কিংস-শেখ জামাল ম্যাচে ২২ মিনিটে ৬ গোলের ঝড়

ম্যাড়মেড়ে প্রথমার্ধ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকটাও উত্তাপহীন। দুই পরাশক্তি বসুন্ধরা কিংস ও শেখ জামালের ম্যাচটি এগোচ্ছিল এভাবেই। ৭১তম মিনিট থেকে ম্যাচের রং বদলানোর শুরু। দারুণ জয়ের আশা জাগালো ধানমণ্ডির দলটি। কোণঠাসা কিংস তেড়েফুঁড়ে বেরিয়ে এলো বদলি ফরোয়ার্ড এলিটা কিংসের হাত ধরে। শেষ পর্যন্ত ছয় গোলের রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচটি হলো ড্র।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 April 2022, 11:39 AM
Updated : 7 April 2022, 01:01 PM

বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় বৃহস্পতিবার দুই দলের ম্যাচটি ৩-৩ ড্র হয়েছে। শেখ জামালের তিন গোলদাতা ভালিজনভ ওতাবেক, সুলাইমান সিল্লাহ ও সলোমন কিং। জোড়া গোল করেন কিংসের কিংসলে; এক গোল স্তইয়ান ভ্রানিয়াসের।

এই ড্রয়ে শিরোপা লড়াই কিছুটা জমে উঠল। ১১ ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে কিংস। ২১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব।

দিনের অন্য ম্যাচে, উত্তর বারিধারাকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দেওয়া আবাহনী ২২ পয়েন্ট নিয়ে উঠে এসেছে দ্বিতীয় স্থানে।

শুরুর দিকে আক্রমণের চেয়ে বলের নিয়ন্ত্রণে মনোযোগী ছিল দুই দল। ২৭তম মিনিটে প্রথম ভালো আক্রমণ শাণায় শেখ জামাল। বক্সের ডান দিক থেকে সিল্লাহর জোরাল শট দূরের পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।

নিরুত্তাপ প্রথমার্ধে কিংস কোনো শটই লক্ষ্যে রাখতে পারেনি। এ অর্ধের যোগ করা সময়ে বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা রিমন হোসেনের আড়াআড়ি ক্রস দূরের পোস্ট দিয়ে বেরিয়ে যায়, ছুটে গেলেও পা ছোঁয়াতে পারেননি মোহাম্মদ ইব্রাহিম।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও গোলের জন্য মরিয়া ভাব ছিল না কারো মধ্যে। ৬২তম মিনিটে ইব্রাহিমের ক্রসে ভ্রানিয়েসের হেড লক্ষ্যে থাকেনি। পাঁচ মিনিট পর বাঁ দিকের লাইন ধরে বক্সে ঢুকে পড়েন সিল্লাহ, কিন্তু গাম্বিয়ার এই ফরোয়ার্ডের কাট ব্যাকে পা ছোঁয়ানোর কেউ ছিল না।

৭১তম মিনিটে ওতাবেকের একক প্রচেষ্টার দারুণ গোলে এগিয়ে যায় শেখ জামাল। তিন ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে বক্সে ঢুকে পড়েন উজবেকিস্তানের এই ফরোয়ার্ড। জিকো পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে পথ আগলে দাঁড়ানোর আগেই বাঁ পায়ের সাইড ভলিতে জাল খুঁজে নেন তিনি। ম্যাচের ডেডলক খোলার পর গোলের স্রোত বইতে থাকে।

৭৪তম মিনিটে রবসন দি সিলভা রবিনিয়ো ও শাকিল আহমেদের মধ্যে বল দখলের লড়াই উত্তাপ ছড়ায়। একটু ধাক্কাধাক্কিও হয়। রেফারি দুজনকে কার্ড দেখান। ফ্রি কিক পায় কিংস। ভ্রানিয়াসের বাঁ পায়ের দারুণ ফ্রি কিক বাঁক খেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া মিতুল মারমাকে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়ায়।

স্কোরলাইন ২-১ হওয়ার পেছনে কিছুটা দায় আছে জিকোর। বক্সের বাইরে থেকে ফয়সাল আহমেদের নিচু শটে খুব যে গতি ছিল, তা নয়, কিন্তু বরাবর আসা বল গ্লাভসে জমাতে পারেননি কিংস গোলরক্ষক। আগলা বল ছুটে গিয়ে জালে জড়িয়ে দেন সিল্লাহ।

দুই মিনিট পরই বুলেট গতির শটে ব্যবধান আরও বাড়ান সলোমন কিং। আরেকটি হার তখন চোখ রাঙাচ্ছে কিংসকে।

৬৯তম মিনিটে সুমন রেজার বদলি নামা কিংসলে জ্বলে উঠলেন শেষ দিকে। নির্ধারিত সময়ের দুই মিনিট বাকি থাকতে মাহবুবুর রহমান সুফিলের ক্রসে হেড করে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন নাইজেরিয়ান থেকে বাংলাদেশি হয়ে যাওয়া এই ফরোয়ার্ড।

এরপর যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ইব্রাহিমের ক্রসে হেডেই লক্ষ্যভেদ করেন কিংসলে। হারের শঙ্কার মেঘ সরিয়ে স্বস্তির ড্রয়ের উৎসবে মেতে ওঠে অস্কার ব্রুসন ও তার দল।