কষ্টের জয়ে দুইয়ে বার্সেলোনা

গোছানো ও ছন্দময় ফুটবলে শুরুতেই মিলল গোল। বাকি সময়ে নিজেদের খুঁজে ফিরল বার্সেলোনা। একের পর এক আক্রমণে কয়েকটি দারুণ সুযোগ তৈরি করল রিয়াল সোসিয়েদাদ, কিন্তু একটিও কাজে লাগাতে পারল না। কোনোমতে জিতে লিগ টেবিলের দুই নম্বরে ফিরল শাভি এরনান্দেসের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 April 2022, 09:35 PM
Updated : 21 April 2022, 10:28 PM

প্রতিপক্ষের মাঠে বৃহস্পতিবার রাতে লা লিগার ম্যাচটি ১-০ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। একাদশ মিনিটে পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াংয়ের গোলটি ছাড়া আর একটি শটও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি কাতালান দলটি।

প্রথমার্ধে গোলের জন্য ১০টি শট নেওয়া বার্সেলোনা বিরতির পর নিতে পারে স্রেফ একটি। ৫৬ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে পুরো ম্যাচে সোসিয়েদাদের ৮ শটের ৫টি ছিল লক্ষ্যে।

সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা দুই হারের পর জয়ের স্বাদ পেল বার্সেলোনা। কাম্প নউয়ে চার দিনের মধ্যে আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের বিপক্ষে হেরে ইউরোপা লিগের কোয়ার্টার-ফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়ার পর লা লিগায় কাদিসের কাছে ১-০ গোলে হেরেছিল তারা।

মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনের ভুলে চতুর্থ মিনিটে বিপদে পড়তে বসেছিল বার্সেলোনা। সতীর্থের ব্যাকপাস পেয়ে ক্লিয়ার করতে অনেকটা সময় নেন জার্মান গোলরক্ষক। শেষ মুহূর্তে তার নেওয়া শট প্রতিপক্ষের আলেক্সান্দার ইসাকের পায়ে লেগে পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।

একটু পর এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। প্রথমে বাঁ দিক থেকে জর্দি আলবার ক্রসে ছয় গজ বক্সের কোণা থেকে উসমান দেম্বেলের শট পোস্টে লেগে ফেরে। বল ধরে ডি-বক্সের বাইরে থেকে ক্রস বাড়ান গাভি। ফেররান তরেস বুক দিয়ে নামিয়ে ক্রস দেন দূরের পোস্টে। হেডে বাকিটা সারেন অবামেয়াং।

জানুয়ারির দলবদলে ফ্রি ট্রান্সফারে আর্সেনাল থেকে বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার পর লা লিগায় ১১ ম্যাচে অবামেয়াংয়ের গোল হলো ৯টি। এর মধ্যে প্রতিপক্ষের মাঠে ৬ ম্যাচে তার গোল ৭টি। স্পেনের শীর্ষ লিগে কাতালান দলটির হয়ে নিজের প্রথম ৬ অ্যাওয়ে ম্যাচে এত গোল করতে পেরেছিলেন আর কেবল রোমারিও, ১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে ৭টি।

আর সোসিয়েদাদ লিগে ঘরের মাঠে সাত ম্যাচ পর গোল হজম করল।  

২৮তম মিনিটে অল্পের জন্য দ্বিগুণ হয়নি ব্যবধান। ২৫ গজ দূর থেকে ডাচ মিডফিল্ডার ফ্রেংকি ডি ইয়ংয়ের জোরাল শট পাশের জালে লাগে।

বিরতির আগে সমতা টানার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন ইসাক। অ্যালেক্সান্ডার সরলথের পাস ডি-বক্সে ফাঁকায় পেয়ে ওয়ান-অন-ওয়ানে বাইরে মারেন এই সুইডিশ ফরোয়ার্ড।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আরেকটি সুযোগ হারায় সাগতিকরা। আদনান ইয়ানুজাইয়ের বাড়ানো বল দূরের পোস্টে পেয়ে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি অরক্ষিত সরলথ। ৫৮তম মিনিটে আবার সুযোগ আসে নরওয়ের এই ফরোয়ার্ডের সামনে। এবার দুরূহ কোণ থেকে তার শট পা দিয়ে রুখে দেন টের স্টেগেন।

৬৯তম মিনিটে আরেকটি দারুণ সেভ করে ব্যবধান ধরে রাখেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক। ইয়ানুজাইয়ের ক্রসে বল জালে জড়াতে যাচ্ছিল, ঝাঁপিয়ে ঠেকান টের স্টেগেন।

দুই মিনিট পর ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হারায় বার্সেলোনাও। তরেসের পাস পেয়ে ১০ গজ দূর থেকে বাইরে মারেন ১৭ বছর বয়সী গাভি।

নির্ধারিত সময়ের পর ১০ মিনিট যোগ করা সময়েও অনেক চেষ্টার পরও সমতা টানতে পারেনি সোসিয়েদাদ।

৩২ ম্যাচে ১৮ জয় ও ৯ ড্রয়ে বার্সেলোনার পয়েন্ট হলো ৬৩। সেরা চারে থেকে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফেরার লড়াইয়ে টিকে রইল তারা ভালোভাবে। সেই সঙ্গে শিরোপা লড়াইয়ে নিজেদের ক্ষীণ সম্ভাবনাও বাঁচিয়ে রাখল দলটি।

বার্সেলোনার সমান পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে সেভিয়া। তাদের সমান ৩৩ ম্যাচে ৬১ পয়েন্ট নিয়ে চারে গতবারের চ্যাম্পিয়ন আতলেতিকো মাদ্রিদ।

৩৩ ম্যাচে ৭৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রিয়াল মাদ্রিদ, শিরোপা পুনরুদ্ধার করতে বাকি পাঁচ ম্যাচে কার্লো আনচেলত্তির দলের প্রয়োজন কেবল ৪ পয়েন্ট।  

৩৩ ম্যাচে ৫৫ পয়েন্ট নিয়ে ছয় নম্বরে আছে রিয়াল সোসিয়েদাদ।