৫২৫ কোটি ডলারে চেলসির নতুন মালিক বোয়েলি-কনসোর্টিয়াম

চেলসির মালিকানা নিয়ে কয়েক মাসের অনিশ্চয়তার অবসান হলো। ইংলিশ ক্লাবটির নতুন মালিক যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসায়ী টড বোয়েলি ও তার নেতৃত্বধানী ব্যবসায়িক গ্রুপ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 May 2022, 08:09 AM
Updated : 7 May 2022, 08:09 AM

ক্লাবের ওয়েবসাইটে শনিবার নিশ্চিত করা হয়, বোয়েলির নেতৃত্বে কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তির শর্তাবলী নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছে ক্লাব কতৃপক্ষ। অপেক্ষা এখন বাকি প্রক্রিয়া শেষে আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ ও যুক্তরাজ্য সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন আছে তাদের।

যুক্তরাষ্ট্রের বেসবল দল লস অ্যাঞ্জেলস ডজারসের একাংশের মালিক বোয়েলি। প্রখ্যাত হোল্ডিং প্রতিষ্ঠান অলড্রিজ ইন্ডাস্ট্রিজের সহ-প্রতিষ্ঠাতা, চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী তিনি। ক্রীড়ায় তিনি বিশ্বের সুপরিচিত বিনিয়োগকারী। এনবিএর দল লস অ্যাঞ্জেলস লেকার্স ও ডব্লিউএনবিএর দল লস অ্যাঞ্জেলস স্পার্কসেও আছে তার মালিকানা।

বোয়েলির নেতৃত্বধীন এই কনসোর্টিয়ামে আছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ক্লিয়ারলেক ক্যাপিটাল, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী মার্ক ওয়াল্টার ও সুইস বিলিয়নিয়ার হ্যান্সইয়োর্গ উইস। চেলসি কেনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রায় ৫২৫ কোটি মার্কিন ডলার (৪২৫ কোটি পাউন্ড) খরচ হবে এই কনসোর্টিয়ামের। 

চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, চেলসির শেয়ার কিনতে ৩১০ কোটি ডলার দেবে এই কনসোর্টিয়াম, বাকি ২১৫ কোটি ডলার তারা বিনিয়োগ করবে স্টেডিয়ামে, মেয়েদের দলে, ক্লাবের একাডেমিতে ও চেলসি ফাউন্ডেশনে।

এই চুক্তির মাধ্যমেই কার্যত শেষ হয়ে গেল চেলসিতে রোমান আব্রামোভিচের সাম্রাজ্যের। রুশ এই ব্যবসায়ী ২০০৩ সালে চেলসি কেনার পর ক্লাবকে প্রতিষ্ঠিত করেন বিশ্ব ফুটবলের সেরা শক্তিগুলোর একটি হিসেবে। ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগে চেলসির ৬ শিরোপার ৫টিই এসেছে এই সময়ে। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ইউরোপা লিগের দুটি করে ট্রফিও ক্লাবে এসেছে এই সময়েই। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়নও তারা। এছাড়াও এই সময়ে চেলসি জিতেছে ৫টি এফএ কাপ, ৩টি লিগ কাপ, ২টি কমিউনিটি শিল্ড, উয়েফা সুপার কাপ ও ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপাও।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন আব্রামোভিচ। তুমুল বিতর্কের মধ্যে ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ক্লাবের ‘অভিভাবকত্ব’ ছেড়ে দেন তিনি চেলসিরই চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশনের হাতে। তাতেও বিতর্ক না কমায় মার্চের শুরুতেই এই তেল-গ্যাস ব্যবসায়ী ঘোষণা দেন চেলসি বিক্রি করে দেওয়ার।

পরে আব্রামোভিচসহ সাত রুশ প্রভাবশালীকে নিষিদ্ধ করে যুক্তরাজ্য সরকার। তার সম্পত্তি জব্দ করা হয়। ক্লাবের ব্যবস্থাপনায় নেমে আসে বেশ স্থবিরতা। ক্লাব বিক্রির কার্যক্রমও বাধাগ্রস্থ হয়। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার তিনি ক্লাব বিক্রির পথে বাধা দূর করে ফেলেন। এরপরই দ্রুতই এলো নতুন মালিকানা পাওয়ার ঘোষণা।

চেলসি কেনার লড়াইয়ে ছিলেন এনবিএর দল বোস্টন সেল্টিকসের মালিকদের একজন ও যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসায়ী স্টিভেন পালিউকা ও ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের চেয়ারম্যান মার্টিন ব্রটন। পরে তারা বিডিং প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়েন। শেষ সময়ে ব্রিটিশ ধনকূবের জিমি র‌্যাটক্লিফ দরা কষাকষি শুরু করলেও বাদ পড়ে যান লড়াই থেকে।  

ক্লাবের বর্তমান পরিচলন লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হবে ৩১ মে। এর মধ্যেই নতুন মালিকানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে আশা করছে চেলসি।