতাশা বাড়ান।

কিংস বিপদে পড়তে বসেছিল ১৯তম মিনিটে। গতি দিয়ে খালিদ শাফিইকে পরাস্ত করে ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট, ছুটে গিয়ে স্লাইড করে ঠেকান গোলরক্ষক জিকো। পাঁচ মিনিটে পর মোহামেদ হামজার শটও ফিস্ট করে ফেরান তিনি।

মাঝে একটু খেই হারানো কিংস ফের ছড়ি ঘোরাতে শুরু করে ২০ মিনিটের পর থেকে। ২৫তম মিনিটে প্রতিপক্ষের ভুল পাসে বল পেয়ে যান মারোং। তিনি শট নেওয়ার আগে গোলরক্ষক কিরন লিম্বু ছুটে এসে বিপদমুক্ত করেন। কিরনের চার্জে আছড়ে পড়েন মারোং।

২৯তম মিনিটে মিগেল ফিগেইরা দামাশেনোর ফ্রি কিকে শাফিইয়ের ফ্লিক অল্পের জন্য বাইরে যায়। চার মিনিট পর কাঙ্খিত গোলের উচ্ছ্বাসে ভাসে কিংস।

মাঝমাঠ থেকে উড়ে আসা বল ডিফেন্ডার সামোহ আলি ও পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসা গোলরক্ষক কিরনের ফাঁকে পড়ে, কিন্তু কেউই বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ড্রপ খেয়ে বল উপরে উঠে যাওয়ার পর হেডে ফাঁকা জালে জড়ান মারোং।

৩৮তম মিনিটে স্টুয়ার্টের কাছের পোস্টে নেওয়া শট জিকো আটকালে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় কিংস। দ্বিতীয়ার্ধে সমতায় ফিরতে মরিয়া মাজিয়া চাপ দিতে থাকে। তবে পেদ্রো তানা, কর্নেলিয়াস কখনও লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে, কখনও জিকোর দৃঢ়তায় পাননি গোল।

৭০তম মিনিটে দুটি পরিবর্তন আনেন ব্রুসন। মারোং ও ইব্রাহিমকে তুলে মতিন মিয়া ও সুমন রেজাকে নামান স্প্যানিশ কোচ। ছয় মিনিট পরই ব্যবধান দ্বিগুণের দারুণ সুযোগ আসে। মাজিয়ার এক ডিফেন্ডারকে পেয়ে গিয়েছিলেন সুমন ও দামাশেনো। সুমন তার চেয়ে ভালো অবস্থানে থাকা দামাশেনোকে ছোট পাস দেন, ব্রাজিলিয়ান এই মিডফিল্ডারের বাঁ পায়ের কোনাকুনি শট ঝাঁপিয়ে আটকান কিরণ।

এরপর চোট পেয়ে মাঠ ছাড়া ডিফেন্ডার কাজী তারিক রায়হানের বদলি নামেন রিমন হাসান। ৮৪তম মিনিটে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে হামজার নেওয়া শট আটকে কিংসকে জয়ের পথে রাখেন জিকো।

দুই মিনিট পর একে একে তিন জনকে কাটিয়ে দামাশেনোর বাঁ পায়ের নিচু শট ফেরান কিরন। এরপরই দামাশেনোর বদলি নামেন এলিটা কিংসলে। গতবার দলের সঙ্গী হলেও এএফসির ছাড়পত্র না মেলায় খেলতে পারেননি নাইজেরিয়ান থেকে বাংলাদেশি হয়ে যাওয়া এই ফরোয়ার্ড।

নির্ধারিত সময় শেষের আগ মুহূর্তে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন সোহেল রানা, তার বদলি নামেন বিপলু আহমেদ। যোগ করা সময়ের শুরুতে আক্রমণে ওঠা কিংসলে তাড়াহুড়ো করে শট নেন, এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বাইরে যায়। কর্নারের পর কিংসলের জোরাল শট সরাসরি যায় কিরনের গ্লাভসে।

ন্যুনতম ব্যবধান ধরে রেখে স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া কিংসের সামনে অপেক্ষা করছে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ। আগামী শনিবার ব্রুসনের দলের প্রতিপক্ষ গোকুলাম কেরালা; বুধবার যারা মোহনবাগানকে ৪-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে।